১১৬ অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রের অঙ্গগুলোর মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করেছে : শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল
Published: 8th, August 2025 GMT
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রের অঙ্গগুলোর মধ্যে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স (ভারসাম্য) নিশ্চিত করেছে। কেননা, সুপ্রিম কোর্টের সম্মতি ছাড়া আইন মন্ত্রণালয় কোনো বিচারককে বদলি করতে পারে না।
সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানিতে গতকাল বৃহস্পতিবার অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা বলেন।
বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ–সংক্রান্ত শুনানি চলছে। গতকাল শুনানি নিয়ে আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য ১১ আগস্ট তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বিচার বিভাগকে মহিমান্বিত ও সমৃদ্ধ করেছে বলে শুনানিতে উল্লেখ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
বর্তমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার-কর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলা বিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি তা প্রয়োগ করে থাকেন। সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ, ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ২৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাত আইনজীবী রিট করেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত বছরের ২৭ অক্টোবর রুল দেন। রুলে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং এ–সংক্রান্ত ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় কেন প্রতিষ্ঠা করা হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয় রুলে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অগ্রগতি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
এরপর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৪ জানুয়ারি রুলের শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। একই বেঞ্চ গত ২৯ জানুয়ারি এ মামলায় অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূইয়াকে মনোনীত করেন। এ বেঞ্চে রুল শুনানি ও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। এর মধ্যে গত ২৫ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। পরে প্রধান বিচারপতি বিষয়টি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি আহমেদ সোহেলের নেতৃত্বাধীন বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে দেন। বিচারপতি আহমেদ সোহেলের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে গত ২৩ এপ্রিল রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জয়পুরহাট-২ আসন আক্কেলপুরে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ২
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা ও দলীয় প্রার্থী আবদুল বারীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গোলাম মোস্তফার দুই সমর্থক আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আক্কেলপুর পৌর শহরের পৃথক দুটি স্থানে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল-আক্কেলপুর) আসনে সাবেক সচিব আবদুল বারীকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর এই আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফার কর্মী-সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা আবদুল বারীর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে দুই দিন ধরে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরা আজ বৃহস্পতিবার আক্কেলপুর পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সকাল ১০টার পর উপজেলা পরিষদ চত্বরে জড়ো হতে থাকেন তাঁরা। বেলা সাড়ে ১১টায় গোলাম মোস্তফার কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ মিছিল করার কথা ছিল। এর আগেই আবদুল বারীর পক্ষের নেতা-কর্মীরা সেখানে যান। তাঁরা তাঁদের প্রার্থীর পক্ষে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাঁরা গোলাম মোস্তফার কর্মী-সমর্থকদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করেন। এরপর গোলাম মোস্তফার কর্মী-সমর্থকেরা শহরের নবাবগঞ্জ সেতুর পূর্ব পাশে গিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় গোলাম মোস্তফার পক্ষের আপেল মাহমুদ ও আইয়ুব আলী আহত হন।
গোলাম মোস্তফার সমর্থক আপেল মাহমুদ বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর মাঠে থেকে বিএনপির জন্য রাজপথে গোলাম মোস্তফা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। আমরা অনেক জুলুম–নির্যাতন সহ্য করেছি। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, এবার আমাদের নেতা মনোনয়ন পাবেন। কিন্তু তাঁকে বঞ্চিত করে একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদে আজ বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ বারী সাহেবের কর্মী-সমর্থকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আরিফ ইফতেখার বলেন, ‘আজ হঠাৎ করে ধানের শীষের প্রার্থীর বিপক্ষে কয়েকজন বিক্ষোভ করার চেষ্টা করছিলেন। আমরা তাঁদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিয়েছি। আমরা সবাই ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ আছি।’
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।