ভারতীয় ক্রিকেটের রাজপুত্র সৌরভ গাঙ্গুলী ফের নিজের ঘরেই ফিরছেন। ছয় বছর আগে যেখান থেকে ক্রিকেট প্রশাসনে পা রাখেন, সেই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিএবি) শীর্ষ পদে আবার দেখা যাবে তাকে। সাবেক এই অধিনায়ক চলতি বছরই সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। এমনটাই নিশ্চিত করেছেন তিনি নিজেই।

‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌরভ বলেন, ‘‘তিনি এবারের সিএবি নির্বাচনে সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেবেন। এমনকি সংগঠনের ভেতরে থেকে জানা গেছে, কোনো নির্বাচন ছাড়াই সর্বসম্মতিক্রমে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করার চিন্তা চলছে। বর্তমান সভাপতি, সৌরভের ভাই স্নেহাশীষ গাঙ্গুলীর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় পদটি শূন্য হচ্ছে। ফলে দীর্ঘ ছয় বছর পর আবার বেঙ্গল ক্রিকেটের হাল ধরতে চলেছেন সৌরভ।

আগামী ১৪ আগস্ট সিএবির অ্যাপেক্স কাউন্সিলের চূড়ান্ত সভা এবং ২০ সেপ্টেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যেই সৌরভের নাম ঘিরে তৈরি হয়েছে আলোচনার ঝড়। প্রশাসনের অভিজ্ঞতা তো আছেই, সঙ্গে রয়েছে তার অতীত সফল নেতৃত্বের নজিরও।

আরো পড়ুন:

সৌরভের বায়োপিক: রাজকুমার বললেন, নার্ভাস লাগছে

দুর্ঘটনার কবলে সৌরভ গাঙ্গুলির গাড়ি বহর 

২০১৫ সালে প্রথমে সিএবির সচিব, এরপর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সৌরভ। তার হাত ধরেই বেঙ্গল ক্রিকেটে আসে পেশাদারিত্বের ছোঁয়া। উন্নত কোচিং স্ট্রাকচার, ট্যালেন্ট হান্ট, রঞ্জি ট্রফিতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স; সব কিছুতেই ছিল তার প্রত্যক্ষ নজরদারি। এরপর ২০১৯ সালে তিনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)-এর সভাপতি হন এবং দেশীয় ক্রিকেটকে পৌঁছে দেন নতুন উচ্চতায়।

বিসিসিআইয়ের সভাপতি হিসেবে সৌরভের মেয়াদকালে ভারত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ একটি ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমি (এনসিএ) পায়, যেখানে তরুণ ও চোটপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের উন্নত প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। তার নেতৃত্বেই আইপিএলের সম্প্রচার চুক্তি হয় ইতিহাস গড়া। যেখানে ২০২৩-২০২৭ মেয়াদে বিসিসিআই রাজস্ব পেয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

আবার যখন তিনি সিএবিতে ফিরছেন, প্রশ্ন উঠছে—বেঙ্গল ক্রিকেট কী নতুন করে জাগরণ দেখবে? সম্ভাবনার দরজা যেমন উন্মুক্ত, তেমনি প্রত্যাশার চাপও কম নয়। তবে যাকে ঘিরে এত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু, সেই সৌরভের ওপর আস্থা রাখতেই চাইছে ক্রিকেট মহল।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ঙ গল

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম চেম্বারে ‘পরিবারতন্ত্র’ পুনর্বহালের অভিযোগ

চট্টগ্রাম চেম্বারের আসন্ন পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে অতীতের ফ্যাসিবাদী পরিবারতন্ত্র পুনর্বহালের অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন চেম্বারের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এস এম নুরুল হক। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। গতকাল বুধবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের আব্দুল খালেক মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে চট্টগ্রামের সচেতন ব্যবসায়ী সমাজ ও ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট অ্যান্ড বিজনেসম্যান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (আইবিডব্লিউএফ)।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ব্যবসায়ী সমাজের আহ্বায়ক এস এম নুরুল হক, আইবিডব্লিউএফের সেক্রেটারি শাহজাহান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ নন প্যাকার্স ফ্রোজেন ফিশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি মাহবুব রানা প্রমুখ। এতে বক্তারা বলেন, টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপ সদস্যদের পুনর্বহাল করে; অতীতে চেম্বারকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সংগঠন হিসেবে ব্যবহারকারীদের সঙ্গে যোগসাজশে একটি চক্র আবারও সংগঠনটি দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এস এম নুরুল হক বলেন, প্রাথমিক ভোটার তালিকা থেকে টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপ সদস্যদের বাদ পড়ার পরও বানোয়াট কাগজপত্র দিয়ে আপিল করে আপিল বোর্ডকে অনেকটা বাধ্য করেছেন তাদের ভোটার করতে। আর এ কাজে সক্রিয় রয়েছেন চেম্বারের একজন সাবেক সভাপতি। তিনি চেষ্টা করছেন যাতে এসব সদস্যকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

উল্লেখ্য, আগামী ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে চেম্বারের নির্বাচন। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম বিতরণ। গতকাল বুধবার পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন আগ্রহী ১৬ জন প্রার্থী। এ বছর চেম্বারের মোট ভোটার ৬ হাজার ৭৮০। এর মধ্যে সাধারণ সদস্য ৪ হাজার ১ জন, সহযোগী সদস্য ২ হাজার ৭৬৪ জন, ট্রেড গ্রুপ প্রতিনিধি ১০ এবং টাউন অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধি ৫ জন।

মূলত টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপ প্রতিনিধি নিয়ে সাবেক সভাপতি এম এ লতিফের সময় থেকে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ চেম্বারে ২০০৮-০৯ মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই চেম্বারে তাঁর একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়। চেম্বারে সর্বশেষ সরাসরি ভোট হয়েছিল ২০১৩ সালে। ওই নির্বাচনে এম এ লতিফ সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়। এরপর এক দশকের বেশি সময় বিনা ভোটে চট্টগ্রাম চেম্বার লতিফের পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনদের দখলে ছিল।

নিয়ম অনুযায়ী, চট্টগ্রাম চেম্বারের ২৪ সদস্যবিশিষ্ট পরিচালনা পর্ষদের ১২ জন পরিচালক সাধারণ সদস্যদের ভোটে, ৬ জন সহযোগী সদস্যদের ভোটে, ৩ জন টাউন অ্যাসোসিয়েশন থেকে ও ৩ জন পরিচালক ট্রেড গ্রুপ থেকে নির্বাচিত হন। ব্যবসায়ীদের এক পক্ষের দাবি টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপ থেকে বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এম এ লতিফ ও তাঁর ছেলেও ট্রেড গ্রুপ থেকেই চেম্বারের নেতৃত্বে এসেছিলেন।

গত বছরের আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার। তার আগে চেম্বারের বেশির ভাগ পরিচালক পদত্যাগ করেন। শুরুতে চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক করা হয় তৎকালীন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশাকে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত বছর প্রশাসক নিয়োগের পর টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপকে বাদ দেওয়ার জন্য সে বছরের ডিসেম্বরে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন এস এম নুরুল হক। চলতি বছরের ২০ আগস্ট তাঁদের ভোট প্রদানে সুযোগ না দিতে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ। এরপর চারটি টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও চারটি ট্রেড গ্রুপকে অকার্যকর ঘোষণা করা হয়। সেগুলো হলো পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং চট্টগ্রাম ক্ষুদ্র পাদুকা শিল্প মালিক গ্রুপ, চট্টগ্রাম টায়ার টিউব ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স গ্রুপ, চিটাগাং ডাইজ অ্যান্ড কেমিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার গ্রুপ ও চিটাগাং মিল্ক ফুড ইমপোর্টার্স গ্রুপ।

এই দুই শ্রেণিকে বাদ দেওয়ার পর ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ অভিযোগ করে, যে আটটি সংগঠনকে অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে, সেটি কিসের ভিত্তিতে, তার কোনো ব্যাখ্যা নেই। তাই এই দুই গ্রুপকে বাদ দেওয়া ঠিক হয়নি। এ কারণে গ্রুপ দুটিকে অন্তর্ভুক্ত করার আপিল করা হয়।

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক ও চেম্বারের নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোয়ারা বেগম বলেন, গ্রুপ দুটি আপিল বোর্ডে আবেদন করেছে, যাচাই-বাছাই শেষে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এখন ফাইনালের স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ
  • লোকসানে বগুড়ার ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’ বন্ধ 
  • সুপার ফোরে একাধিক বাড়তি ‘সুবিধা’ পাবে ভারত
  • হাত না মেলানো, বর্জনের হুমকি আর ম্যাচ রেফারির ক্ষমাপ্রার্থনা—এরপর সামনে কী
  • ‎১০ জনের কিংস ৪ গোলে উড়িয়ে দিল মোহামেডানকে
  • সে দিন ৪ মিনিট আগে খবর পেয়েছিলেন পাইক্রফট, এরপর দুবাইয়ে যা ঘটেছিল
  • ২৫ বছর পর সেই বেনফিকাতে ফিরলেন মরিনিও
  • নবীর ব্যাটে শ্রীলঙ্কাকে চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দিল আফগানিস্তান
  • সত্যি কি ‘মণিহার’ বন্ধ হচ্ছে
  • চট্টগ্রাম চেম্বারে ‘পরিবারতন্ত্র’ পুনর্বহালের অভিযোগ