সাবেক যুবদল নেতাকে গ্রেপ্তারে অভিযানের পর বাড়ির পাশে মিলল লাশ
Published: 6th, July 2025 GMT
ঢাকার নবাবগঞ্জে বাড়ির পাশের ফসলি জমি থেকে আমজাদ হোসেন (৫২) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (৬ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে উপজেলার মৃধাকান্দা এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে, তাকে গ্রেপ্তারে তার বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল। আমজাদ হোসেন উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার ভোর ৪টার দিকে চেক জালিয়াতির মামলায় এক বছরের সাজাসংক্রান্ত পরোয়ানা নিয়ে আমজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তারে তার বাড়িতে যায় নবাবগঞ্জ থানা-পুলিশ। কিন্তু, এ সময় তাকে না পেয়ে পুলিশ ফিরে যায়। পুলিশ চলে গেছে জানতে পেরে আমজাদ ঘর থেকে বের হন।
আরো পড়ুন:
খেলার সময় বল পড়ে যায় পানিতে, তুলতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
মগবাজারে হোটেল থেকে উদ্ধার তিন মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, যা জানালেন চিকিৎসক
পরিবারের সদস্যরা ধারণা করেন, আমজাদ ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলেন। তবে ভোর ৫টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন ধনচে খেতের পাশে আমজাদকে পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। দ্রুত আমজাদকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্বজনেরা লাশ বাড়িতে নিয়ে যান।
এদিকে, এ ঘটনার পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হত্যা’র অভিযোগ তুলে বিভিন্ন পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে যুবদলের নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা আমজাদের বাড়িতে যান।
খবর পেয়ে নবাবগঞ্জ থানা-পুলিশ আমজাদের বাড়িতে গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে। পুলিশ জানায়, আমজাদের নামে রাজনৈতিকসহ অন্তত ২৭টির বেশি মামলা রয়েছে। একটি চেক জালিয়াতির মামলায় তার বিরুদ্ধে এক বছরের সাজা পরোয়ানাও ছিল।
নিহতের স্ত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, ‘‘আমি জানি না আমার স্বামী কীভাবে মারা গেল। আল্লাহর কাছে বিচার চাই।’’
আমজাদের ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমার ভাই রাজনীতি করে। তার অনেক প্রতিপক্ষ আছে। পুলিশ তাকে ধরতে আসলেও সে কেন ওখানে গিয়ে পড়ে মারা গেল? এটা আমরা বুঝতে পারছি না।’’
নিহতের বড় মেয়ে আশা আক্তার বলেন, ‘‘বাবার মুখে ও চোখের কোণে জখমের চিহ্ন আছে। বাবাকে কেউ হত্যা করেছে কি না, তা এখনো বলতে পারছি না।’’
নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’’
ভোররাতে গ্রেপ্তার অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমজাদের নামে সাজার পরোয়ানা ছিল। পুলিশ ভোর ৪টায় তাকে ধরতে যায়। বাসার দরজা না খোলায় পুলিশ ফিরে আসে। পরে স্থানীয় লোকজন মুঠোফোনে আমজাদের মৃত্যুর খবর জানান।’’
গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেওয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিবুল ইসলাম ও দেলোয়ার হোসেন জানান, তারা আমজাদের বাড়িতে ঢোকেননি।
ঢাকা/শিপন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নৌকায় বসিয়ে নদীতে ডুব দিয়ে আর উঠতে পারেননি তিনি
চার বছর বয়সী মেয়ে রুসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পাশের করতোয়া নদীতে গোসল করতে গিয়েছিলেন মাসুম আল মামুন (৪২)। নদীর ধারে বেঁধে রাখা নৌকায় মেয়েকে বসিয়ে রেখে পানিতে ডুব দিয়েছিলেন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ বাবাকে উঠতে না দেখে দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি মাকে জানায় রুসফিয়া। পরে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। পরে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর উদ্ধার হয়েছে মাসুমের লাশ।
রোববার বিকেলে পঞ্চগড় পৌরসভার আহমদনগর এলাকাসংলগ্ন করতোয়া নদীতে এ ঘটনা ঘটে। মৃত মাসুম আল মামুনের বাড়ি আহমদনগর এলাকায়। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন।
নিহত মাসুম আল মামুনের মামাতো ভাই জাফর আহমদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নদীতে নেমে তাঁকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে বিকেল ছয়টার দিকে পানির নিচে মাসুমকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তিনি বলেন, তাঁরা শুনেছেন মাসুমের হৃদ্রোগ ছিল। পানিতে ডুব দেওয়ার পর তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে তাঁরা ধারণা করছেন।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘খবর পেয়ে বিকেল পাঁচটার দিকে আমরা নিখোঁজ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারে নদীতে নামি। এ সময় আমাদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনও নদীতে নেমেছিলেন। প্রায় ৪৫ মিনিট খোঁজাখুঁজির পর হঠাৎ করেই স্থানীয় একজনের পায়ে মানুষের শরীরের মতো কিছু একটা লাগে। পরে সেখান থেকে মাসুম আল মামুনের লাশ খুঁজে পাই। পরে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।’
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।