আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জোর প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেছেন, ‘আগামী বছর রমজানের আগে, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন করার জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, আমরা জোরেশোরে নিচ্ছি।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।

নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণের বিষয়ে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, সব খেলোয়াড় (নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দল) যদি এই ফাউল (নিয়মবহির্ভূত কাজ) করার নিয়তে মাঠে নামে, তাহলে রেফারির (ইসি) পক্ষে তো এই ম্যাচ পণ্ড হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব না। সুতরাং খেলোয়াড়দের তো ফাউল করার নিয়ত থেকে একটু দূরে থাকতে হবে।

এ প্রসঙ্গে সিইসি আরও বলেন, ‘আমাকে কেউ এ পর্যন্ত বলেন নাই যে আমি ফাউল খেলার নিয়তে ইলেকশনে যাব, ইলেকশনে ভোট ডাকাতি করব, সন্ত্রাস করব—এমন কেউ, কোনো রাজনীতিবিদ বলেন নাই।’

দেশের স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হবে, এমন আশাবাদ জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আল্টিমেটলি দেখবেন যে ইন গ্রেটার ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট (জাতির বৃহত্তর স্বার্থে) একটা জায়গায় ওনাদের (রাজনৈতিক দল) আসতে হবে। ওনারা আসবেনও হয়তো।’

নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সবার জন্য সমান সুযোগ) ইসি নিশ্চিত করবে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘সর্বশক্তি নিয়োগ করব। আপনারা (সাংবাদিকেরা) আজকে (বৃহস্পতিবার) দেখেছেন বোধ হয় আমাদের মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, এক লক্ষ আর্মি মাঠে থাকবে।’

শাপলা প্রতীক প্রসঙ্গ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দলীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা চাওয়ার বিষয়ে সিইসি নাসির উদ্দীন বলেন, নাগরিক ঐক্যও শাপলা প্রতীক চেয়েছিল। তাদেরও দেওয়া হয়নি। ইসি সচিব এ ব্যাপারে ব্রিফ করেছেন। এ নিয়ে আর কোনো বক্তব্য তিনি দিতে চান না।

গত বুধবার নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। সেখানে শাপলা প্রতীক নেই।

শাপলা প্রতীক নাগরিক ঐক্য কিংবা এনসিপি কেউ পাচ্ছে না, এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘সেটা তো বলি নাই আমি।’

শাপলা প্রতীক না দেওয়া হলে কীভাবে নির্বাচন হবে—এনসিপির এক নেতার এমন মন্তব্যে ইসি কোনো হুমকি অনুভব করছে কি না, এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘এটা হুমকি মনে করি না। কারণ, ওনারা তো দেশদ্রোহী না, ওনারা দেশপ্রেমিক। ওনারাও দেশের মঙ্গল চান। দেশের ভালো চান এবং যে ধরনের কর্মকাণ্ড করলে দেশের মঙ্গল হবে, সেটা ওনারা বোঝেন। আমি এটাকে কোনো দেশের জন্য হুমকি মনে করি না।’

জাতীয় পার্টি নিয়ে ‘কনফিউজড’ ইসি

ইসির আসন্ন সংলাপে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে রাখা হবে কি না, সেখানে জাতীয় পার্টিও থাকবে কি না, এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘সেটা সময় আসুক। দেখি। আমরা শুরু তো করি নাই।’

এরপর সিইসির কাছে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণের বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকেরা। জবাবে তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির পাঁচটা পাইছি ভাই, আমি। আপনারা কটা পাইছেন জানি না।’

এ প্রসঙ্গে সিইসি আরও বলেন, ‘জাতীয় পার্টি বললে আমি একটু কনফিউজড (বিভ্রান্ত) হই। কারণ, ওখানে অন্তত হাফ ডজনের মতো হবে এবং লাঙ্গলের দাবিদারও একাধিক, এ জন্য আমি বুঝতে পারতেছি না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ বিশ্বকাপ: ৩২ দল নিশ্চিত, টিকিট পাওয়ার অপেক্ষায় ১৬

২০২৬ বিশ্বকাপকে ঘিরে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো- এই তিন দেশে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে বসছে ফুটবলের ২৩তম মহাযজ্ঞ। ইতিহাসে এবারই প্রথম ৪৮ দল নিয়ে হতে যাচ্ছে টুর্নামেন্টের মূল পর্ব।

বাছাই পর্বের লড়াই শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বকাপের টিকিট পকেটে পুরে ফেলেছে ৩২ দল। বাকি ১৬ জায়গা এখনো খোলা। যেগুলোর মালিকানা নির্ধারণ হবে মার্চের প্লে-অফে। সবকিছু মিলিয়ে বিশ্বজুড়ে এখন চলছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচ, দাবায় উত্তেজনাপূর্ণ গাণিতিক হিসাব।

আরো পড়ুন:

পূর্ণ ২৪ পয়েন্ট ও কোনো গোল হজম না করেই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড

অদম্য স্পেন বিশ্বকাপের দোরগোড়ায়

ইউরোপে রোমাঞ্চ, ইতালির সামনে কঠিন পথ:
রবিবার ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে দুই বড় জয়ের মধ্য দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে নরওয়ে ও পর্তুগাল। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালিকে ৪-১ গোলে হারিয়ে নরওয়ে নিশ্চিত করেছে তাদের জায়গা। অন্যদিকে আর্মেনিয়ার জালে গোলের বন্যা বইয়ে ৯-১ ব্যবধানে বড় জয় তুলে নিয়ে টিকিট নিশ্চিত করেছে পর্তুগালও।

ইতোমধ্যে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া, পর্তুগাল ও নরওয়ে জায়গা পেয়ে গেলেও স্পেন, জার্মানি, বেলজিয়ামদের অপেক্ষা এখনো শেষ হয়নি। আর ইতালিকে যেতে হবে মহাদেশীয় প্লে-অফের কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে।

এশিয়া-আফ্রিকা-দক্ষিণ আমেরিকা: কোটা পূর্ণ
এশিয়া থেকে আটটি দল ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়ে গেছে- জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, সৌদি আরব, জর্ডান, কাতার, উজবেকিস্তান। আরেকটি সুযোগ আছে প্লে-অফে। যেখানে লড়বে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরাক।

দক্ষিণ আমেরিকা থেকেও নির্ধারিত ছয় দলের সবাই জায়গা পেয়ে গেছে- আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, উরুগুয়ে, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ে। বলিভিয়া অপেক্ষায় আছে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফের।

আফ্রিকা তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ৯ দলের কোটা পূরণ করেছে- আলজেরিয়া, আইভরি কোস্ট, মিশর, ঘানা, মরক্কো, তিউনিসিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেপ ভার্দে ও সেনেগাল। প্লে-অফে সুযোগ পেয়েছে কঙ্গো।

ওশেনিয়া ও কনকাকাফে শেষ লড়াই:
ওশেনিয়া অঞ্চলে নিশ্চিত হয়েছে নিউ জিল্যান্ড। নিউ ক্যালেডোনিয়া যাবে প্লে-অফে।

কনকাকাফে আয়োজক তিন দেশ- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো আগেই নিশ্চিত। বাকি তিন আসনের দৌড়ে এগিয়ে আছে সুরিনাম, কুরাসাও ও হন্ডুরাস। দু’টি দল পাবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ খেলার সুযোগ।

চূড়ান্ত প্লে-অফ: মার্চে ভাগ্য নির্ধারণ
মার্চ ২০২৬ অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের শেষ এবং সবচেয়ে নাটকীয় লড়াই- ইন্টারকন্টিনেন্টাল প্লে-অফ।

এখানের ৬ দলের মধ্য থেকে দুটি দল পাবে মূল পর্বের শেষ দুটি টিকিট।
অংশ নেবে—
১টি দল আফ্রিকা থেকে
১টি এশিয়া থেকে
২টি কনকাকাফ থেকে
১টি ওশেনিয়া থেকে
১টি দক্ষিণ আমেরিকা থেকে।

এই ম্যাচগুলো আয়োজক দেশের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে, টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি যাচাইয়ের অংশ হিসেবে।

৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের ড্র:
সব দল চূড়ান্ত হওয়ার পর ৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠান। এরপরই জানা যাবে কোন দল কোন গ্রুপে। আর কাদের বিপক্ষে শুরু হবে ফুটবলের পরবর্তী মহাযুদ্ধ। 

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ