কুয়াশার ঘের ভেঙে মাথা তোলা রাতুল নগর
Published: 4th, October 2025 GMT
এসো
এই গ্রীষ্মের প্রান্তরে অজৈব ছায়ায় একটানা হেঁটে হেঁটে
ভীষণ ফ্যাকাসে হয়ে গেছ
এসো অযান্ত্রিক রোদে, খানিক জিরিয়ে নাও।
না হয় কবুল করে নিলে হতশ্রী সংসার
তথাপি ভাবনা কী; শিরীষপাতায় আছে শিশিরের গান
রূপা-জোছনায় জুঁইফুলের গন্ধ!
জীবনের ঘাম লহমায় মুছে ফেলার কোনো রুমাল নেই
ছত্রখান ভালোবাসায় তোমাকে পাহাড়ি বাংলোর মতো
একান্ত ঝলমলে গল্প উপহার দেব—
এসো বিশ্বস্ত রোদে, জিরিয়ে নাও
অজৈব ছায়ায় হেঁটে হেঁটে ভীষণ ফ্যাকাসে হয়ে গেছ!
জনৈক নির্জন রোদ, মতিচ্ছন্ন;
বুকে তার অসুখের মতো ভালোবাসার বেদনা
সেই আলোড়ন টের পেয়ে মাঝে মাঝে
দু চারটে সুমিষ্ট গোলাপ
বেদনার ভাগ নেবে বলে সাড়া দিয়েছিল।
মতিচ্ছন্নের জ্বরের তন্তু জাগা মুখ
চালচুলাহীন পাতাঝরা শীতের দুপুর
সামান্য সুবাস ছড়িয়েই একে একে
সরে গেল সব বিষয়ী-গোলাপ!
নির্জন রোদ্দুর তার গহিনের স্বরলিপি যত
জমা রাখে কুয়াশার বুকে
সে সংগীত জেগে থাকে শুধু বৃষ্টির জন্মরেখায়।
একদিন মানচিত্রে কোথাও ছিল না এই নগরের দাগ
ছিল না হিরণদ্যুতি-প্রাসাদের গগনছোঁয়া গরিমা
নিতল কুয়াশা; গভীর আড়ালে তার ছিল শুধু ছিন্নঘুম
জল স্থল অন্তরিক্ষে ছিল কিছু জোনাকি-সংকেত
কোনো এক মানবসংগমে হঠাৎ জেগে ওঠার!
মোহনায় মিলনগামী সে অনেক বিরহজল
প্রকাশে ইচ্ছুক আকাশে আকাশে দগ্ধতারা-নীল
ছিন্নঘুমে ডুবে থাকা অন্ধ স্বপ্নরেশ
পৃথিবীর বুকে লুপ্ত কোটি ফসলের চোয়ানো নির্যাস থেকে
ইট কাঠ বালি জল সিমেন্ট ও পাথরের মিলিত উল্লাসে
একদিন কুয়াশার ঘের ভেঙে মাথা তোলা রাতুল নগর!
কতবার কত মেঘ জমতে জমতে ভেঙে গেছে আকাশেই
কতবার গন্ধরাশি সেতু ভেঙে পড়ে গেছে আগুন নদীতে
মেলেনি ফুলের সঙ্গ
আজ নগরের দেহ ধুয়ে বিমোহিত বৃষ্টিজল
অযুত সৌগন্ধে হেসে ওঠা অগণিত পুষ্পোদ্যান!
আমি এই নগরের অনিন্দ্য রূপে অবাক-চোখ শিশু
বাতাসের সঙ্গে ভেসে ভেসে দেখি যাবতীয় কুশল নির্মাণ
নগরের হৃৎপিণ্ডে কান পাতি—
শুনি হরপ্পা নালন্দা তক্ষশীলা
রোম স্পার্টা এথেন্স অ্যাশিরিয়ান; হাজার বিলুপ্ত নগরের শ্বাস!
কিশোরের গোপন কোঁচড় থেকে
সরে গেছে আমকাটা চাকু; সে-ও কতকাল!
ভার্চ্যুয়াল ফেনায় ফেনায় চমৎকার হাবুডুবু দিন
পতিত আকাশখাতা
আপতিক ঝড়ে থেমে যাওয়া ডানালেখা।
শব্দের প্লাবন, ভুলভাল কথামূর্তি, সুচতুর গড়াপেটা
সবখানে ঢুকে পড়া জল—আলাপ ও আহ্লাদের পচ্।
খরার ভেতর যে ফুলগাছটি প্রাণপণ বেঁচেছিল
জলত্রাসে ওর নিশ্বাস নেওয়াই দায়!
ঘরে ঘরে বিপ্রতীপ ঘুম, প্রত্যেকের স্বপ্নের স্বতন্ত্র শিং
মাত্র দু ফালি মেঘের যৌথমুখ
তা-ও কোনো আয়না ধারণ করতে অনিচ্ছুক।
ঝড় ও প্লাবন, খরা বা ভাঙন—এসব ছাপিয়ে
রিরংসার বাহারি শকুন ওড়ে আকাশে আকাশে।
শোন্ অরুন্ধতী,
তুই যখন ঢাউস অন্ধকার-বেষ্টিত খুব একাকী
তখন হয়তো চাঁদের ছবি উঁকি দেবে মনে
কিন্তু তোকে যদি তুমুল পূর্ণিমায় ছেড়ে দিই
দেখবি সুখদ-আগুনে মন মোটেও পুড়ছে না
হয়তো অস্ফুটে উচ্চারণ করবি—‘এত আলো’!
তাতে বুকে এক লাইন কবিতাও আসবে না—
আজকাল এমনটিই হচ্ছে, বিশ্বাস কর।
ধর, ধু-ধু মরুবালির ওপর তোর হাঁসফাঁস জীবন
টলটলে জলস্রোতের স্বপ্ন দেখছিস
তোকে যদি থই থই কোনো নদীর ধারে নিয়ে যাই
দেখবি ভেতর থেকে এক তিল মরুক্লান্তি সরছে না
সেই চাঁদ, সেই পুরাতন নদী; বিচ্ছেদশরে রক্তাক্ত!
চারপাশে চলমান মনগুলো বাজিয়ে দ্যাখ্
ন্যূনতম জলধর্ম নেই—
মনেরও কি তবে অতিমারি হয়?
ওরাও কি পেল কোনো অদৃশ্য সঙ্গনিরোধ আজ্ঞা!
টের পাচ্ছিস, মহার্ঘ মোহনা আর উজানচিহ্নগুলো
চোখের সামনে কেমন বাষ্প হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে!
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যা, অভিযোগ ছাত্রদল নেতা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একজন রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর চাচাতো ভাই ও স্বজনদের বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে তাঁকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. খোকন মিয়ার (৪০) বাড়ি উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের করমা গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, করমা গ্রামের কছিম উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিন নামের দুই ভাই ছিলেন। ৬-৭ বছর আগে গিয়াস উদ্দিনের মৃত্যুর পর জমি নিয়ে কছিম উদ্দিনের সঙ্গে গিয়াস উদ্দিনের ছেলেদের বিরোধ শুরু হয়। বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনায় থানায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলাও হয়। স্থানীয়ভাবে দুই পরিবারের বিরোধ মেটাতে কয়েক দফা উদ্যোগ নেওয়া হলে তা মানেননি কেউ।
স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিকশা রেখে ঘর থেকে বের হন খোকন মিয়া। এ সময় গিয়াস উদ্দিনের ছেলে স্থানীয় মগটুলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও তাঁর ভাই এবং পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে দুই হাত ও দুই পা ভেঙে দেন। এ সময় তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ও মাথায় আঘাত করা হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে রাত একটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে পুলিশ উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক খোকনকে মৃত ঘোষণা করেন।
রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যায় অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা নজরুল ইসলাম