নজর কেড়েছে অষ্টধাতুর প্রতিমা, হয় না বিসর্জনও
Published: 1st, October 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী বণিকবাড়িতে এবারো পূজায় আলাদা মাত্রা যোগ করেছে অষ্টধাতুর তৈরি দুর্গা প্রতিমা। প্রায় ৫২০ কেজি ওজনের এই প্রতিমা দেখতে ভিড় করছেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। মাটির প্রতিমার মতো এ প্রতিমার বিসর্জন দেওয়া হয় না। টানা সাত বছর ধরে একই প্রতিমাতে পূজা হয়ে আসছে এখানে।
ধামরাইয়ে শত বছরের ঐতিহ্য বহন করে আসছে বণিক পরিবার। তাদের পারিবারিক ব্যবসা মূলত তামা, কাঁসা ও পিতল শিল্পকে কেন্দ্র করে। সুকান্ত বণিকের হাত ধরে সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে তৈরি হয় অষ্টধাতুর দুর্গা প্রতিমা। এতে ব্যবহৃত হয়েছে তামা, কাঁসা, স্বর্ণ, রুপা, পারদ, দস্তা, রাংসহ আট ধরনের ধাতু। প্রায় এক বছরের প্রচেষ্টায় তৈরি এই প্রতিমার উচ্চতা ৮ ফুট। দেবী দুর্গার পাশাপাশি লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের মূর্তিও আছে এতে।
এ প্রতিমার বিশেষত্ব ও বণিক বাড়ির নান্দনিক কারুকার্য দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করেছে। পূজার পাঁচ দিন শুধু সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য বণিকবাড়ি ও পূজা মণ্ডপ উন্মুক্ত থাকায় ভিড় করছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।
আশুলিয়ার মাধবী চক্রবর্তী পরিবার নিয়ে এসেছিলেন এখানে। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রতি বছরই দুর্গা পূজায় ধামরাইয়ের বণিক বাড়িতে বেড়াতে আসি। এখানে মূলত পূজার পাঁচ দিন সবাই এই বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে। বাড়িটিতে রয়েছে নান্দনীক কারুকার্য, নটরাজসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর কাঁসা ও পিতলের প্রতিমা। বাড়িটির কারুকার্যও অনেকটা সুন্দর। তাই এখানে এসে অনেক ভালো লাগে।’’
গাজীপুর থেকে পরিবার নিয়ে আসা দর্শনার্থী সুমন বলেন, ‘‘ধামরাইয়ে বণিক বাড়ির প্রতিমাটি ব্যতিক্রম। এখানে দেবী দুর্গা, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীর প্রতিমা অষ্টধাতুর তৈরি এবং সেই প্রতিমা গুলো পূজা করা হয়। অন্যান্য প্রতিমা বিসর্জন হলেও এই মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় না। সব সময়ই মণ্ডপের দেবী দুর্গার প্রতিমা রাখা হয়।’’
ধামরাইয়ের বণিক বাড়ির প্রধান ও ধামরাই মেটাল ক্রাফটসের স্বত্বাধিকারী সুকান্ত বণিক বলেন, ‘‘বণিক পরিবারের দুর্গা পূজা হচ্ছে ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে। আগে দুর্গা পূজা হতো বাড়ির পাশে রাস্তার উপরে প্যান্ডেল করে। কিন্তু এখন বাড়ির ভেতরে নিয়ে এসেছি এবং অষ্টধাতুর তৈরি প্রতিমা দিয়ে এই পূজাটা করি।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের বণিক পরিবার ২০০ বছরের তামা কাঁসা শিল্পের সঙ্গে জড়িত। আমরা হাতি ঘোড়া ও বিগ্রহ তৈরি করে থাকি। আগে এক সময় আমাদের বাড়িতেও মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরি করে পূজা করা হতো। তবে বাড়িতে লোকবল কমে যাওয়ায় আগের মতো প্রতিমা তৈরি করে পূজা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তাই অষ্টধাতুর প্রতিমা তৈরি করে পূজা করছি।”
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ বিশ্বকাপ: ৩২ দল নিশ্চিত, টিকিট পাওয়ার অপেক্ষায় ১৬
২০২৬ বিশ্বকাপকে ঘিরে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো- এই তিন দেশে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে বসছে ফুটবলের ২৩তম মহাযজ্ঞ। ইতিহাসে এবারই প্রথম ৪৮ দল নিয়ে হতে যাচ্ছে টুর্নামেন্টের মূল পর্ব।
বাছাই পর্বের লড়াই শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বকাপের টিকিট পকেটে পুরে ফেলেছে ৩২ দল। বাকি ১৬ জায়গা এখনো খোলা। যেগুলোর মালিকানা নির্ধারণ হবে মার্চের প্লে-অফে। সবকিছু মিলিয়ে বিশ্বজুড়ে এখন চলছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচ, দাবায় উত্তেজনাপূর্ণ গাণিতিক হিসাব।
আরো পড়ুন:
পূর্ণ ২৪ পয়েন্ট ও কোনো গোল হজম না করেই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড
অদম্য স্পেন বিশ্বকাপের দোরগোড়ায়
ইউরোপে রোমাঞ্চ, ইতালির সামনে কঠিন পথ:
রবিবার ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে দুই বড় জয়ের মধ্য দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে নরওয়ে ও পর্তুগাল। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালিকে ৪-১ গোলে হারিয়ে নরওয়ে নিশ্চিত করেছে তাদের জায়গা। অন্যদিকে আর্মেনিয়ার জালে গোলের বন্যা বইয়ে ৯-১ ব্যবধানে বড় জয় তুলে নিয়ে টিকিট নিশ্চিত করেছে পর্তুগালও।
ইতোমধ্যে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া, পর্তুগাল ও নরওয়ে জায়গা পেয়ে গেলেও স্পেন, জার্মানি, বেলজিয়ামদের অপেক্ষা এখনো শেষ হয়নি। আর ইতালিকে যেতে হবে মহাদেশীয় প্লে-অফের কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে।
এশিয়া-আফ্রিকা-দক্ষিণ আমেরিকা: কোটা পূর্ণ
এশিয়া থেকে আটটি দল ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়ে গেছে- জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, সৌদি আরব, জর্ডান, কাতার, উজবেকিস্তান। আরেকটি সুযোগ আছে প্লে-অফে। যেখানে লড়বে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরাক।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকেও নির্ধারিত ছয় দলের সবাই জায়গা পেয়ে গেছে- আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, উরুগুয়ে, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ে। বলিভিয়া অপেক্ষায় আছে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফের।
আফ্রিকা তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ৯ দলের কোটা পূরণ করেছে- আলজেরিয়া, আইভরি কোস্ট, মিশর, ঘানা, মরক্কো, তিউনিসিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেপ ভার্দে ও সেনেগাল। প্লে-অফে সুযোগ পেয়েছে কঙ্গো।
ওশেনিয়া ও কনকাকাফে শেষ লড়াই:
ওশেনিয়া অঞ্চলে নিশ্চিত হয়েছে নিউ জিল্যান্ড। নিউ ক্যালেডোনিয়া যাবে প্লে-অফে।
কনকাকাফে আয়োজক তিন দেশ- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো আগেই নিশ্চিত। বাকি তিন আসনের দৌড়ে এগিয়ে আছে সুরিনাম, কুরাসাও ও হন্ডুরাস। দু’টি দল পাবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ খেলার সুযোগ।
চূড়ান্ত প্লে-অফ: মার্চে ভাগ্য নির্ধারণ
মার্চ ২০২৬ অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের শেষ এবং সবচেয়ে নাটকীয় লড়াই- ইন্টারকন্টিনেন্টাল প্লে-অফ।
এখানের ৬ দলের মধ্য থেকে দুটি দল পাবে মূল পর্বের শেষ দুটি টিকিট।
অংশ নেবে—
১টি দল আফ্রিকা থেকে
১টি এশিয়া থেকে
২টি কনকাকাফ থেকে
১টি ওশেনিয়া থেকে
১টি দক্ষিণ আমেরিকা থেকে।
এই ম্যাচগুলো আয়োজক দেশের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে, টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি যাচাইয়ের অংশ হিসেবে।
৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের ড্র:
সব দল চূড়ান্ত হওয়ার পর ৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠান। এরপরই জানা যাবে কোন দল কোন গ্রুপে। আর কাদের বিপক্ষে শুরু হবে ফুটবলের পরবর্তী মহাযুদ্ধ।
ঢাকা/আমিনুল