চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছে একটি লরি। এই দুর্ঘটনায় লরিচালকের সহকারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের সুফিয়া রাস্তার মাথা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার প্রায় চার ঘণ্টা পর নিহত ব্যক্তির ছিন্নভিন্ন লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ।

নিহত ব্যক্তির নাম মো.

সাব্বির হোসেন (২০)। তিনি চট্টগ্রাম নগরের উত্তর হালিশহর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মিয়াজের বাড়ি এলাকার আলী আব্বাসের ছেলে। দুর্ঘটনায় লরিচালক মো. জুয়েলও (২৮) আহত হয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা, ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, আজ ভোরে মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের পাশে একটি ট্রাক থামিয়ে নষ্ট চাকা মেরামত করছিলেন চালক ও তাঁর সহকারী। তখন পেছন থেকে আসা দ্রুতগতির একটি লরি ট্রাকটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রাকটি ছিটকে সড়কের বাইরে একটি দোকানের ওপর আছড়ে পড়ে। ভোরে দোকান বন্ধ থাকায় তাতে কেউ হতাহত হননি। তবে এই দুর্ঘটনায় লরির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে আটকে পড়ে চালকের সহকারী মারা যান। তাঁর শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় লরিচালককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানতে চাইলে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহমদ হোসেন বলেন, দুর্ঘটনায় লরিচালকের সহকারীর শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে আটকে থাকায় মৃতদেহ উদ্ধার করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। নগর থেকে বড় ক্রেন এনে চার ঘণ্টার চেষ্টায় লাশ উদ্ধার করে হাইওয়ে পুলিশকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক বোরহান উদ্দিন আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন থানায় এসেছেন। আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নিহত ব্যক্তির লাশ তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি উদ্ধার হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আজ শুভ মহালয়া

‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা, নমস্ত্যসৈ নমস্ত্যসৈ নমস্ত্যসৈ নমঃ নমঃ’- শ্রীচণ্ডীর এ শ্লোক উচ্চারণের মধ্যে দিয়ে আজ শুরু হলো শুভ মহালয়া। আজ থেকেই শুরু হলো দুর্গোৎসবের ক্ষণগণনা। 

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরের আলো ফুটে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পিতৃপক্ষের সমাপ্তি ঘটিয়ে সূচনা হলো দেবীপক্ষের। চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে মর্ত্যে দেবী দুর্গাকে আহ্বান জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

দুর্গাপূজায় প্রতিটি মণ্ডপে বিএনপির পাহারা থাকবে: দুলু

ছোট চুলের ট্রেন্ডি ‘হেয়ার কাট’

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত আজ থেকেই শারদীয় দুর্গোৎসবের আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এই দিনটি সারা দেশে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে। মহালয়া উপলক্ষে মন্দির ও পূজা কমিটিগুলো নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

মহালয়ার ছয় দিন পর আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শ্রী শ্রী দুর্গাষষ্ঠী। এর মাধ্যমেই মূলত আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্গাপূজা শুরু হবে। সেদিন দেবী দুর্গার ষষ্ঠাদি কল্পনারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা হবে। সেই সঙ্গে হবে দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাস। দুর্গোৎসবে ২৯ সেপ্টেম্বর হবে মহাসপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর মহাঅষ্টমী, ১ অক্টোবর মহানবমী এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমী।

শাস্ত্রমতে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া। এদিন আরো কিছু ধর্মীয় রীতি পালিত হতে দেখা যায়। এর মধ্যে অন্যতম হলো মৃত পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা। গঙ্গাতীরে দেখা যায় এমন আয়োজন। এ ছাড়া মন্দিরে মন্দিরে বেজে ওঠে শঙ্খধ্বনি। পুরোহিতদের শান্ত, অবিচল গম্ভীর কণ্ঠে শোনা যায় চণ্ডীপাঠ। এই মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে দেবতারা দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। তারা সমস্বরে দেবীকে আহ্বান জানান পৃথিবীর ঘোর অন্ধকার দূরীভূত করে মঙ্গল প্রতিষ্ঠায়। মহালয়ার সময় ঘোর অমাবস্যা থাকে। মহাতেজের আলোয় সেই অমাবস্যা দূর হয়। প্রতিষ্ঠা পায় শুভশক্তি।

দেবী দুর্গা দুর্গতিনাশিনী। হিন্দু সম্প্রদায় তাকে মহাশক্তির একটি রূপ মনে করেন। দেবী দুর্গার অনেকগুলি হাত। তার অষ্টাদশভূজা, ষোড়শভূজা, দশভূজা, অষ্টভূজা ও চতুর্ভূজা মূর্তিও দেখা যায়। তবে দশভূজা রূপটিই বেশি জনপ্রিয়। হিন্দুধর্মে দেবী দুর্গা পরমা প্রকৃতি ও সৃষ্টির আদি কারণ। হিন্দু পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে তিনি শিবের স্ত্রী পার্বতী, কার্তিক ও গণেশের জননী এবং কালীর অন্যরূপ।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সারা দেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীর ২৫৮টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গত বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপ ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। আর ঢাকা মহানগর এলাকায় গত বছর ২৫২টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা হয়েছিল।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ