বলিউডের ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি মারা গেছেন
Published: 28th, June 2025 GMT
মাত্র ৪২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ‘কাঁটা লাগা’ গান দিয়ে আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী শেফালি জারিওয়ালা। শুক্রবার (২৭ জুন) মধ্যরাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে ভারতের একাধিক গণমাধ্যম। অসুস্থতা অনুভব করার পর তড়িঘড়ি তাঁকে মুম্বাইয়ের বেলভিউ মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকেরা জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে তাঁর মরদেহ কুপার হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে।টাইমস অব ইন্ডিয়া ও মুভি টকিজ-এর খবরে বলা হয়েছে, শেফালির স্বামী পরাগ ত্যাগী ও তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের কর্মীদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সাংবাদিক ভিকি লালওয়ানি সামাজিক মাধ্যমে জানান, হাসপাতালে আনার পরই চিকিৎসকেরা শেফালিকে মৃত ঘোষণা করেন। হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ লুলাও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
১৯৮২ সালের ১৫ ডিসেম্বর মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন শেফালি। তিনি গুজরাতের সরদার বল্লভভাই পটেল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ইনফরমেশন টেকনোলজিতে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ইন্ডি পপ গান ‘কাঁটা লাগা’র রিমেক ভিডিওর মাধ্যমে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পান শেফালি জারিওয়ালা। সত্তরের দশকের হিন্দি সিনেমা ‘সমৃদ্ধি’র গানের রিমেকটি সে সময় তুমুল জনপ্রিয় হয়। গানের সাহসী উপস্থাপনায় শেফালি হয়ে ওঠেন আলোচনা ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু। এরপর ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ নামে পরিচিতি পান তিনি। বলিউডে ক্যামিও চরিত্রে দেখা যায় তাঁকে সালমান খান ও আকশে কুমার অভিনীত ‘মুঝসে শাদি করোগে’ ছবিতে। সব মিলিয়ে ৩৫টির বেশি মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছেন শেফালি।
তবে এরপর আচমকাই গ্ল্যামার দুনিয়া থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি মৃগী রোগে ভুগছিলেন, যার কারণে খুব বেছে বেছে কাজ করতে হতো। পরে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছিলেন তিনি।
ব্যক্তিগত জীবনেও বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়েছেন শেফালি। ২০০২ সালে তাঁর প্রথম বিয়ে হলেও, সেই সম্পর্ক টেকেনি। ২০০৯ সালে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন এবং বিচ্ছেদ ঘটে। পরে অভিনেতা পরাগ ত্যাগীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে ২০১৪ সালে বিয়ে করেন। দুজন মিলে অংশ নেন জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘নাচ বালিয়ে ৫’-এ।
শুধু অভিনয় নয়, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নারী-অধিকার নিয়ে সোচ্চার ছিলেন শেফালি জারিওয়ালা। সামাজিক মাধ্যমে খোলামেলা ও আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতির জন্য তিনি ছিলেন আলোচনায়। তাঁর অকালমৃত্যুতে শোকাহত বলিউড অঙ্গন ও ভক্তমহল। সহকর্মী, বন্ধু ও অনুরাগীরা সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে স্মরণ করছেন “উজ্জ্বল, নির্ভীক ও প্রেরণাদায়ী” শিল্পী হিসেবে, যিনি পপ সংস্কৃতিতে রেখে গেছেন চিরস্থায়ী ছাপ।
তবে শেফালির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনও নিশ্চিত নয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলেই পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যশোর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আহত পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত দফায় দফায় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ (অপরাধ) সুপার আবুল বাশার, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছে।
শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন আম বটতলা বাজারে মুঠোফোন মেরামত করতে এক দোকানে যান। এ সময় ওই দোকানদারের সঙ্গে ওই নারী শিক্ষার্থীর কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই নারী শিক্ষার্থীকে অশ্লীল কথা বলেন। এরপর ওই শিক্ষার্থীর বন্ধুরা সমবেত হয়ে ওই দোকানে গিয়ে দোকানদারকে মারপিট করেন। এরপর গ্রামবাসী একত্র হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়।
সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয়দের ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার-পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’