উঁচু এক ঢিবি। তার ওপরে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল এক বটগাছ। ছায়াঘেরা, বয়সে প্রবীণ। কিন্তু একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, এই বটগাছের বুক ফুঁড়ে মাঝখান থেকে সোজা উঠে গেছে একটি খেজুরগাছ। সম্প্রতি খুলনার কয়রা উপজেলার আমাদী গ্রামে দেখা মেলে এমন দৃশ্যের।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, প্রথমে এখানে ছিল একটি একাকী খেজুরগাছ। অনেক বছর আগে হয়তো কোনো পাখি এসে এই খেজুরগাছের ডালে বসে বটফল খেয়ে তার বীজ ফেলে গিয়েছিল। বীজটি আটকে ছিল খেজুরগাছের বুকে। তারপর সেখানেই জন্ম নেয় বটগাছের চারা। সময়ের সঙ্গে খেজুরগাছটিকে আঁকড়ে ধরে বেড়ে উঠতে থাকে বটগাছ। একসময় তার শিকড় ছড়িয়ে পড়ে নিচের মাটিতে আর ডালপালা মেলে দেয় আকাশের দিকে। এখন সেই বটগাছই যেন প্রধান চরিত্র আর খেজুরগাছটি তার মধ্যে মিশে থাকা এক সুপ্ত সঙ্গী। আমাদী গ্রামের লোকজন গাছটিকে ভালোবেসে ‘জোড়া গাছ’ নামে ডাকেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, ‘এই গাছ আমার শৈশব থেকে দেখছি। আগে ছিল শুধু খেজুরগাছ। তারপর একদিন খেয়াল করলাম, খেজুরগাছের কাণ্ডে একটি নতুন গাছ জন্মেছে। সময়ের সঙ্গে বটগাছ বড় হতে থাকল। এখন তো খেজুরগাছটি শুধু ওপরে গিয়ে দেখা যায়, নিচ থেকে দেখলে বোঝাই যায় না। ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে আশপাশের বড় সব গাছ উপড়ে গিয়েছিল। তারপরই জন্ম নেয় এই খেজুরগাছ। পরে জন্মায় বটগাছ। এই গাছ দেখতে অনেকেই আসেন।’

জোড়া গাছটির অবস্থান একটি পুরোনো ঢিবির ওপর। ইতিহাস অনুসারে, প্রায় ৫৫০ বছর আগে খানজাহান আলী (রহ.

)–এর বিশ্বস্ত সহচর বোরহান খাঁ ওরফে বুড়া খাঁ ও তাঁর ছেলে ফতে খাঁ আমাদী গ্রামে বসতি স্থাপন করেছিলেন। গ্রামের প্রবীণেরা বলেন, ঢিবিটি ছিল বুড়া খাঁর বসতভিটা। ঢিবির চারপাশে এখনো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পুরোনো আমলের ইট-পাথরের টুকরা, যা প্রাচীন সেই বসতির স্মৃতি বহন করছে।

বট-খেজুরের জোড়া গাছ। খুলনার কয়রা উপজেলার আমাদী গ্রামে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: খ জ রগ ছ বটগ ছ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্তে গাজীপুরে উদীচীর প্রতিবাদ কর্মসূচি

প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক পদ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও পদটি পুনর্বহালের দাবিতে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় কর্মসূচি পালন করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার সত্যেন সেন সংগীত একাডেমির সামনে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী গাজীপুর ও কাপাসিয়া শাখার অর্ধশতাধিক শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মী এ কর্মসূচি পালন করেন।

উদীচীর গাজীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত শিশুদের মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের বিরুদ্ধে অবস্থান। সৌদি আরবে যেখানে হাজার হাজার নারী শিক্ষককে সংগীতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, সেখানে আমরা উল্টো পথে হাঁটছি। এটি জাতির জন্য লজ্জাজনক।

অদৃশ্য কোনো কারণে পদগুলো বাতিল করা হয়েছে দাবি করে উদীচী কাপাসিয়া শাখার সভাপতি নুরুল আমীন সিকদার বলেন, সংস্কৃতি ও শিক্ষা একে অপরের পরিপূরক। আমরা চাই, প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন করে প্রশিক্ষিত সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কাপাসিয়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিক ফকির বলেন, এটি শুধু শিক্ষক বাতিলের বিষয় নয়, সংস্কৃতিবিরোধী সিদ্ধান্ত। এখনই সবাইকে একত্রে প্রতিবাদে নামতে হবে।

সমাবেশ শেষে সত্যেন সেন সংগীত একাডেমির শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুপ্রেরণামূলক গান ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে...’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ