বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না : কাদের সিদ্দিকী
Published: 17th, August 2025 GMT
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আর শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ, শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন জয় বাংলা থাকবে, তত দিন বঙ্গবন্ধু থাকবে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের পিতা থাকবে।’
গতকাল শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের মাকড়াই এলাকায় মাকড়াই দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশে কাদের সিদ্দিকী এ কথাগুলো বলেন। ১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট ঘাটাইলের মাকড়াইয়ে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন কাদের সিদ্দিকী। সেই দিনের স্মরণে প্রতিবছর মাকড়াই দিবস পালন করা হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনাকে খুবই সম্মান করতাম। আপনাকে আমি অনেক বড় মানুষ ভেবেছি। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভেঙেছে আর আপনি দেখেছেন। আপনার এক বছরের শাসনে সেটি আর হৃদয় থেকে নিতে পারছি না। আপনাকে আবার আমি অনুরোধ করছি, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করতে না পারলে শেখ হাসিনার চাইতে আপনার পরিণতি ১০ গুণ খারাপ হবে।’ তিনি এর বিচার চেয়ে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যারা ভেঙেছে, মনে রাখবেন তাদেরও বাড়িঘর রয়েছে। তাদেরও কবর রয়েছে, তাদেরও স্মৃতিসৌধ রয়েছে। তাদের কবর হাতে নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। বাড়িঘর হাতে নিয়ে যেতে পারবেন না। তাই সীমা অতিক্রম করবেন না।’
গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনার গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে সেদিন সরকারসহ দেশের অসংখ্য মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিল। আমি কাদের সিদ্দিকী তখন আপনার পাশে না দাঁড়ালে অর্ধেক গ্রামীণ ব্যাংক মাটির নিচে চলে যেত।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে ভেবেচিন্তে কথা বলার আহ্বান জানান কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘কে একজন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা নন। বঙ্গবন্ধু যদি জাতির পিতা না হন, তাহলে আপনার পিতা কে? কোনো সন্তানের পিতা না থাকলে সে সন্তান সম্মানী সন্তান হয় না, সে সন্তান কুলাঙ্গার হয়। শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছেন। আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সমর্থন করি। কারণ, শেখ হাসিনার পতন আল্লাহ তরফ থেকে হয়েছে। অন্যায়ের জন্য হয়েছে। আপনাদের মুরোদে শেখ হাসিনার পতন হয় নাই। জনগণ রাস্তায় নেমেছিল বলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু আপনারা যদি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অন্যায় করতে যান, আমি কাদের সিদ্দিকী বেঁচে থাকতে তা হতে দেব না। আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনার বিচার করুন। তাঁকে শাস্তি দিন, মাথা পেতে নেব।’
সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের লাঞ্ছনার বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় যাঁরা জুতার মালা দিয়েছেন, আমি সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যেকের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেব ইনশা আল্লাহ। যাঁরা জুতার মালা দিয়েছেন। জুতার চেয়ে নিম্নমানের কিছু আছে কি না, তা লক্ষ মানুষের সামনে আপনাদের পরিয়ে দেব। বাংলাদেশ নিয়ে মশকরা করবেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে মশকরা করবেন না। বাংলাদেশ খেলার পুতুল না। যাঁরা ভাবছেন, তুমি কে আমি কে রাজাকার, রাজাকার। মনে রাখবেন, দুই দিন আগে আর পরে বাংলাদেশে কোনো রাজাকারের ঠাঁই নাই।’
অনুষ্ঠানে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হকের (বীর প্রতীক) সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির দেন সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এ ছাড়া ঘাটাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এমদাদুল হক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন, হুমায়ুন বাংগাল, ঘাটাইল উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ খ হ স ন র পতন করব ন ন সন ত ন আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না : কাদের সিদ্দিকী
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আর শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ, শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন জয় বাংলা থাকবে, তত দিন বঙ্গবন্ধু থাকবে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের পিতা থাকবে।’
গতকাল শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের মাকড়াই এলাকায় মাকড়াই দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশে কাদের সিদ্দিকী এ কথাগুলো বলেন। ১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট ঘাটাইলের মাকড়াইয়ে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন কাদের সিদ্দিকী। সেই দিনের স্মরণে প্রতিবছর মাকড়াই দিবস পালন করা হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনাকে খুবই সম্মান করতাম। আপনাকে আমি অনেক বড় মানুষ ভেবেছি। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভেঙেছে আর আপনি দেখেছেন। আপনার এক বছরের শাসনে সেটি আর হৃদয় থেকে নিতে পারছি না। আপনাকে আবার আমি অনুরোধ করছি, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করতে না পারলে শেখ হাসিনার চাইতে আপনার পরিণতি ১০ গুণ খারাপ হবে।’ তিনি এর বিচার চেয়ে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যারা ভেঙেছে, মনে রাখবেন তাদেরও বাড়িঘর রয়েছে। তাদেরও কবর রয়েছে, তাদেরও স্মৃতিসৌধ রয়েছে। তাদের কবর হাতে নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। বাড়িঘর হাতে নিয়ে যেতে পারবেন না। তাই সীমা অতিক্রম করবেন না।’
গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনার গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে সেদিন সরকারসহ দেশের অসংখ্য মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিল। আমি কাদের সিদ্দিকী তখন আপনার পাশে না দাঁড়ালে অর্ধেক গ্রামীণ ব্যাংক মাটির নিচে চলে যেত।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে ভেবেচিন্তে কথা বলার আহ্বান জানান কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘কে একজন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা নন। বঙ্গবন্ধু যদি জাতির পিতা না হন, তাহলে আপনার পিতা কে? কোনো সন্তানের পিতা না থাকলে সে সন্তান সম্মানী সন্তান হয় না, সে সন্তান কুলাঙ্গার হয়। শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছেন। আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সমর্থন করি। কারণ, শেখ হাসিনার পতন আল্লাহ তরফ থেকে হয়েছে। অন্যায়ের জন্য হয়েছে। আপনাদের মুরোদে শেখ হাসিনার পতন হয় নাই। জনগণ রাস্তায় নেমেছিল বলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু আপনারা যদি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অন্যায় করতে যান, আমি কাদের সিদ্দিকী বেঁচে থাকতে তা হতে দেব না। আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনার বিচার করুন। তাঁকে শাস্তি দিন, মাথা পেতে নেব।’
সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের লাঞ্ছনার বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় যাঁরা জুতার মালা দিয়েছেন, আমি সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যেকের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেব ইনশা আল্লাহ। যাঁরা জুতার মালা দিয়েছেন। জুতার চেয়ে নিম্নমানের কিছু আছে কি না, তা লক্ষ মানুষের সামনে আপনাদের পরিয়ে দেব। বাংলাদেশ নিয়ে মশকরা করবেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে মশকরা করবেন না। বাংলাদেশ খেলার পুতুল না। যাঁরা ভাবছেন, তুমি কে আমি কে রাজাকার, রাজাকার। মনে রাখবেন, দুই দিন আগে আর পরে বাংলাদেশে কোনো রাজাকারের ঠাঁই নাই।’
অনুষ্ঠানে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হকের (বীর প্রতীক) সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির দেন সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এ ছাড়া ঘাটাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এমদাদুল হক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন, হুমায়ুন বাংগাল, ঘাটাইল উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।