এনসিপি নেতাকে ‘প্রস্তুত হ রাজাকার’ চিরকুটের সঙ্গে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হুমকি
Published: 10th, August 2025 GMT
রাজশাহীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতার বাড়ির সামনে ‘প্রস্তুত হ রাজাকার’ লেখা একটি চিরকুটের সঙ্গে কাফনের কাপড় ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার রাতে জেলার মোহনপুর উপজেলার ধুরইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ওই নেতার নাম খালিদ হাসান ওরফে মিলু। তিনি এনসিপির রাজশাহী জেলা সমন্বয় কমিটির সদস্য এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক। জেলার মোহনপুর উপজেলার ধুরইল গ্রামে তাঁর বাড়ি।
চিরকুটে লেখা ছিল, ‘প্রস্তুত হ রাজাকার। বাপ-মায়ের দোয়া নে। তোদের দিন শেষ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’ ওই রাতে খালিদ হাসানের বাড়িতে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করা হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এনসিপি নেতা খালিদ হাসান জানান, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বাড়িতে যান। এরপর ঘরের মধ্যে বসে ছিলেন। হঠাৎ জানালার পাশ দিয়ে অপরিচিত একজন বলেন, ‘বাইরে বের হয়ে দেখ।’ এরপর তিনি বারান্দায় গিয়ে দেখেন, টিনের সঙ্গে থাকা কাঠের আড়ায় আগুন জ্বলছে। এ সময় তিনি পেট্রলের গন্ধ পান।
খালিদ হাসান বলেন, এ ঘটনার পর তিনি বাড়ি থেকে বের না হয়ে প্রতিবেশীদের ডাকেন। ধুরইল বাজারের নৈশপ্রহরীও আসেন। ইতিমধ্যে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এরপর তিনি বাড়ি থেকে বের হলে সামনে একটি পলিথিন দেখতে পান। পলিথিনে কী আছে না জেনে তাঁরা সেটিতে হাত দেননি। পুলিশ আসার পর সেটি দেখে। তখন ভেতরে একটি কাফনের কাপড় ও চিরকুট পাওয়া যায়। পরে চিরকুট ও কাফনের কাপড়টি পুলিশ নিয়ে যায়।
খালিদ হাসান বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে বাড়ি ভেজা অবস্থায় আছে। এ জন্য পেট্রল ঢাললেও আগুন ছড়িয়ে পড়েনি। যেটুকু আগুন লেগেছিল, সেটা আমরা নিভিয়ে ফেলতে পেরেছিলাম। এখন এমন হুমকি পাওয়ায় আমি উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত। চিরকুটে জয় বাংলা লেখা আছে। তাতে বোঝা যায়, কারা করেছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করব।’
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘রাত পৌনে ১২টার দিকে খবর পেয়েই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আমি খালিদ হাসানকে অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পাওয়ার পর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।’
এনসিপির রাজশাহী জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী নাহিদুল ইসলাম আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, আপাতত থানায় একটি জিডি করা হবে। তারপর পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ রক ট ন বল ন এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
জিম্বাবুয়েতে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের যুবারা, ৯৫ রানের পর ৫ উইকেট রিজানের
রিজানের বলে বায়ান্দা মায়োলা আউট হতেই নিশ্চিত হলো জয়। উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ছুটলেন রিজানের দিকে—সেঞ্চুরি হারানোর আক্ষেপে পোড়া রিজানই যে জয়ের নায়ক। ব্যাট হাতে দলের বিপদের সময় দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন ঢাল হয়ে, বল হাতেও পেস বোলিংয়ে তিনি পেয়েছেন ৫ উইকেট। তাতে জিম্বাবুয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ৩৩ রানে হারিয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল হয়েছে চ্যাম্পিয়ন।
অথচ আজ ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েই শুরুটা ভালো ছিল না বাংলাদেশের যুবাদের। হারারেতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৬৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। কালাম সিদ্দিকির সঙ্গী হয়ে দলের হাল এরপরপরই ধরেন রিজান। তাঁদের জুটিতেই নতুন করে আশা দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে ১১৭ রানের জুটি গড়েন দুজন।
৭৬ বলে ৬৫ রান করে আউট হয়ে যান কালাম। তবে রিজান ছুটতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে। শেষ পর্যন্ত তা তিনি পাননি, ফিরেছেন রানআউট হয়ে তাঁর সঙ্গী হয় রান আউটের দুর্ভাগ্য। ৪৮তম ওভারে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে ৯৬ বলে ৯৫ রানে রানআউট হন রিজান।
এরপর ২৯ বলে ৩৮ রান করা আবদুল্লাহ ও ৮ বলে ১৩ রান করা সামিউন বাসীর শেষ ১৫ বলে যোগ করেন ২৪ রান।
বড় রান তাড়ায় দুর্দান্ত একটা শুরু পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার যুবারাও। তাঁদের ৫৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন আল ফাহাদ। ৩১ বলে ৪০ রান করা আদনান লাগাদিয়েনকে ফেরান তিনি। আরেক ওপেনার ইউরিখ ফন শালকবভিকও ২২ বলে ১৯ রান করে আউট হন তাঁর বলেই।
দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পরও দক্ষিণ আফ্রিকাকে কক্ষপথে রেখেছিলেন মোহাম্মদ বুলবুলিয়া ও জেসন রোলেস। তাঁদের ৪৫ রানের জুটি ভাঙেন রিজান। ৪৩ বলে ৩১ রান করে আউট হন বুলবুলিয়া, ৩৫ রানের বেশি করতে পারেননি রোলেসও।
এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকার যুবারা। শেষদিকে এমবাথার ২৯ আর সোনির ৩৪ কেবল ব্যবধানই কমিয়েছে। ফাইনাল জয়ের আনন্দে মেতেছে বাংলাদেশের যুবারা। আর তাতে ব্যাটে-বলে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে নায়ক রিজান। রাতটা নিশ্চিতভাবেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে তাঁর জন্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৫০ ওভারে ২৬৯/৫ (রিজান ৯৫, কালাম ৬৫, আবদুল্লাহ ৩৮; এমবাথা ২/৫০, মায়োলা ১/৪১)
দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল : ৪৮.৪ ওভারে ২৩৬ (লাগাদিয়েন ৪০, রোলেস ৩৫, বুলবুলিয়া ৩১, সোনি ৩৪, এমবাথা ২৯; রিজান ৫/৩৪, ফাহাদ ৩/৫০, স্বাধীন ২/৩৪)
ফল: বাংলাদেশ অ–১৯ দল ৩৩ রানে জয়ী।