কারাগারে ৭৫ শতাংশই বিচারাধীন মামলায় বন্দী হয়ে আছেন
Published: 25th, September 2025 GMT
বাংলাদেশে কারাগারে বন্দীদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই বিচারাধীন মামলায় বন্দী হয়ে আছেন। বিচার হলে হয়তো তাঁরা দুই থেকে তিন মাস কারাগারে থাকতেন। কারাগার মানেই মানুষকে শাস্তি দেওয়া। এ মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় এ কথা উঠে আসে। ‘জেনুইন রিফর্ম অর কসমেটিক শিফট’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বেসরকারি সংস্থা ডি–কেজ। ফৌজদারি আইনের আওতায় আসা মানুষের মানবাধিকারের বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলা ও লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সংস্থাটি কাজ করে।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো.
কারা মহাপরিদর্শক জানান, ‘কারেকশন সার্ভিসেস বাংলাদেশ’ নামে নতুন প্রস্তাবে কারাগারে ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বন্দী থাকার সমস্যা, অপরাধীর সংশোধনকে অগ্রাধিকার, বন্দীদের আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে আপিলের সুযোগ, উন্মুক্ত জেল ধারণা, পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বন্দী হলে অর্থনৈতিক কাজে যুক্ত রাখার প্রস্তাব (যাঁরা মজুরির ভিত্তিতে কাজ করবেন) প্রভৃতি বিষয় যুক্ত করা হচ্ছে।
গত এক বছরে নতুন করে ছয়টি কারাগার চালু করা হয়েছে জানিয়ে মোতাহের হোসেন বলেন, ‘কারাগার আইনে অনেকগুলো সমস্যা রয়েছে। আমরা এখনো ব্রিটিশ সময়ে প্রণীত আইন অনুযায়ী কারাগার পরিচালনা করছি। আধুনিক সময়ে এটা বেমানান।’
নতুন প্রস্তাবে বন্দীদের মজুরির ভিত্তিতে কাজের সুযোগ থাকছে জানিয়ে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ‘বর্তমান নিয়মে সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রতিদিন মাত্র দুই টাকা মজুরির ভিত্তিতে কাজ করতে হয়। এটা বাস্তবসম্মত নয়। নতুন প্রস্তাবে আমরা চেষ্টা করছি, যে প্রোডাক্টে বন্দী কাজ করবেন, সেটার প্রফিটের ৫০ পার্সেন্ট আমরা দেব। কারেকশন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফার্ম নামের একটা জিনিস অ্যাড করতে চাচ্ছি। যেখানে হয়তো পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের প্রোডাকশনেরে ইউনিট হবে। যেখানে বন্দীরা স্যালারির ভিত্তিতে কাজ করবে।’
বাংলাদেশে কারাবন্দীদের কোনো কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার নেই উল্লেখ করে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, এখনো সংখ্যার দিক থেকে বিচারাধীন বন্দীর সংখ্যা বেশি। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা বিচার ছাড়াই কারাগারে আটকে আছেন।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, কোনো বন্দীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অভিযোগ থাকলে তিনি জামিন পেলেও দেশের সব আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অনুমতি ব্যতীত ছাড়া পান না। এই প্রক্রিয়া কারাবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধি (সিপিসি), ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) কোথাও নেই। কিন্তু এটা অনেক বছর ধরে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আওয়ামী লীগের শাসনামলে এটা হয়েছে। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তথ্যের ভিত্তিতে জেলগেট থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া সাধারণ একটা ব্যাপার ছিল। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পরও এসব পরিস্থিতির খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।
অনুষ্ঠানের অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘কারাবন্দীদের আমিষের চাহিদা পূরণে এত দিন ৩৬ গ্রাম আমিষ দেওয়া হতো। বর্তমান সরকার এটাকে ৫৪ গ্রাম করেছে।’
সমাজে কারাবন্দীদের গ্রহণযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে, এমন ব্যবস্থাপনায় কারাগারকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক তৌহিদুল হক।
একসেস টু জাস্টিস ফর উইমেনের (জিআইজেড) উপদেষ্টা মোহাম্মদ শাহজাহান কোরেশি বলেন, বাংলাদেশের উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালত মিলে প্রায় ৪৫ লাখ মামলা অপেক্ষমাণ। এসব মামলার তালিকা নিয়ে কাজ করা জরুরি।
আইনজীবী জহিরুল ইসলাম মূসার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ সিদ্দিকী, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এরশাদুল বারী খন্দকার, সাংবাদিক জিয়া চৌধুরী প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন দ দ র প রস ত ব ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
আজ মুক্তি পাচ্ছে নতুন দুই সিনেমা, হলে আছে আরও ৭ সিনেমা
কুয়াকাটায় একদল ব্যাচেলর
করোনার সময় দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল মানুষ। বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে কুয়াকাটায় ঘুরতে যায় একদল ব্যাচেলর। সেখানে নারীদের একটি দলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়। তাদের কেন্দ্র করেই রোমান্টিক, কমেডি ও থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হয়েছে নাসিম সাহনিকের ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ।’
সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০২২ সালের শেষ দিকে। প্রথম লটে এক সপ্তাহের মতো শুটিং করার কথা থাকলেও বাজেটের সমস্যায় দুই দিন পর শুটিং টিমকে রেখেই ঢাকায় চলে গেছেন পরিচালক—এমন একটা অভিযোগ সে সময় এনেছিলেন সিনেমার নায়িকা শিরিন শিলা। পরে তিনি আরও জানান, নায়ক-নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া—সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়। সে সময় কলাকুশলীরা ধরেই নিয়েছিলেন, এ সিনেমার শুটিং আর হবে না। দ্বন্দ্ব মিটিয়ে পরের বছর শেষ হয় শুটিং। ডাবিং ও পোস্টের কাজ শেষ করতে লেগে যায় আরও এক বছর।
সিনেমায় জুটি হয়েছেন শিরিন শিলা ও কায়েস আরজু। ছবি: কায়েসের সৌজন্যে