পাবনার সুজানগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুর রউফ শেখসহ সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আটজন। বুধবার সুজানগর পৌর সিনেমা হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আবদুর রউফ কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের অনুসারী। সুজানগর উপজেলার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান খান বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি এ কে এম সেলিম রেজা হাবিবের অনুসারী বলে জানা গেছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি শেখ রউফের দলের প্রধান কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনকে পাবনা-২ (সুজানগর) এর পরিবর্তে পাবনা-৩ (চাটমোহর) এলাকা সংসদ নির্বাচন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে। এর পর থেকে তুহিনের সমর্থকরা এলাকায় কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এর জের ধরে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।

গত মঙ্গলবার মজিবর রহমান খানের অনুসারী আশিক মোবাইল ফোনে একটি মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ কারণে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আবদুর রউফের ভাতিজা ও তাঁর অনুসারীরা আশিকের ফোনটি কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। ওই দিনই উভয় পক্ষ বসে বিষয়টি মীমাংসা করে। বুধবার দুপুরে কাউসার নামে বিএনপির এক নেতা আশিককে আবার ডেকে পাঠান। আশিক তাঁর চাচাতো ভাই ছাত্রদল নেতা সবুজকে নিয়ে কাউসারের কাছে যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে সবুজকে ছুরিকাঘাত করা হয়। বিষয়টি আশিক ও সবুজ তাদের অভিভাবক ও বিএনপি নেতাদের জানালে তারা দলবদ্ধভাবে কাউসারদের ওপর হামলা চালায়। উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে সংঘর্ষ হয়। এ সময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এতে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুর রউফ শেখসহ সাতজন গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া আরও অন্তত আটজন আহত হন। 

গুলিবিদ্ধ তাঁতীবন্দ গ্রামের শেখ আবদুর রউফ, ইয়াকুব, তুষার, সুজন, আসলাম ও মনজেলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশি পাহারা জোরদার করা হয়েছে। অন্য আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুজিবর রহমান জানান, এখনও কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, দুই পক্ষের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। এটা রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে ঘটেনি।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌফিক হাসান বলেন, সংঘর্ষের ঘটনাটি দলীয় কোনো বিষয় নয়; আঞ্চলিক বা ব্যক্তিগত বিষয়। তবুও এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা আসলেই নিন্দনীয়। ঘটনায় দোষীদের শাস্তি হওয়া উচিত।

বিএনপি নেতা মজিবর রহমান খান সমকালকে বলেন, শেখ আবদুর রউফ ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন শ খ আবদ র রউফ র অন স র র রহম ন স জ নগর স ঘর ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

“আপনি ইংরেজি শিখলেন কোথায়?”- লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্টকে  ট্রাম্প

লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট জোসেফ বোয়াকাইর ইংরেজি কথায় মুগ্ধ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে জিজ্ঞাসা করেন— “আপনি ইংরেজি শিখলেন কোথায়?”

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার হোয়াইট হাউসে একদল আফ্রিকান নেতার সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিচ্ছিলেন। আলোচনার একপর্যায়ে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট জোসেফ বোয়াকাই ইংরেজিতে কথা বলা শুরু করলে ট্রাম্প চমকে যান এবং প্রশ্ন করেন, “এত ভালো ইংরেজি আপনি শিখলেন কোথায়?”

বোয়াকাই বলেন, “লাইবেরিয়া থেকেই”। উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “এটা বেশ মজার। আমরা এখানে যারা বসে আছি, তাদের মধ্যে অনেকেই এত ভালো ইংরেজি বলতে পারেন না।”

ট্রাম্পের এই মন্তব্য শুনে বোয়াকাই হালকা হাসলেন, তবে বিষয়টি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও বিশ্লেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। যদিও পশ্চিম আফ্রিকর দেশ লাইবেরিয়ার সরকারি ভাষা ইংরেজি। তবে ট্রাম্প জানতেনই না লাইবেরিয়ার সরকারি ভাষা ইংরেজি।

ট্রাম্প যখন আফ্রিকান নেতাদের স্বাগত জানাচ্ছিলেন, তখন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, “লাইবেরিয়া দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু। আমরা ‘আমেরিকাকে আবার মহান করে তোলার’ নীতিকে সমর্থন করি। আমরা শুধু এই সুযোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”

এই বক্তব্যের পরই ট্রাম্প তার ইংরেজি দক্ষতা নিয়ে মন্তব্য করেন।

লাইবেরিয়া এমন একটি দেশ যা ১৮২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই মুক্তি পাওয়া আফ্রিকান-আমেরিকানদের উপনিবেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তখন কিছু শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান মনে করতেন দাসপ্রথা শেষ হলে কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য আলাদা জায়গা দরকার, এই ভাবনার ফলেই গড়ে ওঠে লাইবেরিয়া। ফলে দেশটির সরকারি ভাষা ইংরেজি, যদিও স্থানীয় বহু আদিবাসী ভাষাও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ