মাইলস্টোন ট্র্যাজিডি: আয়মানকে দাদার পাশে দাফন
Published: 25th, July 2025 GMT
ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মারা যাওয়া ১০ বছরের আয়মানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের ভেদেরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে জানাজা শেষে তাকে তার দাদার কবরের পাশে দাফন করা হয়।
আজ সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আয়মানের মৃত্যু হয়। তার শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
আরো পড়ুন:
ফরিদপুরে ইজিবাইকের চাপায় শিশুর মৃত্যু
উক্যচিংয়ের মরদেহ পৌঁছেছে গ্রামে, সৎকার বুধবার
আয়মান শরীয়তপুরের ভেদেরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন ও আয়েশা আক্তার দম্পতির মেয়ে। সে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শ্রেণি কক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল আয়মান। বিমান বিধ্বস্ত হলে দগ্ধ হয় সে। এরপর শিক্ষকদের কাছে ছুটে যায়। শরীর দগ্ধ হওয়ার খবর শিক্ষকদের মোবাইল থেকে দাদি রুমা বেগমকে জানায় আয়মান। পরিবারের সদস্যরা স্কুলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আজ শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
সন্ধ্যায় তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। এ সময় তাকে শেষবারের মতো দেখতে স্বজন ও এলাকার মানুষ বাড়িতে ভিড় করেন। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। পরে জানাজা শেষে নারায়ণপুর গ্রামে দাদার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
আয়মানের চাচাতো বোন তাসফিয়া জাহান ইকরা বলেন, “আইমান আমার খেলার সঙ্গী ছিল। এখন সে নেই—আমি কার সঙ্গে খেলব? আল্লাহ তাকে জান্নাত দিক।”
আয়মানের ছোট মামা ইমরুল কায়েস বলেন, “আমার ভাগ্নি ক্লাস শেষে দোলনায় দোল খাচ্ছিল। বিমান বিধ্বস্ত হলে সে গুরুতর আহত হয়। তিনদিন জীবনযুদ্ধ চালিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। আজ সকালে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আমাদের আদরের আয়মানের মৃত্যু হয়।”
তিনি বলেন, “চিকিৎসা সেবা নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। আয়মান সর্বোচ্চ চিকিৎসা পেয়েছে।”
আরো পড়ুন: মাইলস্টোন ট্র্যাজিডি: বার্ন ইউনিটে আরো ১ শিশুর মৃত্যু
ভেদরগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মোহাম্মদ মোজাহেরুল হক বলেন, “মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা নিহত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং জানাজায় অংশ নিয়েছি। এ ঘটনায় ভেদরগঞ্জ উপজেলায় দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন। শোকাহত পরিবারগুলোর পাশে আমরা সবসময় থাকব।”
ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আয়ম ন র পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরের সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে ভেঙেই পড়ল পদ্মা নদীতে
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের ১৫১ নম্বর উত্তর মাথাভাঙা মান্নান সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি পদ্মা নদীতে ভেঙে পড়েছে। বিলীন হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের ৩০ শতাংশ জমি। বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবন নদীতে বিলীন হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার বিকেলে ভবনটির একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়ে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়ন পদ্মা নদীর চরে অবস্থিত। ইউনিয়নটির একদিকে মুন্সিগঞ্জ ও আরেক দিকে চাঁদপুর জেলা। ওই এলাকাটির চার দিক দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত হয়েছে। ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মাথাভাঙা চরবানিয়াল গ্রামে ৪০০ পরিবারের বসবাস। ওই গ্রামের বাসিন্দারা নদীতে মাছ শিকার ও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের মধ্যে পড়ালেখার আগ্রহ কম। এ ছাড়া গ্রামটিতে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল না। ২০১৭ সালে ওই গ্রামে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করে সরকার। পরের বছর ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হয়। একতলা একটি পাকা ভবনের চারটি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলছিল। সোমবার বিকেলে বিদ্যালয় ভবনের একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে।
আরও পড়ুনযেকোনো সময় পদ্মায় বিলীন হতে পারে শরীয়তপুরের বিদ্যালয়টি১৯ ঘণ্টা আগেবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকেরা জানান, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি পদ্মার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ে। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে। এ বছরের জুন মাসে সেই বালুর বস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবনটি রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ভাঙনের কবল থেকে বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙনের মুখে পড়লে ৪ সেপ্টেম্বরের থেকে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। রোববার বিদ্যালয়ের আসবাব ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে উত্তর মাথঅভাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে