জুলাই গণভ্যুত্থান চলাকালে শান্তি মিছিলে যোগদান এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর জুলুম ও নির্যাতনের অভিযোগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ১৫৪ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকতা কর্মচারীকে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার (৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো হেলাল উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৩২৮তম সভায় গত বছর ৪ আগস্ট ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ শান্তি মিছিলে যোগদান এবং গণঅভ্যুত্থান চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর জুলুম ও নির্যাতনের অভিযোগে ১৫৪ জনকে শাস্তি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন, বাকৃবির ৫৭ জন শিক্ষক, ২৪ জন কর্মকর্তা, ২১ জন কর্মচারী এবং ৩১ জন শিক্ষার্থী।

আরো পড়ুন:

যৌন হয়রানির অভিযোগে বেরোবি শিক্ষক রশীদুল বরখাস্ত

বিসিএসে সার্কুলারে নেই আরবি বিভাগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

এছাড়াও ২০২২ সালে ২৩ ডিসেম্বর আশরাফুল হক হলে বিকেল ৫টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চারজন শিক্ষার্থীকে ছাত্রদল ও শিবির ট্যাগ দিয়ে অমানবিক শারীরিক নির্যাতনকারী ১৮ জন শিক্ষার্থী, দুইজন শিক্ষক ও একজন কর্মচারীকে শাস্তি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষকদের মধ্যে ছয়জনকে বরখাস্ত, ১২ জনকে অপসারণ, আটজনকে পদাবনমন এবং ৩১ জনকে তিরস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের মধ্যে আটজনকে বহিষ্কার, আটজনকে অপসারণ, সাতজনকে তিরস্কার এবং একজনকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মচারীদের মধ্যে দুইজনকে বরখাস্ত এবং ১৯ জনকে তিরস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাতজনকে আজীবন বহিষ্কার এবং ২৪ জনের সনদপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আশরাফুল হক হলে ছাত্রদল ও শিবির ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় তিনজন শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার এবং ১৫ জনের সনদপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও একজন শিক্ষককে নিম্নপদে অবনমন, একজনকে বেতন বৃদ্ধি স্থগিত এবং একজন কর্মকর্তাকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত ৪ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বাকৃবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ বহিরাগতদের নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ‘শান্তি মিছিল’ নামে একটি সন্ত্রাসী মিছিল আয়োজন করে। এ মিছিলে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ এবং ‘ঘরে ঘরে খবর দে, এক দফার কবর দে’—এ ধরনের উসকানিমূলক ও সহিংস স্লোগান দিয়ে তারা খুনি ও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার জুলুম, নির্যাতন ও গণহত্যার পক্ষে প্রচারণা চালায়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এ সময় নিরীহ ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর হামলা চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নজিরবিহীন ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়, যা শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করে এবং চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এছাড়া ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-শিক্ষকদের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। তাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চিহ্নিত করে শাস্তি প্রদান করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ.

কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “তদন্ত কমিটি বিভিন্ন আলোচনা, সাক্ষাৎকার, তথ্যের ভিত্তিতে শাস্তি সুপারিশ করেছে এবং সেগুলোকে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ মে সিন্ডিকেট সভায় এই শাস্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী সভায় পরিসমর্থন হয়েছে।”

তিনি বলেন, “তিনজন শিক্ষক তদন্ত কমিটি বৈধ নয় দাবি করে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। সে রিটগুলো গতকাল খারিজ হয়েছে। আজ থেকে তাদের শাস্তি সংক্রান্ত কাগজ বিলি হচ্ছে।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জন শ ক ষ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা

ভারতীয় সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী লক্ষ্মী মাঞ্চু। তার পরবর্তী সিনেমা ‘ঢাকসা’। এ সিনেমার মুক্তি উপলক্ষে নানা ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ৪৭ বছরের এই অভিনেত্রী। কয়েক দিন আগে গ্রেট অন্ধ্রকে সাক্ষাৎকার দেন লক্ষ্মী। এ আলাপচারিতার পোশাক নিয়ে প্রশ্ন করায় লক্ষ্মী বলেন— “আপনার এত সাহস হয় কী করে!” 

মুম্বাইয়ে যাওয়ার ফলে কি আপনার পোশাকের স্টাইলে কোনো প্রভাব পড়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে লক্ষ্মী বলেন, “আমি আমেরিকাতে থেকেছি। সেখান থেকে হায়দরাবাদে, এখন মুম্বাইয়ে আছি। আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি নিজেকে এইভাবে উপস্থাপন করার জন্য। এই পরিশ্রম আমাকে আত্মবিশ্বাসী করেছে, যা আমাকে আমার মতো পোশাক পরতে উৎসাহ দেয়।” 

এরপর সাংবাদিক সরাসরি লক্ষ্মীর পোশাক নিয়ে প্রশ্ন করেন, জবাবে এই অভিনেত্রী বলেন, “আপনি কি একজন পুরুষকে একই প্রশ্ন করতেন? আপনার এত সাহস হয় কী করে! আপনি কি মহেশ বাবুকে বলতেন—‘আপনার তো এখন ৫০ বছর বয়স, তাহলে আপনি কেন জামা খুলে ছবি তুলছেন?’ তাহলে একজন নারীকে কেন এই প্রশ্ন? মানুষ আপনার এই প্রশ্ন থেকে কী শিখবে? একজন সাংবাদিক হিসেবে আপনার দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।” 

পরে সাংবাদিক স্বীকার করেন যে, এই ধরনের প্রশ্ন একজন অভিনেতাকে করতেন না। প্রশ্নটি করার কারণ ব্যাখ্যা করে সাংবাদিক জানান, তার পোশাক নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের চর্চা চলছে, যার কারণে এই প্রশ্ন সামনে নিয়ে আসা। 

লক্ষ্মী মাঞ্চুর অন্য পরিচয় তিনি তেলেগু সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা মোহন বাবুর কন্যা। ৫০ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন মোহন বাবু। ব্যক্তিগত জীবনে বিদ্যা দেবীর সঙ্গে ঘর বাঁধেন তিনি। এ সংসারে রয়েছে কন্যা লক্ষ্মী ও পুত্র বিষ্ণু মাঞ্চু। তারা দুজনেই অভিনয়শিল্পী।

তথ্যসূত্র: দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক অধ্যাপকের কাছেই অসহায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
  • চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী নির্বাচনে ব্যাডমিন্টন মার্কায় গনসংযোগে এগিয়ে মেরাজ
  • ফ্রান্সজুড়ে কৃচ্ছ্রতা বিরোধী বিক্ষোভ
  • চিমামান্দা এনগোজি আদিচির নারীবাদ
  • ভোররাতে রণক্ষেত্র: নরসিংদীতে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ৫
  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা