ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে শহীদের মায়ের বুকে সন্তানকে ফেরত দিতে হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
Published: 12th, August 2025 GMT
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তীব্র বিরোধিতা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। সংস্কার ও নতুন সংবিধান ছাড়া এই নির্বাচন হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের মায়েদের বুকে তাঁদের সন্তানদের ফেরত দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে জাতীয় যুব শক্তি আয়োজিত ‘জাতীয় যুব সম্মেলন ২০২৫’-এ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান সময়ে ইলেকশনের ডেট ঘোষণা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না। যদি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হয়, আমার যে ভাইয়েরা শহীদ হয়েছিল, রক্ত দিয়েছিল সংস্কারের জন্য, একটি নতুন সংবিধানের জন্য, তাহলে কবরে গিয়ে তার লাশটা ফেরত দিতে হবে এই সরকারকে।’
একই সংস্কৃতির ডামাডোলে, একই ‘ফ্যাসিবাদী’ সংবিধানে, একই সিস্টেমের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যাওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘তাহলে এতগুলো মানুষ শহীদ হওয়ার প্রয়োজন কী ছিল? এতগুলো মানুষ আহত হওয়ার প্রয়োজন কী ছিল?’
সংস্কার শেষ না করে নির্বাচন হলে গণ-অভ্যুত্থানে যাদের হাত চলে গেছে, সরকারকে তাদের হাত ফিরিয়ে দিতে হবে বলে দাবি করেন নাসীরুদ্দীন। তিনি বলেন, ‘যে মায়ের বুক খালি হয়েছিল, যদি সংস্কার ছাড়া, নতুন সংবিধান ছাড়া বাংলাদেশে নির্বাচন হয়, তাহলে ওই মায়ের বুকের সন্তানকে ফেরত দিতে হবে। অনেক বাচ্চাকে দেখেছি, এখনো বুকের দুধ পান করে কিন্তু বাবা শহীদ হয়েছে। যখন সে পরিবারের সাথে কথা বলেছি, তাদের মুখের ভাষা পাইনি, শুধু চোখের ভাষা পেয়েছি। চোখের ভাষাটি ছিল অশ্রু। যে অশ্রুতে তারা বলেছিল, স্বামী চলে গিয়েছে আমি বাংলাদেশ থেকে কিছু চাই না। কিন্তু আমি ভবিষ্যতে একটি সুন্দর বাংলাদেশ দেখতে চাই। যেখানে আমার বুকে যে সন্তান আছে, সে সন্তানকে আর কেউ খুন করবে না।’
গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের চরিত্র হননের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে গণ-অভ্যুত্থানের যাঁরা নেতৃবৃন্দ রয়েছেন এক লাখ টাকা-পাঁচ লাখ টাকা, বিভিন্নভাবে এমনভাবে ক্যারেক্টারাইজেশন করা হচ্ছে, মনে হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তাঁরা ক্রিমিনাল (অপরাধী)। এসব ফাইজলামি বন্ধ করতে হবে।’
গোয়েন্দা সংস্থার সমালোচনা করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘একটা গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশের ডিজিএফআই। আপনার আমার পকেটের টাকায় চলাফেরা করে। তারা কত টাকা খরচ করে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারবে না। তাদের কোনো কোথাও দায়বদ্ধতা নাই, অ্যাকাউন্টিবিলিটি (জবাবদিহি) নাই, ট্রান্সপারেন্সি নাই, তাদের একটাই কাজ—মানুষকে ভীতি প্রদর্শন করে যে কিছু বলবি আয়নাঘরে নিয়ে আসব। আরে আয়নাঘর তো আমরা ভেঙে দিয়েছি। সামনে যদি আয়নাঘর প্রচেষ্টা করা হয়, আমরা সে আয়নাঘর কেন ডিজিএফআইয়ের হেডকোয়ার্টার ভেঙে দিব।’
যথেষ্ট সহ্য করেছেন উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি ডিজিএফআই থাকতে হয়, অবশ্যই এটা সংস্কার করতে হবে। যদি সংস্কার করতে না পারেন, ট্যাক্সের টাকা নিয়ে যদি গুলি তাক করেন, বাংলাদেশের মানুষের ১৮ কোটি মানুষ এখনো ঘুমায় নাই। কয়টা অস্ত্র তাক করবেন? কয়জনকে মারবেন? মৃত্যু মেনে নিয়েছি। মৃত্যু হয়ে গিয়েছে। এখন যতবার মারবেন, ততবার আমাদের পুনর্জন্ম হবে আবু সাঈদ হয়ে। আসুন মারুন।’
গত বছর গণ-অভুত্থানে ৫ তারিখে ছাত্রদের হাতে ছাত্রদের নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণভবনের পতন হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘আরেকটা ফ্যাসিবাদের কারখানা রয়ে গিয়েছে এখনো। ছাত্রশক্তি থেকে, পাঠচক্র থেকে, জনগণকে নেতৃত্ব দিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য করেছিল। সেই ছাত্রশক্তির ইতিহাস কি আপনাদের মনে আছে? আরেকটা ভবন আছে সেটা হলো বঙ্গভবন। এটার পতন আপনাদের হাত ধরেই হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ন স র দ দ ন প টওয় র কর ন ন স র দ দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা
দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটির তৃতীয় দিন শুক্রবার (৩ অক্টোবর) পর্যটকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা। ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতের তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর বন, শুটকি পল্লী, ঝাউবাগান, গঙ্গামতি, চর গঙ্গামতি ও লাল কাঁকড়ার চড়ে এখন পর্যটকদের সরব উপস্থিতি। তাদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াড়িতে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। তাদের অনেকে সমুদ্রের ঢেউয়ে গা ভিজিয়ে এবং ওয়াটর বাইকে চড়ে আনন্দ করছেন। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। পর্যটকদের কেউ কেউ মোটরসাইকেল কিংবা ঘোড়ায় চরে বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখছিলেন। সব মিলিয়ে সৈকতের উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
আরো পড়ুন:
চার দিনের ছুটিতে কক্সবাজার রুটে চলবে ‘ট্যুরিস্ট স্পেশাল’ ট্রেন
১ অক্টোবর থেকেই কেওক্রাডং যেতে পারবেন পর্যটকরা, মানতে হবে ৬ নির্দেশনা
পাবনা থেকে আসা হোসেন শহীদ ও সোনিয়া দম্পতি জানান, পূজা ও সরকারি ছুটি থাকায় তারা কুয়াকাটায় এসেছেন। সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করেছেন তারা। এই দম্পতির অভিযোগ, হোটেল ভাড়া কিছুটা বেশি রাখা হয়েছে।
বরিশালের কাউনিয়া থেকে আসা সম্রাট বলেন, “কয়েকটি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছি। বৃহস্পিতবার বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে লাল কাকড়ার চড়, গঙ্গামতি ও লেম্বুর বন ঘুরেছি। দারুন এক অনুভূতি হয়েছে।”
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “পর্যটকদের নিরপত্তা নিশ্চিতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য মোতায়েন রয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ