ভরা মৌসুমেও বাড়ছে ইলিশ মাছের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে মাছ কম পাওয়া ও রপ্তানির কারণে গত সপ্তাহের তুলনায় ইলিশের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নিউ মার্কেট হাজারীবাগসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। 

বাজারে এখন ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। একই ওজনের ইলিশ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। ৫০০ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৪০০ টাকা। ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে।

বেড়েছে অন্যান্য মাছের দাম
সরবরাহ কম থাকায় এ সপ্তাহে অন্যান্য মাছের দামও বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। প্রতি কেজি চাষের পাঙ্গাস ২১০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, মাঝারি আকারের কৈ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, দেশি শিং ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় আকারের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দামও বাড়তি
সরবরাহ কম থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম গড়ে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন বাজারে দেশি শশা ৭০ টাকা, বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, দেশি গাজর ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, মুলা ৭০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, সিম ১৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৮০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৭০ টাকা এবং জালি কুমড়া ও লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কমেছে চালের দাম, মুদি পণ্য উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল
বিক্রেতারা জানিয়েছেন গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি চালের দাম কমেছে ১ থেকে ২ টাকা। এখন বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৭৮ টাকায়, মাঝারি মানের ব্রি-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকায়। পাইজামের দাম এখন ৫৮ থেকে ৬০ টাকা প্রতি কেজি। স্বর্ণা ও গুটি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা কেজি দরে।

দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা এবং দেশি আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কমেছে মুরগির দাম
এ সপ্তাহে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালি জাতের মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায়, গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।

যা বলছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা
রাজধানীর হাজারীবাগ কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী খায়রুল ইসলাম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, ইলিশ এখন বিলাসী পণ্য। আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে ভরা মৌসুমেও ইলিশ কেনা সম্ভব হচ্ছে না। দাম শুনে চলে যাচ্ছি। এখন আবার বলছে, রপ্তানির জন্য নাকি দাম বেড়েছে। 

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, এবছর মনে হয় আর ইলিশ খাওয়া আর হবে না। কারণ, আগামী মাসে আবার ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে সরকার। এখন ইলিশ শুধু নামেই জাতীয় মাছ। এটা এখন ধনীদের মাছ বলতে পারেন।

রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আশা করছি, আগামী মাসে বাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করলে দাম কমবে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সবজ র দ ম ৬০ ট ক ৮০ ট ক ৭০ ট ক ম রগ র

এছাড়াও পড়ুন:

বাঁচতে চান কুবি শিক্ষার্থী প্রভা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাসমানিয়া রহমান প্রভা ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। গত ২ মাস আগে এ মরণব্যাধী সনাক্ত হওয়ার পর থেকেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মেধাবী এই শিক্ষার্থীর আকস্মিক অসুস্থতায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবারে।

প্রভা চাঁদপুরের বাগাদী এলাকার বাসিন্দা। গত ২৬ অক্টোবর থেকে তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ইতোমধ্যে তার চিকিৎসায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে। বর্তমানে পরিবারের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় বহন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

আরো পড়ুন:

‘প্রভোস্টের ছাত্রী’র ত্রাসে কাঁপছে জবির হল

৩ দাবিতে আবারো রাস্তায় রুয়েট শিক্ষার্থীরা

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রভার উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে এতে আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার প্রয়োজন, যা প্রভার পরিবারের নাগালের বাইরে।

প্রভার মা মোছাম্মৎ হাওয়া আক্তার বলেন, “প্রভার এডমিশনের সময় থেকে তার প্রতি মাসে জ্বর আসত। আমরা ভাবছি, মানুষের স্বাভাবিক যে জ্বর হয় সেটা। কিন্তু পরে দেখছি জ্বর কমে না। তখনো আমরা বুঝতে পারিনি এত বড় রোগ হবে। এরপর যখন ডাক্তার দেখালে বুঝতে পারি প্রভা ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত।”

তিনি আরো বলেন, “প্রভা খুবই মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। সে দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছিল। বাড়ির কাছে হওয়াতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় প্রভা। কিন্তু ভর্তির পর এক সপ্তাহও ক্লাস করতে পারেনি সে। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন। আর যতটুকু পারেন সহযোগিতা করবেন।”

সিএসই সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল বলেন, “আমাদের বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী তাসমানিয়া রহমান প্রভা, ভার্সিটি জীবনের প্রথম সেমিস্টারেই এক জটিল ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে। চিকিৎসার ব্যয় অনেক বেশি। প্রভা ও তার পরিবার এই মুহূর্তে আমাদের সাহায্যের অপেক্ষায় আছে। আমি সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি- চলুন, আমরা সবাই মিলে প্রভার পাশে দাঁড়াই।”

সহযোগিতার মাধ্যম: বিকাশ- ০১৬২২৯৪৮৮৫৪ (প্রভার বাবা) এবং মো. শামীম, অ্যাকাউন্ট নম্বর- ২০৫০০১৯৬৭০০১৮৯৮১৬, ইসলামী ব্যাংক, বোরহানউদ্দিন, ভোলা।

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ