পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গত সপ্তাহে রিয়াদে যখন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলিঙ্গন করেন, তখন এর প্রতীকী তাৎপর্য ছিল সুস্পষ্ট।

এই আলিঙ্গন হয়েছিল ‘কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’ স্বাক্ষরের পর, যা মুসলিম বিশ্বের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রকে উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী রাজতন্ত্রের আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।

চুক্তি স্বাক্ষরের পর সৌদি আরবের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই চুক্তি ‘দীর্ঘদিনের ও গভীর সহযোগিতার একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ’মাত্র। তবে ভারতের অনেকে বিষয়টিকে ভিন্নভাবে দেখছেন।

রিয়াদের সঙ্গে দিল্লির উষ্ণ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই এ চুক্তি হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে গত মে মাসে চার দিনের সংক্ষিপ্ত তবে ভয়াবহ সংঘাত হয়েছিল।

পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান অতীতেও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একাধিক যুদ্ধ ও সংঘাতে জড়িয়েছে। তাই পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে সৌদি আরবের যেকোনো ধরনের সমর্থনের উদ্যোগ ভারতে সরাসরি উদ্বেগ তৈরি করতে পারে।

ভারতীয় বিশ্লেষকদের সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে ফেলেছে যে বিষয়টি, সেটি হচ্ছে—চুক্তিতে বলা হয়েছে, ‘দুই দেশের যেকোনো একটির ওপর আগ্রাসনকে উভয়ের ওপর আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করা হবে।’

ভারতীয় বিশ্লেষক ব্রহ্ম চেলানি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, রিয়াদ জানত, সৌদি-পাকিস্তান চুক্তিকে ভারত তার নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখবে, তবু তারা এটি করেছে।

ব্রহ্ম চেলানি লিখেছেন, ‘এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের শক্তিকে প্রতিফলিত করে না। দেশটি দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। বরং এই চুক্তি সৌদি আরবের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকেই তুলে ধরেছে।’

এই ভারতীয় বিশ্লেষক যুক্তি দেন, একজন ‘চিরকাল নির্ভরশীল’ অংশীদারকে চুক্তিতে আবদ্ধ করার মাধ্যমে রিয়াদ জনশক্তি ও পারমাণবিক ‘বিমা’—দুই-ই পাচ্ছে। একই সঙ্গে দিল্লি, ওয়াশিংটনসহ অন্যদের দেখিয়ে দিচ্ছে, তারা নিজেদের পথ নিজেরাই তৈরি করবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী গত এপ্রিলে রিয়াদ সফর করেন। এ সময় সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দেখা যাচ্ছে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আরব র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্তে গাজীপুরে উদীচীর প্রতিবাদ কর্মসূচি

প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক পদ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও পদটি পুনর্বহালের দাবিতে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় কর্মসূচি পালন করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার সত্যেন সেন সংগীত একাডেমির সামনে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী গাজীপুর ও কাপাসিয়া শাখার অর্ধশতাধিক শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মী এ কর্মসূচি পালন করেন।

উদীচীর গাজীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত শিশুদের মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের বিরুদ্ধে অবস্থান। সৌদি আরবে যেখানে হাজার হাজার নারী শিক্ষককে সংগীতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, সেখানে আমরা উল্টো পথে হাঁটছি। এটি জাতির জন্য লজ্জাজনক।

অদৃশ্য কোনো কারণে পদগুলো বাতিল করা হয়েছে দাবি করে উদীচী কাপাসিয়া শাখার সভাপতি নুরুল আমীন সিকদার বলেন, সংস্কৃতি ও শিক্ষা একে অপরের পরিপূরক। আমরা চাই, প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন করে প্রশিক্ষিত সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কাপাসিয়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিক ফকির বলেন, এটি শুধু শিক্ষক বাতিলের বিষয় নয়, সংস্কৃতিবিরোধী সিদ্ধান্ত। এখনই সবাইকে একত্রে প্রতিবাদে নামতে হবে।

সমাবেশ শেষে সত্যেন সেন সংগীত একাডেমির শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুপ্রেরণামূলক গান ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে...’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ