স্থানীয় সরকার বিভাগের দুটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। এর একটি প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির সংক্রান্ত এবং অপরটি প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ সংক্রান্ত। দুই প্রস্তাবে ব্যয় হবে মোট ২২২ কোটি ৩৪ লাখ ১২ হাজার ৩৬৯ টাকা।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, ‘রিহেবিলিশন অব ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক ফর এন আর ডব্লিউ রিডাকশন (মডস জোন-১)’ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পূর্বানুমোদনক্রমে এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ সিসিএসইবি ও আরপিএল যৌথভাবে ৩৭৫ কোটি ৩৭ লাখ ১৬ হাজার ৭৩২ টাকায় পেয়েছিল। তবে চুক্তি অনুযায়ী পূর্ত কাজ চলাকালে স্কোপ অব ওয়ার্ক বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়নের কারণে অতিরিক্ত পাইপলাইন স্থাপন (১৩৪.

৯১ কি.মি.), ৫,৭৭৯টি অতিরিক্ত হাউসহোল্ড সার্ভিস কানেকশন, সড়ক খনন চার্জ বৃদ্ধি, ভ্যাট ও ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত ব্যয় দাঁড়ায় ১৪৬ কোটি ৯২ লাখ ৭৬ হাজার ২১৩ টাকা।

ভেরিয়েশন প্রস্তাবটি মূল চুক্তিমূল্যের ৩৯.১৪ শতাংশ বেশি বলে জানানো হয়। 

একই সভায় ‘এক্সপানডেট ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট’-এর আওতায় প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট (পিএমসি) নিয়োগের প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়।

এই প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠান কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব জমা দেয়। এগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ স্কোরপ্রাপ্ত যৌথ দরদাতা প্রতিষ্ঠান (১) আইডব্লিউএম, (২) দেব কন, এবং (৩) জিকেডব্লিউ, ঢাকা–কে নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৭৫ কোটি ৪১ লাখ ৩৬ হাজার ১৪৭ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ব প রকল প অন ম দ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ