নোয়াখালীতে মাদ্রাসাছাত্র ‘হত্যার’ বিচার দাবিতে মানববন্ধন
Published: 28th, June 2025 GMT
নোয়াখালী সদর উপজেলায় মাদ্রাসা ছাত্র জোবায়ের ইবনে জুদানের ‘হত্যার’ বিচার দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে। শনিবার (২৮ জুন) নোয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ সড়কে এলাকাবাসী এ কর্মসূচি পালন করে।
বিক্ষোভে নিহত জুদানের বাবা আমিনুল ইসলাম সোহেল, মা সাবিনা খাতুন জুমাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন অংশ নেয়।
নিহতের বাবা জানান, জুদান সোনাপুর মহব্বতপুর তাজবীদুল কুরআন সোবহানিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল। সে সব সময় হাসি-খুশি থাকতো। গত ৩০ এপ্রিল মাদ্রাসা থেকে ফোনে জানানো হয় তাদের ছেলে অসুস্থ। সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখেন তাদের ছেলে মৃত। জানতে চাইলে জানানো হয়, সে আত্মহত্যা করেছে।
আরো পড়ুন:
দৌলতপুরে যুবককে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১
আবু সাঈদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৮ পুলিশ স্বপদে, উত্তাল বেরোবি
তিনি আরো বলেন, মৃত্যুর দুই দিন আগে খেলাকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জুদানকে শাস্তি দেয়। প্রথমে তার মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হয়, তারপর তাকে টেবিলের নিচে মাথা দিয়ে কান ধরিয়ে রাখা হয়। তার দাবি, ১০ বছরের ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শারীরিক নির্যাতন করে তাকে হত্যা করে ফাঁসির নাটক সাজিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে চাইলেও থানা মামলা নেয়নি। দুই মাস অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তাদের দেয়া হয়নি।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসেছে। সেখানে জুদানের মৃত্যু ফাঁসিতে হয়েছে বলে উল্লেখ আছে। পরবর্তী বিষয় তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।
ঢাকা/সুজন/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশালে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে গত ১৮ দিন ধরে চলমান আন্দোলন এবং বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ফটকে গত কয়েকদিন ধরে চলা অনশনকারীদের ওপর হামলা ও ধাওয়া দেওয়া হয়েছে। এতে আন্দোলনকারী অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী আহত শিক্ষার্থীরা।
এদিন সকালে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের আয়োজনে অযৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনের নামে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ব্যহত করার অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিলের পরপরই আন্দোলকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আহত শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ স্মৃতি সংসদের নেতৃত্বে জাহিন-রাফি
রাকসু ফান্ডে জমা ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা, হল সংসদের ফান্ড অস্পষ্ট
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জেরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় হাসপাতাল কম্পাউন্ডে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে, বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে বরিশাল সফরে এসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার দিবাগত রাতে বরিশাল নগরীতে মশাল মিছিল করেন আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পরপরই স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা জানিয়েছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সংগঠক মহিউদ্দিন রনি।
তিনি বলেন, “১৩ আগস্ট বরিশালে সফরে এসে ব্যর্থ হয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফসহ সেই পুরনো সিন্ডিকেট দালাল চক্রের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় অনশনরত শিক্ষার্থীসহ তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসা আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।”
তিনি আরো বলেন, “বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজসহ দেশের সব সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা সেবায় অবহেলা এবং স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে আমরা ১৮ দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল স্বাস্থ্য উপদেষ্টা স্ব-শরীরে বরিশালে এসে আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবিগুলো শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেবেন। কারণ স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পরবর্তী যেসব কর্মকর্তা রয়েছেন, তারা অধিকাংশই বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত।”
রনি বলেন, “যে কারণে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবিগুলো উপদেষ্টার কাছে বলতে চেয়েছেন। সেখানে উপদেষ্টা না এসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বরিশালে পাঠিয়েছেন। মহাপরিচালক বরিশালে মতবিনিময় সভা করলেও সেখানে আন্দোলনকারীদের কোনো প্রতিনিধি না রেখে বরং অযৌক্তিক আন্দোলন বন্ধ না হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করবে বলে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে গেছেন। এ কারণেই হাসপাতালের স্টাফরা আন্দোলনকারী ও অনশনরতদের ওপর হামলা চালাতে সাহস দেখিয়েছেন। আমারা এখন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগের এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা করব।”
অপরদিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একাধিক স্টাফরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন চলাকালে ছাত্ররা আমাদের কটূক্তি করে দালাল বলায় তাদের ধাওয়া করা হয়। এ সময় অযৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনকারীরা দৌড়ে পালাতে গিয়ে আহত হয়েছে।”
এর আগে, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের দাবিকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
কর্মসূচি শেষে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হাসপাতাল থেকে শহরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানালে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এরপর উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ সময় বেশ কয়েকজন ছাত্র-জনতা আহত হন এবং আন্দোলনরত কয়েকজনকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
ঢাকা/পলাশ/মেহেদী