সেনাবাহিনীকে গাজায় ‘অভিযান থামাতে’ বলল ইসরায়েলি সরকার: আল-জাজিরা
Published: 4th, October 2025 GMT
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে ‘গাজা দখল করার জন্য চালানো অভিযান থামানোর’ নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে এবং সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘আর্মি রেডিও’ এ খবর প্রচার করেছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাবে হামাসের আংশিক রাজি হওয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর পর ইসরায়েল সরকার এ নির্দেশ দিল।
এ বিষয়ে আর্মি রেডিওর সংবাদকর্মী ডরোন কাদোস বলেন, ইসরায়েলের ‘রাজনৈতিক মহল’ গাজায় চলা সামরিক কার্যক্রম ‘সর্বনিম্ন’ পর্যায়ে নামিয়ে আনতে এবং শুধু ‘প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ নিতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুনহামাস প্রস্তাবে রাজি হওয়ায় ইসরায়েলকে গাজায় হামলা থামাতে বললেন ট্রাম্প ৩ ঘণ্টা আগেসামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে কাদোস বলেন, ‘এর বাস্তবিক অর্থ হলো: (গাজা সিটি) দখলের অভিযান বন্ধ রয়েছে এবং আপাতত এটা স্থগিত করা হয়েছে।’
আজ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর একটি বিবৃতি দিয়েছে। রয়টার্স বলছে, হামাস ট্রাম্পের প্রস্তাব মেনে সব জিম্মিকে ছেড়ে দিতে রাজি হওয়ার পর ইসরায়েলও পরিকল্পনাটির প্রথম পর্যায়ের ‘তাৎক্ষণিক বাস্তবায়নের’ প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল শুক্রবার হামাসকে তাঁর প্রস্তাব মেনে নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেন। তিনি বলেন, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রস্তাব মেনে নিতে হবে। নয়তো হামাসকে ‘নরক যন্ত্রণা ভোগ’ করতে হবে।
এর কয়েক ঘণ্টা পর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি এক বিবৃতিতে আংশিকভাবে প্রস্তাব মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে হামাস। প্রস্তাবের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত নিয়ে আরও আলোচনার দাবি জানিয়েছে তারা।
আরও পড়ুনহামাসকে রোববারের মধ্যে প্রস্তাব মানতে ট্রাম্পের হুমকি৫ ঘণ্টা আগেহামাসের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ট্রাম্প। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি স্থায়ী শান্তির জন্য প্রস্তুত বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এর আগে গত সোমবার গাজায় যুদ্ধ বন্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করে হোয়াইট হাউস। এরপর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও এতে সম্মতি জানান।
পরিকল্পনায় বলা হয়, গাজায় ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এর পাশাপাশি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ২০ জন জীবিত জিম্মিকে ফিরিয়ে দিতে হবে। মৃত জিম্মিদের দেহাবশেষ হস্তান্তর করতে হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলে আটক থাকা গাজার ‘শত শত বাসিন্দাকে’ মুক্তি দেবে নেতানিয়াহু সরকার।
আরও পড়ুনইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নৈতিক জাগরণ ৯ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাবে আংশিক সম্মতি জানিয়েছে হামাস৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র প রস ত ব ম ন ইসর য় ল র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আট দফার বাস্তবায়ন চায় জুম্ম ছাত্র-জনতা
খাগড়াছড়িতে ডাকা অবরোধ কর্মসূচি স্থগিতের পর এবার প্রত্যাহার ঘোষণা করেছে জুম্ম ছাত্র-জনতা। আজ শনিবার সকালে সংগঠনটির ফেসবুক পেজ থেকে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আট দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
জুম্ম ছাত্র-জনতা জানায়, খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সংঘটিত ঘটনায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে জুম্ম ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিদের দ্বিতীয় দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় জুম্ম ছাত্র-জনতার আট দফা মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। এই আশ্বাস বিবেচনায় ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত রাখা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে অবরোধ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জুম্ম ছাত্র জনতার সদস্য কৃপায়ন ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ‘দ্রুত ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জুম্ম ছাত্র-জনতা আরও কঠোর ও অনির্দিষ্টকালের কর্মসূচি ঘোষণা করতে দ্বিধা করবে না।’
জুম্ম ছাত্র-জনতার ৮ দফার মধ্যে রয়েছে যেকোনো ধরনের হামলা-গ্রেপ্তার বন্ধ রাখা, ধর্ষণ মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা ও গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামির বিচার নিশ্চিত করা, ভুক্তভোগীকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন করা, ২৭ ও ২৮ অক্টোবর খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সংঘটিত ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার পর দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা, সহিংসতায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা এবং আটক ব্যক্তিদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। রাতেই তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যায়। এ ঘটনার পর শয়ন শীল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে অবরোধ ডাকা হয়। পরদিন থেকে তিন পার্বত্য জেলায় অবরোধের ডাক দেয় সংগঠনটি। অবরোধের মধ্যেই ২৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে স্থানীয় একটি পক্ষও সংঘর্ষে যোগ দেয়। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। তাঁরা তিনজনই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। সেনাবাহিনীর মেজরসহ আহত হন অন্তত ২০ জন। রামেসু বাজার এলাকায় আগুন দেওয়া হয় প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি ও ৪০টির মতো দোকানে। এ ঘটনার চার দিন পর গত বুধবার রাতে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনায় তিনটি মামলা করে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১ হাজার ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে গত মঙ্গলবার খাগড়াছড়ির ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দেয় মেডিকেল বোর্ড।