মাত্র ৪২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ‘কাঁটা লাগা’ গান দিয়ে আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী শেফালি জারিওয়ালা। শুক্রবার (২৭ জুন) মধ্যরাতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে ভারতের একাধিক গণমাধ্যম। অসুস্থতা অনুভব করার পর তড়িঘড়ি তাঁকে মুম্বাইয়ের বেলভিউ মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকেরা জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে তাঁর মরদেহ কুপার হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে।টাইমস অব ইন্ডিয়া ও মুভি টকিজ-এর খবরে বলা হয়েছে, শেফালির স্বামী পরাগ ত্যাগী ও তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের কর্মীদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সাংবাদিক ভিকি লালওয়ানি সামাজিক মাধ্যমে জানান, হাসপাতালে আনার পরই চিকিৎসকেরা শেফালিকে মৃত ঘোষণা করেন। হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ লুলাও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

১৯৮২ সালের ১৫ ডিসেম্বর মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন শেফালি। তিনি গুজরাতের সরদার বল্লভভাই পটেল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ইনফরমেশন টেকনোলজিতে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ইন্ডি পপ গান ‘কাঁটা লাগা’র রিমেক ভিডিওর মাধ্যমে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পান শেফালি জারিওয়ালা। সত্তরের দশকের হিন্দি সিনেমা ‘সমৃদ্ধি’র গানের রিমেকটি সে সময় তুমুল জনপ্রিয় হয়। গানের সাহসী উপস্থাপনায় শেফালি হয়ে ওঠেন আলোচনা ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু। এরপর ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ নামে পরিচিতি পান তিনি। বলিউডে ক্যামিও চরিত্রে দেখা যায় তাঁকে সালমান খান ও আকশে কুমার অভিনীত ‘মুঝসে শাদি করোগে’ ছবিতে। সব মিলিয়ে ৩৫টির বেশি মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছেন শেফালি।

তবে এরপর আচমকাই গ্ল্যামার দুনিয়া থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি মৃগী রোগে ভুগছিলেন, যার কারণে খুব বেছে বেছে কাজ করতে হতো। পরে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছিলেন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবনেও বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়েছেন শেফালি। ২০০২ সালে তাঁর প্রথম বিয়ে হলেও, সেই সম্পর্ক টেকেনি। ২০০৯ সালে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন এবং বিচ্ছেদ ঘটে। পরে অভিনেতা পরাগ ত্যাগীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে ২০১৪ সালে বিয়ে করেন। দুজন মিলে অংশ নেন জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘নাচ বালিয়ে ৫’-এ।

শুধু অভিনয় নয়, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নারী-অধিকার নিয়ে সোচ্চার ছিলেন শেফালি জারিওয়ালা। সামাজিক মাধ্যমে খোলামেলা ও আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতির জন্য তিনি ছিলেন আলোচনায়। তাঁর অকালমৃত্যুতে শোকাহত বলিউড অঙ্গন ও ভক্তমহল। সহকর্মী, বন্ধু ও অনুরাগীরা সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে স্মরণ করছেন “উজ্জ্বল, নির্ভীক ও প্রেরণাদায়ী” শিল্পী হিসেবে, যিনি পপ সংস্কৃতিতে রেখে গেছেন চিরস্থায়ী ছাপ।

তবে শেফালির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনও নিশ্চিত নয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলেই পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কনার বিবাহবিচ্ছেদ ঘোষণার পর কাকে ‘শিয়াল রাণী’ বললেন ন্যান্সি

হঠাৎ করেই বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা। তার বিবাহবিচ্ছেদের সংবাদটি প্রকাশ্যে আসার পর সংগীতপাড়ায় শুরু হয় আলোচনা। তবে আলোচনা নতুন মোড় নেয় আরেক শিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি একটি পোস্ট দেওয়ার পর।

বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্টে কনা লেখেন, ‘আমি আপনাদের ভালোবাসার কনা। জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে-সবই আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটে।’ এরপর তিনি ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন এবং বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের পেছনের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।
 
কনার স্ট্যাটাসটি প্রকাশের ঠিক প্রায় এক ঘণ্টা পর, রাত ১২টার দিকে, ন্যান্সি তার ফেসবুক প্রোফাইলে একটি ছোট্ট স্ট্যাটাস দেন, যেখানে লেখা ছিল, ‘জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে-বিচ্ছেদ, এর সবই আল্লাহর ইচ্ছায় হয়-বাণীতে শেয়াল রানী।”

এই বাক্য নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয় জল্পনা। কনার পোস্টের একটি বাক্য সরাসরি ব্যবহার করায় অনেকেই ধরে নেন, এই মন্তব্য পরোক্ষভাবে কনাকে উদ্দেশ করে করা। বিশেষ করে ‘শেয়াল রানি’ শব্দটি ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

এই ঘটনার পেছনে পুরনো একটি প্রেক্ষাপটও নতুন করে সংযোগ তৈরি করছে। গত বছরের ১৪ জুলাই ন্যান্সি একটি শেয়ালের ছবি পোস্ট করেছিলেন, যা অনেকেই মনে করেন, কনার দিকেই ইঙ্গিত ছিল। সে সময় কনার গাওয়া সুপারহিট গান ‘দুষ্টু কোকিল’ নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় ছিলেন কনা।

এরপর থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়—দুই জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পীর মধ্যে যেন পর্দার আড়ালে চলছে টানাপোড়েন। যদিও কনা বা ন্যান্সি কেউই প্রকাশ্যে কোনো বিরোধ স্বীকার করেননি, কিংবা একে অপরকে নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি। তবে কণার স্ট্যাটাসের পর এবারও ন্যান্সির এই পোস্টে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাচ্ছেন নেটিজেনরা।

২০০০ সালে সংগীত ক্যারিয়ার শুরু করেন দিলশাদ নাহার কনা। অন্যদিকে ২০০৬ সালে ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’ ছবিতে ‘পৃথিবীর যত সুখ’ গানটির মধ্য দিয়ে গানের ক্যারিয়ার শুরু হয় ন্যান্সির।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরভ গাঙ্গুলীর বাড়তে কী কী খেলেন সারা, আদিত্যরা
  • ঘুমের ওষুধ খেয়ে হিরো আলম অসুস্থ, নেওয়া হলো হাসপাতালে
  • কুয়াকাটায় মৎস্যজীবী দলের সদস্য জেলেকে পিটিয়ে হত্যা
  • নাটোরে নিখোঁজের ৬ ঘণ্টা পর মিলল শিশু আবিরের মরদেহ 
  • সিমন্সের প্রত্যাশা: নিশাঙ্কাকে দেখে শিখুক বাংলাদেশের ব্যাটাররা
  • ফিরছে ব্ল্যাকপিঙ্ক, আসছে গান
  • নাটাই শ্রীলঙ্কার হাতে
  • মা হতে যাওয়ার গুঞ্জন উসকে দিলেন অঙ্কিতা
  • কনার বিবাহবিচ্ছেদ ঘোষণার পর কাকে ‘শিয়াল রাণী’ বললেন ন্যান্সি