মিটফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদকে প্রকাশ্যে প্রস্তরযুগীয় কায়দায় পাথর মেরে জানে মারার পর জানা যাচ্ছে, এলাকার যে দাদারা তাঁকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে মেরেছেন, তাঁরাই বড় চাঁদাবাজ। তাঁরা মূলত রাজনৈতিক জীব। আওয়ামী আমলে অফিশিয়ালি অপজিশনে আর বর্তমানে আনঅফিশিয়ালি পজিশনে থাকা যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল তাঁদের আসল বল। তাঁরা এসব দলের মারদাঙ্গাধর্মী নেতা-কর্মী।

গণভবন পতনের পর দেশ লুটেপুটে খাওয়ার মতো এলোমেলো হয়ে গেছে ভেবে যাঁরা আনন্দে বাঙ্গিফাটা হয়ে চান্দার ধান্ধায় টেকনাফ টু তেঁতুলিয়া, নীলক্ষেত টু খিলক্ষেত ছলে এবং বলে দখলে নিয়েছেন, সেই কৃতিসন্তানদের মধ্যে এই নেতাকর্মীরাও আছেন।

৫ আগস্টের পর বিএনপি ছাড়াও জামায়াত এবং এনসিপিসহ অন্যান্য নতুন পুরোনো দলের বুড়ো থেকে খোকা এবং সিকি থেকে আধা নেতাদের চাঁদাবাজি, দখলবাজি এবং তদবিরবাজির খবর দেখতে পাচ্ছি। তবে বলশালী খলদের দখল আর তদবির ছাপিয়ে আলোচনায় এখন চাঁদা।

চাঁদা, মানে চান্দা কোনো ধান্দার জিনিস না। এক সময় পাড়া-মহল্লায় মসজিদ-মক্তব, পাঠশালা-পাঠাগার গড়ার মতো মহৎ কাজের খরচ যোগাতে আদা-ব্যাপারী ফকিরজাদা থেকে জাহাজ-কারবারি সাহেবজাদা চাঁদা দিতেন। গাঁও গেরামে পাগার পারাপারের সাঁকো লাখো লোকের হাসিমুখে দেওয়া চাঁদার টাকায় হতো। এখনো হয়তো হয়। দাদা-পরদাদার আমল থেকে চাঁদার চল চলছে। সেই চাঁদায় কালি ছিল না। সেই চাঁদা কালা ছিল না, ছিল সাদা।

আরও পড়ুননেতাকর্মীদের বেতন দিন, মানুষকে চাঁদাবাজি থেকে মুক্তি দিন২৪ আগস্ট ২০২৪

পরে সাদা চাঁদায় ‘বাজি’ ঢুকে পড়েছে। চাঁদাবাজিতে হাজিপাড়া-কাজীপাড়া একাকার হয়ে গেছে। ‘দালান উঠছে তাও রাজনীতি, দালান ভাঙছে তাও রাজনীতি’র মতো বাড়ি কিনলে নতুন চাঁদের মতো চাঁদাবাজ উদয় হচ্ছে, বাড়ি বেচলেও বাজ পড়ার মতো ফাজিল চাঁদাবাজ নাজিল হচ্ছে। টং দোকান থেকে শপিং মলে ছলেবলেকৌশলে তলে তলে চাঁদাবাজি চলে।

আওয়ামী চাঁদাবাজি অস্ত গেছে। এখন এসেছে নতুন চাঁদাবাজ, তাঁকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে স্থান। মোবাইল মনিটরে ঝুঁকে ফেসবুকে ঢুকে দেখছিলাম, মোহাম্মাদপুরের এক যুবদল নেতা বলছেন, ‘আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজরা পালাইছে, এলাকায় কেউ চাঁদা তোলার নাই। কেউ তাল পাইতাছে না, তাই আমি হাল ধরছি।’

কারওয়ানবাজার–কাপ্তানবাজার–ঠাঁটারীবাজার–রাজাবাজারে হাজার হাজার ‘রাজা’র উদয় হয়েছে। ফেসবুকে ভেসে আসা আরেক ভিডিওতে দেখেছি, গাজীপুরে রাম দা আর চাপাতিধারী জনাবিশেক স্যাঙাত নিয়ে যুবদলের এক ‘রাজা’ হ্যান্ডমাইকে অমায়িক হুমকি দিয়ে খোলাবাজারে রীতিমতো বাজনা বাজিয়ে ‘খাজনা’ আদায় করছেন। মুরগির ছাও ছো মেরে নেওয়া বাজের মতো চাঁদাবাজ পেয়াদায় আদায় করছেন ‘খাজনা’।

ষোলো বছরের না খাওয়া গাল হা করে যে রাহু লম্বা গলায় সব গিলতে চাচ্ছে, তাকে বাহু তুলে বাধা দেবে এমন কাউকে দেখা যাচ্ছিল না।

আজিমপুর গোরস্থান, মানে কবর থেকেও এক বিএনপি নেতার ‘তোলা’ তোলার খবর আমরা জেনেছি। গুগলে ‘বিএনপির চাঁদাবাজি’ লিখে সার্চ দিলে এই সংক্রান্ত সংবাদের অন্ত মিলবে না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য ইমামুর রশিদ ইমন গাড়িতে বসা এক নারীর কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস

জমকালো সাজে সেজেছে যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল। উপলক্ষটাও অনন্য, রাজকীয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশ্যভোজ আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা।

বুধবার রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণমান্য ব্যক্তি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মানে রাজা তৃতীয় চার্লসের আয়োজন করা রাজকীয় ভোজের টেবিল। যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ