ক নিলে চাঁদা, খ নিলে ডোনেশন, গ নিলে ইয়ানত, ঘ নিলে হাদিয়া!
Published: 23rd, July 2025 GMT
মিটফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদকে প্রকাশ্যে প্রস্তরযুগীয় কায়দায় পাথর মেরে জানে মারার পর জানা যাচ্ছে, এলাকার যে দাদারা তাঁকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে মেরেছেন, তাঁরাই বড় চাঁদাবাজ। তাঁরা মূলত রাজনৈতিক জীব। আওয়ামী আমলে অফিশিয়ালি অপজিশনে আর বর্তমানে আনঅফিশিয়ালি পজিশনে থাকা যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল তাঁদের আসল বল। তাঁরা এসব দলের মারদাঙ্গাধর্মী নেতা-কর্মী।
গণভবন পতনের পর দেশ লুটেপুটে খাওয়ার মতো এলোমেলো হয়ে গেছে ভেবে যাঁরা আনন্দে বাঙ্গিফাটা হয়ে চান্দার ধান্ধায় টেকনাফ টু তেঁতুলিয়া, নীলক্ষেত টু খিলক্ষেত ছলে এবং বলে দখলে নিয়েছেন, সেই কৃতিসন্তানদের মধ্যে এই নেতাকর্মীরাও আছেন।
৫ আগস্টের পর বিএনপি ছাড়াও জামায়াত এবং এনসিপিসহ অন্যান্য নতুন পুরোনো দলের বুড়ো থেকে খোকা এবং সিকি থেকে আধা নেতাদের চাঁদাবাজি, দখলবাজি এবং তদবিরবাজির খবর দেখতে পাচ্ছি। তবে বলশালী খলদের দখল আর তদবির ছাপিয়ে আলোচনায় এখন চাঁদা।
চাঁদা, মানে চান্দা কোনো ধান্দার জিনিস না। এক সময় পাড়া-মহল্লায় মসজিদ-মক্তব, পাঠশালা-পাঠাগার গড়ার মতো মহৎ কাজের খরচ যোগাতে আদা-ব্যাপারী ফকিরজাদা থেকে জাহাজ-কারবারি সাহেবজাদা চাঁদা দিতেন। গাঁও গেরামে পাগার পারাপারের সাঁকো লাখো লোকের হাসিমুখে দেওয়া চাঁদার টাকায় হতো। এখনো হয়তো হয়। দাদা-পরদাদার আমল থেকে চাঁদার চল চলছে। সেই চাঁদায় কালি ছিল না। সেই চাঁদা কালা ছিল না, ছিল সাদা।
আরও পড়ুননেতাকর্মীদের বেতন দিন, মানুষকে চাঁদাবাজি থেকে মুক্তি দিন২৪ আগস্ট ২০২৪পরে সাদা চাঁদায় ‘বাজি’ ঢুকে পড়েছে। চাঁদাবাজিতে হাজিপাড়া-কাজীপাড়া একাকার হয়ে গেছে। ‘দালান উঠছে তাও রাজনীতি, দালান ভাঙছে তাও রাজনীতি’র মতো বাড়ি কিনলে নতুন চাঁদের মতো চাঁদাবাজ উদয় হচ্ছে, বাড়ি বেচলেও বাজ পড়ার মতো ফাজিল চাঁদাবাজ নাজিল হচ্ছে। টং দোকান থেকে শপিং মলে ছলেবলেকৌশলে তলে তলে চাঁদাবাজি চলে।
আওয়ামী চাঁদাবাজি অস্ত গেছে। এখন এসেছে নতুন চাঁদাবাজ, তাঁকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে স্থান। মোবাইল মনিটরে ঝুঁকে ফেসবুকে ঢুকে দেখছিলাম, মোহাম্মাদপুরের এক যুবদল নেতা বলছেন, ‘আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজরা পালাইছে, এলাকায় কেউ চাঁদা তোলার নাই। কেউ তাল পাইতাছে না, তাই আমি হাল ধরছি।’
কারওয়ানবাজার–কাপ্তানবাজার–ঠাঁটারীবাজার–রাজাবাজারে হাজার হাজার ‘রাজা’র উদয় হয়েছে। ফেসবুকে ভেসে আসা আরেক ভিডিওতে দেখেছি, গাজীপুরে রাম দা আর চাপাতিধারী জনাবিশেক স্যাঙাত নিয়ে যুবদলের এক ‘রাজা’ হ্যান্ডমাইকে অমায়িক হুমকি দিয়ে খোলাবাজারে রীতিমতো বাজনা বাজিয়ে ‘খাজনা’ আদায় করছেন। মুরগির ছাও ছো মেরে নেওয়া বাজের মতো চাঁদাবাজ পেয়াদায় আদায় করছেন ‘খাজনা’।
ষোলো বছরের না খাওয়া গাল হা করে যে রাহু লম্বা গলায় সব গিলতে চাচ্ছে, তাকে বাহু তুলে বাধা দেবে এমন কাউকে দেখা যাচ্ছিল না।
আজিমপুর গোরস্থান, মানে কবর থেকেও এক বিএনপি নেতার ‘তোলা’ তোলার খবর আমরা জেনেছি। গুগলে ‘বিএনপির চাঁদাবাজি’ লিখে সার্চ দিলে এই সংক্রান্ত সংবাদের অন্ত মিলবে না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য ইমামুর রশিদ ইমন গাড়িতে বসা এক নারীর কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট