আজকাল সকালে ঘুম ভাঙার পর থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অনেক মুহূর্তকে ফ্রেমবন্দী করে তা আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দুনিয়ায় টানিয়ে রাখছি। আজ থেকে তিন দশক আগেও ছবি তোলা ছিল এক আনুষ্ঠানিক, ব্যয়বহুল কিংবা প্রয়োজন। সেই সময়ের নস্টালজিক যাত্রা এখনো মিলেনিয়াল বা তারও পরের প্রজন্মের কাছে রীতিমতো গল্প। ২০২২ সালের পরে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর প্রম্পটোগ্রাফির যুগে প্রবেশ করেছি আমরা।

১৯৯০ দশকের স্টুডিও আর ইয়াশিকার আভিজাত্য

আশি বা নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ছবি তোলা মানেই ছিল একটা বিশেষ আয়োজন। হয়তো কোনো স্টুডিওতে যাওয়া হতো, যেখানে গম্ভীর ফটোগ্রাফার কালো পর্দা টেনে বিশাল ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়ে বলতেন, একটু হাসুন! সেই ছবি প্রিন্ট হয়ে হাতে আসতে সময় লাগত কয়েক দিন। এটি যেন ছিল একধরনের সামাজিক প্রথা। বগুড়ার নিশিন্দারা এলাকায় নব্বই দশকে বসবাস করতেন মারিয়া হোসেন। এখন ঢাকায় থাকেন। তিনি বলেন, ‘এলাকার স্টুডিওতে ছোটবেলায় স্মৃতি ধরে রাখতে বাবার সঙ্গে স্টুডিওতে যেতাম। সেই ছবি প্রিন্ট করে নিয়েছিলাম। এখনো মাঝেমধ্যে সেই কাগজের ছবি দেখি। বিষয়টা কাগজ আর আবেগের সমন্বয়। এখন তো মোবাইল দিয়ে ক্লিক করে ছবি তুলতে পারি। আবার হাল আমলের এআই ট্রেন্ড দেখছি। আগে যেভাবে সাজগোজ করে শ্রম দিয়ে ছবি তুলতাম, এখন সেই প্রবণতা থেকে আমরা অনেকেই বোধ হয় দূরে সরে যাচ্ছি। ফটোগ্রাফি একটা শিল্প, তা কয়েকটা প্রম্পটের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব না মনে হয়।’

মারিয়া আরও বলেন, ‘পুরো পাড়ায় হয়তো হাতে গোনা দু-চারজনের বাড়িতে একটি ইয়াশিকা বা অন্য কোনো ফিল্ম ক্যামেরা থাকত। ফিল্ম রোল কেনা, সাবধানে তোলা বা নষ্ট হওয়ার ভয় ছিল যেন এক আভিজাত্যের প্রতীক। ছবি ছিল তখন ব্যয়বহুল স্মৃতি, মুহূর্তের জাদু, যা সযত্নে অ্যালবামে রাখা হতো। ২০০৮-০৯ সালের দিকে একটু বড় হয়ে কলেজে পড়ার সময় আমার জন্য বাবা ডিজিটাল ক্যামেরা কিনে দেন। সেটি ছিল সনি সাইবারশট। ক্লিক করলেই ক্লিং শব্দ শোনা যেত সেইসব ক্যামেরায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নিজে টাকা জমিয়ে কিনেছিলাম নাইকন ব্র্যান্ডের সেই আমলের ভালো একটা ক্যামেরা। ডি৭০০০ মডেলের ক্যামেরায় ছবি তুলতাম মনের মতো করে। সেই আবেগ এআই দিয়ে পাওয়া বেশ কঠিন।’

ডিজিটাল ক্রেজের দশক

২০০০ সালের শেষের দিকে প্রযুক্তি হাতে এনে দেয় নানা ধরনের ডিজিটাল ক্যামেরা। সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেল ছবি তোলার নিয়ম। কত ছবি তুললাম, সেটার চেয়েও জরুরি হয়ে যায় ছবিটা কেমন হলো? ফিল্ম রোলের হিসাব চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই স্ক্রিনে দেখা যায় ছবি। ২০১০ সালের পরে তারুণ্যের কাছে এটি জনপ্রিয়তা পেল। গভীর ডেপথ-অফ-ফিল্ড, দ্রুত শাটার এবং পেশাদার মানের ছবি—ডিএসএলআর যেন প্রমাণ করে দিল, ফটোগ্রাফি এখন আর শুধু পেশাদারদের নয়, বরং উচ্ছ্বসিত শখের বিষয়। ৭০-৮০ দশকে কৈশোর পার দেওয়া গাজী বিজয় আহমেদ বলেন, ‘সেই সময় সাদাকালো ছবি তুলতে আমরা পরিবার নিয়ে যেতাম স্টুডিওতে। ১৯৯০ দশকে রঙিন ছবি প্রিন্ট করে রাখতাম। ২০০৭ সালের পরে হাতে চলে আসে ছোট ছোট ডিজিটাল ক্যামেরা।’

স্মার্টফোন বিপ্লব ও ভাইরাল সংস্কৃতি

সৌখিন ফটোগ্রাফিতে সবচেয়ে বড় বিপ্লব আসে ২০০৭ সালের পরে আইফোন ও নানা মডেলের স্মার্টফোন হাতে আসার পর। ক্যামেরা যেন আমাদের হাতেরই একটি অংশ হয়ে গেল। ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়ে গেল এক সেকেন্ডের কাজ। মুহূর্তের মধ্যে ছবি তুলে, ফিল্টার লাগিয়ে, মুহূর্তেই তা বিশ্বের সঙ্গে শেয়ার করার প্রবণতা শুরু হলো। তখন থেকেই জন্ম নিল সেলফি সংস্কৃতি। সেই কালচার এক দশকেও কমেনি। ভাইরাল সব ছবি, লাইক, কমেন্টের মাধ্যমে নির্ধারণ করতে শুরু করল ছবির সাফল্য। ছবি তোলার অভ্যাস পরিণত হলো দৈনন্দিন জীবনযাপনে। যখন যা দেখছি, তার ছবি তুলছি এমন এক অভ্যাসই ডিজিটাল দুনিয়ার সামাজিক যোগাযোগের ভিত্তি স্থাপন করে দিল। এসব ছবির নানা ট্রেন্ড দেখাতে জন্ম নিল ইনস্টাগ্রাম নামের ছবি এক দুনিয়া।

এখন চলছে প্রম্পটোগ্রাফির নতুন খেলা

ফটোগ্রাফি দুনিয়ায় এখন এআই বড় এক জাদুর নাম। ২০২২ সালে চ্যাটজিপিটি আর এর পরপরই মিডজার্নির মতো বিভিন্ন মডেল নানা ধরনের এআই টুল আসতে শুরু করে। হঠাৎ করেই ছবি তোলার প্রক্রিয়া হয়ে গেল ছবি তৈরি করায়। মানুষ শিখতে শুরু করেছ প্রম্পট লিখতে। এখন আপনি ক্যামেরা হাতে না নিয়েও আপনার কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন।

কোনো এক সমুদ্রসৈকতে হলুদ পোশাক পরা ডাইনোসর নাচছে কিংবা আরও অদ্ভুত কিছু করছে, এমন দৃশ্য তৈরি করতে আপনার শুধু দরকার কিছু শব্দ লেখা আর একটি এআই টুল। এই যুগ আমাদের বাধ্য করছে ভাবতে যে ছবি কি কেবল বাস্তবকে ফ্রেমবন্দী করবে, নাকি কল্পনার রং ছিটিয়ে বাস্তবকে ছাড়িয়ে যাবে?

ফ্যাশন উদ্যোক্তা নিশাত আনজুম জানান, এআই দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ছবি তোলা যাচ্ছে। কৃত্রিম ছবিতে মানুষ নিজেকে ভিন্নভাবে দেখার চেষ্টা করছে। শুরুতে মজার মনে হলেও এসব ছবিতে হিউম্যান টাচ বা মানুষের আবেগের বিষয়টি শূন্য বলা যায়। এআই দিয়ে তৈরি ছবি বাস্তবতা থেকে বেশ দূরে থাকে বলে আবেদন তৈরি করতে পারছে না। ভাইরাল হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ছবি মনোযোগ হারাচ্ছে।

চিত্রশিল্পী ফৌজিয়া মাহিন চৌধুরী জানান, ‘এআই দিয়ে আমাদের মনের অনেক ইচ্ছা পূরণ করা যাচ্ছে। বাস্তবে ছবি তোলার সময় অনেক ঝামেলার মধ্যে পড়ি আমরা। সেই ঝামেলা এড়িয়ে চলতে নেট–নাগরিকেরা এআই ব্যবহার করে চমক তৈরি করতে ছবি তৈরি করছে। এআই দিয়ে আমাদের অনেক দুর্বলতা এড়িয়ে চলা যায়। কক্সবাজার না গিয়েও কয়েকটি শব্দে সুন্দর সব ছবি তোলা হচ্ছে। এখন এআই দিয়ে নানা আঙ্গিকে ছবি তোলা হচ্ছে। প্রথম দিকে আমি নিজেই দ্বিধায় পড়তাম কোনটা আসল বা কোনটা এআই ছবি, বোঝাটাই একটা ধাঁধা ছিল।’

বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা রাকা নোশিন নাওয়ার বলেন, ‘আমার মনে হয় প্রত্যেক মানুষের নিজের মধ্যে একটা স্বপ্নের বা কল্পনার প্রতিকৃতি আছে। এআই দিয়ে সেই কল্পনা সামনেই তৈরি করছেন সবাই।’

ফটোগ্রাফার ফওজিয়া জাহান বলেন, একটা ছবি তুলতে অনেক সময় বা পরিশ্রম হয়। সাধারণ মানুষ এআই দিয়ে অনেক চমক তৈরি করছে। অনেক পুরোনো ছবি যা বাস্তবে তৈরির সুযোগ নাই, সেই সব ছবি এআই দিয়ে তৈরি করছে মানুষ। নিজের কল্পনা বা অতীতের নানা বিষয়কে সামনে দেখতে এআইকে ব্যবহার করছে।

যে কারণে এআই দিয়ে ছবি তৈরি জনপ্রিয় হচ্ছে

ফটোগ্রাফি আজ আর শুধু আলোর খেলা নয়, এটি প্রযুক্তির বিস্ময়কর প্রভাব। একসময় যে ছবিটি তুলতে সপ্তাহখানেক লাগত, আজ সেই ছবি এক নিমেষেই তৈরি হচ্ছে। স্টুডিওর গম্ভীরতা থেকে শুরু করে এআইয়ের চমক অদ্ভুত সব ছবি তৈরি করছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাদিয়া ইসলাম বলেন, ‘আসলে মানুষ সব সময় সহজ উপায় খোঁজে। একটা ভালো ছবি তোলার জন্য মেকআপ, সেটআপ, আবেগ, পোশাকসহ অনেক পরিশ্রম হয়। অনেক খরচ হয় কিন্তু। এখন এআই দিয়ে অনেক কিছু করা যাচ্ছে। আমি নিজেও গুগল জেমিনির ন্যানো ফিচার ব্যবহার করে ছবি তুলেছি। এখন মডেল থেকে শুরু করে যে কেউ তার পোর্টফোলিও বানানোর জন্য এআই ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারছে। কয়েকটি ছবি এআই টুলের সঙ্গে শেয়ার করলেই তৈরি করা যাচ্ছে মজার মজার ছবি। ছবিতে একটু বুদ্ধি করে আবেগও দেওয়া যাচ্ছে। আমার মনে হয়, পরিশ্রম কম হয় বলে মানুষ এআইনির্ভর ছবি তোলার দিকে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। পেশাদারি দিক থেকে যদিও এআই দিয়ে তোলা ছবি এখনো ব্যবহার বাড়েনি। স্টুডিওতে নানা প্রয়োজনে এখনো আমাদের যাওয়া পড়ে। ভিসা কিংবা পেশাদার কাজে স্টুডিওর প্রয়োজন আছে এখনো।’

প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিচ্ছে এআই

এখন অনেক প্রয়োজনে এআই দিয়ে আমরা ছবি তৈরি করে ব্যবহার করছি। বিভিন্ন প্রেজেন্টেশন তৈরির সময় অনেক প্রয়োজনীয় ছবি অনলাইন বা কোনো উৎস থেকে সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে । সেই সময় এআই প্রম্পট দিয়ে ভালো আঙ্গিকের ছবি তোলা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর অধ্যাপক খালেদ মাহমুদ বলেন, ক্লাসরুম থেকে শুরু করে ব্যবসার কাজে নানা প্রয়োজনে এআই দিয়ে ছবি ব্যবহারের চল দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা প্রেজেন্টেশনকে আকর্ষণীয় করতে এআই ব্যবহার করছেন। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনেও আমরা এআই দিয়ে তৈরি ছবি ব্যবহার করতে দেখছি। এতে প্রযুক্তিকে ব্যবহারকারীরা নিজেদের মতো করে ব্যবহার করছে। যদিও অনেক সময় এআইয়ের কারণে বিভ্রান্তিকর ছবি দেখা যায়, তারপরেও বিষয়টি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র করছ ব যবহ র কর স ল র পর এআই দ য় অন ক প আম দ র এআই ব এআই ট র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের সর্বকনিষ্ঠ শতকোটিপতি অরবিন্দ শ্রীনিবাস, কীভাবে তাঁর উত্থান

বিশ্বের তরুণ শতকোটিপতিদের নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকে। দেখে নেওয়া যাক ভারতের সর্বকনিষ্ঠ শতকোটিপতি কে। এনডিটিভির সংবাদে বলা হয়েছে, ভারতের অরবিন্দ শ্রীনিবাস দেশটির সর্বকনিষ্ঠ শতকোটিপতি হয়েছেন।

পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী অরবিন্দ শ্রীনিবাস এম৩এম হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২৫-এ সবচেয়ে ধনী তরুণ ভারতীয় হিসেবে স্থান পেয়েছেন। তালিকা অনুসারে, অরবিন্দর মোট সম্পদের পরিমাণ ২১ হাজার ১৯০ কোটি রুপি বা ২ হাজার ৩৯০ কোটি ডলার। ডেনিস ইয়্যারাটস ও অ্যান্ডি কনউইনস্কির সঙ্গে মিলে শ্রীনিবাস পারপ্লেক্সিটি এআই প্রতিষ্ঠা করেন।

সারা বিশ্বে এখন এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জয়জয়কার। অরবিন্দের উত্থানও সেই এআইয়ের হাত ধরে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি পারপ্লেক্সিটি এআই বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল গুগল, জেমিনি ও ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। সম্প্রতি অরবিন্দর কোম্পানি গুগলের ক্রোম ব্রাউজার কেনার প্রস্তাব দিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তোলে। তিনি গুগল ক্রোম ব্রাউজারটি কেনার জন্য ৩৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৪৫০ কোটি ডলার দাম প্রস্তাব করেছিলেন। ‘চেন্নাই বয়’ হিসেবে পরিচিত অরবিন্দ প্রতিশ্রুতিশীল ব্যক্তি।

শ্রীনিবাসের জন্ম ১৯৯৪ সালের ৭ জুন, ভারতের তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে। ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহ গড়ে ওঠে তাঁর। আইআইটি মাদ্রাজে পড়াশোনার সময়ই তিনি রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং ও অ্যাডভান্সড রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং কোর্স পড়াতেন। পরবর্তী সময় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলেতে কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি করেন তিনি। তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র ছিল কনট্রাস্টিভ লার্নিং ফর কম্পিউটার ভিশন, রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং, ট্রান্সফরমারভিত্তিক মডেল ব্যবহার করে ছবি তৈরি, চিহ্নিতকরণ ও ভিডিও তৈরি।

লিঙ্কডইন প্রোফাইল অনুযায়ী, ২০২০ ও ২০২১ সালের বসন্ত সেমিস্টারে তিনি ডিপ আনসুপারভাইজড লার্নিং কোর্সও পড়িয়েছেন।

শ্রীনিবাস বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কিছু প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তিনি প্রথমে ওপেনএআইতে রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং নিয়ে কাজ করেন। এরপর লন্ডনে ডিপমাইন্ডে যোগ দেন, যেখানে তাঁর গবেষণার কেন্দ্র ছিল কনট্রাস্টিভ লার্নিং। এরপর তিনি গুগলে কাজ করেন এবং হ্যালোনেট ও রেজনেট-আরএসসহ বিভিন্ন ভিশন মডেল তৈরি করেন। পরে আবার ওপেনএআইয়ে রিসার্চ সায়েন্টিস্ট হিসেবে ফিরে আসেন এবং টেক্সট-টু-ইমেজ জেনারেশন মডেল ডাল-ই-২-এর উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন।

কী করে পারপ্লেক্সিটি এআই

পারপ্লেক্সিটি এআই চ্যাটজিপিটির মতোই নতুন প্রজন্মের এআইভিত্তিক চ্যাটবট, যেটি গুগলের মতো কেবল লিঙ্কের তালিকা দেয় না, বরং ব্যবহারকারীর প্রশ্ন বুঝে উত্তর তৈরি করে। কোনো বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে এটি ইন্টারনেটের নানা নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য খুঁজে আনে, সেগুলো মিলিয়ে সহজ ভাষায় সারসংক্ষেপ তৈরি করে দেয়। শুধু তা–ই নয়, সে কোথা থেকে উত্তরটি নিয়েছে, তা–ও উল্লেখ করে। ফলে ব্যবহারকারী চাইলে সঙ্গে সঙ্গে উৎসে ফিরে গিয়ে তথ্য যাচাই করতে পারেন।

প্রযুক্তিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ট্রেক ক্রাঞ্চের তথ্যানুসারে, পারপ্লেক্সিটি এআইকে অনেকেই ‘এআই-চালিত সার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট’ হিসেবেও পরিচিত। গবেষক, সাংবাদিক বা শিক্ষার্থীরা দ্রুত তথ্য জোগাড় করতে, জটিল প্রতিবেদন বা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের সারমর্ম বের করতে কিংবা তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে এটি ব্যবহার করেন।

গুগলের সার্চে যেখানে ব্যবহারকারীকে নিজে লিঙ্ক খুলে পড়তে হয়, পারপ্লেক্সিটি সেখানে উত্তর সাজিয়ে সামনে তুলে ধরে, তা–ও আবার কথোপকথনের ভঙ্গিতে। একদিকে সার্চ ইঞ্জিনের কার্যকারিতা, অন্যদিকে চ্যাটবটের স্বাভাবিক আলাপচারিতা—এই দুই অভিজ্ঞতা একসঙ্গে দিচ্ছে পারপ্লেক্সিটি এআই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের সর্বকনিষ্ঠ শতকোটিপতি অরবিন্দ শ্রীনিবাস, কীভাবে তাঁর উত্থান