টিকিট বুকিং আগেই ছিল। দিনের শেষ শো। এডমন্ডসন পার্কের ইডি স্কয়ারের ইভেন্ট সিনেমা হলে পরিবার নিয়ে পৌঁছালাম। সিনেমার নাম ‘সিতারে জমিন পর’—মন বলছিল, বিশেষ কিছু অপেক্ষা করছে। পাশে আমার মেয়ে, ছোট ভাইবোনেরা। মনে মনে ভাবছিলাম, এক হিন্দি ছবি কী-ই বা নতুন দেখাবে! কিন্তু ছবির শেষে আমরা সবাই আসনেই বসে রইলাম—নিঃশব্দ। আচ্ছন্ন আমরা সবাই। বুঝলাম ‘সিতারে জমিন পর’ কোনো সাধারণ সিনেমা নয়—এ যেন এক আত্মানুসন্ধানের গল্প। ‘তারে জমিন পর’ ছবির আবেগঘন ভিত্তির ওপর দাঁড়ানো এই ছবির সিকুয়েলও ঠিক ততটাই আবেগময়, তবে ভিন্ন বাস্তবতায়। বিশেষভাবে চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে ছবির গল্প ভাবায়, কাঁদায় আর বিবেকেও প্রশ্ন তোলে—‘স্বাভাবিক’ বা ‘নরমাল’ বলতে আমরা কী বুঝি?

জীবনের গল্প
ছবির কেন্দ্রে আমির খানের চরিত্র গুলশান অরোরা। একজন বাস্কেটবল কোচ, যিনি জেদি, রাগী, কিন্তু ভেতরে লুকিয়ে আছে তাঁর গভীর মানসিক ক্ষত, অতীতের দগদগে স্মৃতি আর সমাজের চাপিয়ে দেওয়া ‘স্ট্রং পুরুষ’ হয়ে ওঠার অমানবিক চাপ। এই কোচ গড়ে তোলেন একদল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন খেলোয়াড় নিয়ে তৈরি দল। যেখানে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জীবন নিজের ভেতরেই এক একটি যুদ্ধক্ষেত্র। তাঁরা শুধু খেলেন না—জীবনের ব্যাখ্যাও নতুন করে শেখান। ছবির এক অসাধারণ মুহূর্তে, একটি ছোট্ট মেয়ে কোচকে শেখায় ‘সরি’ বলা কত সহজ, তখন বুকের কোথাও কাঁপুনি অনুভব করি। মনে হয়, এ কেবল সিনেমা নয়—আমাদের মধ্যেই ঘটে যাওয়া গল্প।

‘সিতারে জমিন পর’ সিনেমার দৃশ্য। এক্স থেকে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অস্ত্রবিরতি ভেঙে পড়ল

অস্ত্রবিরতি ভেঙে আজ মঙ্গলবার ভোর থেকে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি রকেট হামলা চালিয়েছে। কাবুলে বিভিন্ন সূত্র থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। স্থানীয় সাংবাদিকদের ভাষ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোর চারটা নাগাদ দক্ষিণ আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের শুরাবাক জেলায় রকেট হামলা চালায় পাকিস্তান। তবে হামলায় তাৎক্ষণিক হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

আফগান সূত্র জানায়, প্রথমে পাকিস্তানের দিক থেকে হামলা চালানো হয়। জবাবে ইসলামি আমিরাতের সরকার নতুন করে পাকিস্তানি চৌকি এবং অবস্থানের ওপর পাল্টা রকেট হামলা চালায়। আফগানিস্তানের বিভিন্ন সূত্র মনে করছে, এতে পাকিস্তানের ভালো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, অনেকের প্রাণহানিও হয়েছে।

এই রকেট হামলা প্রমাণ করছে, কাতার ও ইরানের পরামর্শে যে অস্ত্রবিরতি শুরু হয়েছিল, তা ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই ভেঙে পড়ল। এতে অস্ত্রবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে একটা প্রশ্নও দেখা দিল। অবশ্য এর আগে সোমবার দুই পক্ষ থেকেই অস্ত্রবিরতিকে স্বাগত জানানো হয়েছিল।

পাশাপাশি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আফগানিস্তানের বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করেছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে, দুই দেশের সম্পর্কের দ্রুত অবনতি হচ্ছে। গত কয়েক বছরে তালেবান নেতৃত্বাধীন ইসলামিয়া আমিরাতের সরকারকে ‘অন্তর্বর্তী বা আফগানিস্তানের সরকার’ বলে অভিহিত করেছে ইসলামাবাদ। তবে গত রোববার থেকে তারা আফগান সরকারকে কার্যত পাকিস্তান নির্ধারিত সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, পাকিস্তানের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে একসঙ্গে হামলা চালিয়েছে আফগান তালেবান, তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) এবং বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। অর্থাৎ আফগান সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মন্তব্য নিয়ে এখনো আমিরাতের সরকার কোনো মন্তব্য করেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ