জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শালবন গ্রামে নিখোঁজের দুই দিন পর এক শিশুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তৃতীয় শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর নাম তাসনিয়া খাতুন (১০)। গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে প্রতিবেশীর বাড়ির গোয়ালঘর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত লোকজন প্রতিবেশীর বাড়ি ঘেরাও করে দুই নারীকে অবরুদ্ধ রাখেন। তাঁরা অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। রাত সাড়ে নয়টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ সেখান থেকে দুই নারীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশে পচন ধরায় চেহারা অনেকটা বিকৃত হয়ে গেছে। শিশুর গলায় রক্তের দাগ আছে। গলা কেটে, নাকি শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বশত্রুতার জেরে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার সন্ধ্যার আগে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় তাসনিয়া। পরিবারের লোকজন আশপাশের পুকুর ও ঝোপে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাননি। বৃহস্পতিবার শিশুটির বাবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। গতকাল সন্ধ্যার পর প্রতিবেশী একরামুল হোসেনের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে গ্রামের লোকজন সেখানে যান। একরামুল তখন দ্রুত বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

পরে গোয়ালঘরে একটি বস্তায় তাসনিয়ার লাশ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত লোকজন একরামুলের বাড়ি ঘেরাও করে রাখেন এবং পুলিশকে খবর দেন। রাত আটটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

প্রতিবেশী কয়েকজনের ভাষ্য, তাসনিয়ার শরীরে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার ছিল। মুক্তিপণ ও স্বর্ণালংকারের জন্য একরামুল ও তাঁর সহযোগীরা শিশুটিকে হত্যা করেছেন বলে তাঁদের ধারণা।

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেন, প্রাথমিকভাবে পূর্বশত্রুতার জেরে শিশুটি খুন হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অন্য কারণও থাকতে পারে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: একর ম ল উদ ধ র ত সন য় ল কজন

এছাড়াও পড়ুন:

পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন

বঙ্গোপসাগরে পুণ্যস্নান ও পূজার মধ্য দিয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় শেষ হয়েছে রাস উৎসব। বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সমুদ্রে নেমে স্নান সম্পন্ন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সৈকত সংলগ্ন শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমে ১৭ জোড়া যুগল প্রতিমা দর্শন করেন তারা। 

এর আগে, মোমবাতি, আগরবাতি, ফুল, ফল, দুর্বা, হরতকি, ডাব, কলা, তেল ও সিঁদুর সমুদ্রের জলে অর্পণ করেন তারা। লক্ষাধিক নারী-পুরুষের উপস্থিতি এবং উলুধ্বনি ও মন্ত্রপাঠে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সৈকত এলাকা। অনেকে প্রায়শ্চিত্ত ও পূর্ব পুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় পিন্ডদানের পাশাপাশি মাথা ন্যাড়া করেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা সৈকতে স্নানের আগে ঢাকা-ঢোলের তালে হরিনাম জপে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন।

আরো পড়ুন:

বাউফলে খেলার মাঠে মেলা বন্ধের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ

লালন মেলায় ৭৮ মোবাইল ফোন চুরি

রাসপূজা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলেও এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দিরে পাঁচ দিনব্যাপী চলবে মেলা। 

রাস উৎসবে অংশ নিকে আসা পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর ছিল পুলিশ, নৌ-পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। 

পিরোজপুরের নাজিরপুর থেকে আসা পুণ্যার্থী মুক্তা রানী বলেন, “প্রতিবছরের মতো এবারো আমরা রাস পূজা উপলক্ষে কুয়াকাটায় এসেছি। রাতভর ধর্মীয় সঙ্গীতানুষ্ঠান উপভোগ  করেছি। সকালে পুণ্যের আশায় স্নান করেছি এবং কৃষ্ণের কাছে মনোবাসনা ব্যক্ত করেছি।” 

ঢাকার কাকরাইল এলাকা থেকে আসা অর্চনা রানী বলেন, “জাগতিক পাপ মোচনের আশায় স্নান করেছি। পৃথিবীর সব জীবের জন্য শান্তি কামনা করেছি। এখানে হাজার হাজার মানুষ এসেছেন। সবাই খুব ভোরে স্নান করেছেন। এর আগে, মন্দিরসহ পুরো সৈকত এলাকায় সব ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপভোগ করেছি।”

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়ন ছিলেন। সবার সহযোগিতায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হয়েছে।” 

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ