অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রের অঙ্গগুলোর মধ্যে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স (ভারসাম্য) নিশ্চিত করেছে। কেননা, সুপ্রিম কোর্টের সম্মতি ছাড়া আইন মন্ত্রণালয় কোনো বিচারককে বদলি করতে পারে না।

সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানিতে গতকাল বৃহস্পতিবার অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা বলেন।

বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ–সংক্রান্ত শুনানি চলছে। গতকাল শুনানি নিয়ে আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য ১১ আগস্ট তারিখ নির্ধারণ করেছেন।

সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বিচার বিভাগকে মহিমান্বিত ও সমৃদ্ধ করেছে বলে শুনানিতে উল্লেখ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো.

আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রের অঙ্গগুলোর মধ্যে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স নিশ্চিত করা হয়েছে। ১৯৭২ সালের পর তথাকথিত গণতান্ত্রিক সরকার বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করে রেখেছিল। পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে এর অবসান ঘটে।

বর্তমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার-কর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলা বিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি তা প্রয়োগ করে থাকেন। সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ, ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ২৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাত আইনজীবী রিট করেন।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত বছরের ২৭ অক্টোবর রুল দেন। রুলে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং এ–সংক্রান্ত ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় কেন প্রতিষ্ঠা করা হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয় রুলে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অগ্রগতি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

এরপর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৪ জানুয়ারি রুলের শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। একই বেঞ্চ গত ২৯ জানুয়ারি এ মামলায় অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূইয়াকে মনোনীত করেন। এ বেঞ্চে রুল শুনানি ও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। এর মধ্যে গত ২৫ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। পরে প্রধান বিচারপতি বিষয়টি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি আহমেদ সোহেলের নেতৃত্বাধীন বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে দেন। বিচারপতি আহমেদ সোহেলের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে গত ২৩ এপ্রিল রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব চ রপত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

৯৯ চার, ১২ ছক্কা আর ৭৮১ রানের রেকর্ডময় ম্যাচ

ম্যাচটা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। হেরেছে ভারত। ব্যবধান ৪৩ রানের।

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে গতকাল রাতে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার নারী ক্রিকেট দল যে ওয়ানডে ম্যাচটি খেলেছে, তা স্রেফ জয়-পরাজয়ের ম্যাচ নয়। নিখাদ ব্যাটিং বিনোদনের ম্যাচ। যে ম্যাচে ভেঙেছে নারী ক্রিকেটের বহু রেকর্ড, দেখা গেছে দুর্দান্ত সব কীর্তির।

৭৮১

৪৭.৫ ওভার ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া করেছে ৪১২ রান। তাড়া করতে নেমে ভারত ৪৭ ওভারে অলআউট হয়েছে ৩৬৯ রানে। সব মিলিয়ে ম্যাচে রান হয়েছে ৭৮১। যা নারী ওয়ানডেতে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৭ সালে ব্রিস্টলে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে উঠেছিল ৬৭৮ রান।

৪১২

মেয়েদের ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ ইনিংস এটি। তবে একক নয়, যৌথভাবে। ১৯৯৭ বিশ্বকাপে ডেনমার্কের বিপক্ষে ৪১২ রান করেছিল অস্ট্রেলিয়া, যে ম্যাচে ছেলে-মেয়ে মিলিয়েই ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছিলেন বেলিন্ডা ক্লার্ক।

বলে রাখা ভালো, নারী ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস নিউজিল্যান্ডের ৪৯১। যা দলটি করেছিল ২০১৮ সালে ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।

চার শ হজম

নারী ওয়ানডেতে এই প্রথম চার শ রান হজম করল ভারত। আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩৭১ রান।

৩৬৯

রান তাড়ায় সব দল মিলিয়ে ভারতের ৩৬৯ রানই এখন সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ দক্ষিণ আফ্রিকার, গত বছর বেঙ্গালুরুতে ভারতের ৩২৫ রানের জবাবে তারা থামে ৩২১ রানে।

বাউন্ডারির সেঞ্চুরি

দুই দল মিলিয়ে মোট ৯৯টি চার ও ১২টি ছক্কা হয়েছে ম্যাচে—মোট ১১১টি। মেয়েদের ওয়ানডেতে বাউন্ডারির সেঞ্চুরি এই প্রথম। এর আগে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ বাউন্ডারি ছিল ৯১টি। ২০১৭ সালে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটিতেই চার হয়েছিল ৮৩টি, ছক্কা ৮টি। সর্বোচ্চ চার, ছক্কায় এত দিন সামনে ছিল আট বছর আগের ম্যাচটি।

মান্ধানার রেকর্ড

৫০ বলে সেঞ্চুরি করেছেন ভারতের স্মৃতি মান্ধানা। ছেলে-মেয়ে মিলিয়েই ওয়ানডেতে ভারতের দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি। নারী ওয়ানডে ইতিহাসের যা দ্বিতীয় দ্রুততম। ৪৫ বলে সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি মেগ ল্যানিংয়ের, ২০১২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।

১৩

স্মৃতি মান্ধানার সেঞ্চুরিটি তাঁর ক্যারিয়ারের ১৩তম। সবই উদ্বোধন করতে নেমে। ইনিংস ওপেন করতে নেমে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি এখন এই ভারতীয় ব্যাটারের। নিউজিল্যান্ডের সুজি বেটস ও ইংল্যান্ডের ট্যামি বাউমন্ট ১২টি করে সেঞ্চুরি করেছেন ওপেনার হিসেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৯৯ চার, ১২ ছক্কা আর ৭৮১ রানের রেকর্ডময় ম্যাচ