অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে জাকের পার্টিকে ভোট দিন: কায়সার হামিদ
Published: 4th, October 2025 GMT
জাকের পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান, কিংবদন্তি ফুটবলার কায়সার হামিদ বলেছেন, “ছাত্র জনতার আন্দোলন, আত্মত্যাগে পাঁচ আগষ্ট দেশের শাসক পরিবর্তন হলেও ঘুষ-দুর্নীতি ও লুটেরা রাজনীতির পরিবর্তন হয়নি। ছাত্র জনতার রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি, জনগণ মনে করেছিল, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে, সরকারি সেবা নিশ্চিত হবে, কিন্তু কিছুই হয়নি। তাই সত্যিকারে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে জাকের পার্টিকে ক্ষমতায় আনতে হবে।”
শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে আদাবর থানার সলনা কমিউনিটি সেন্টারে জাকের পার্টি আদাবর থানা আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কায়সার হামিদ বলেন, “জাকের পার্টি মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করে। ঘুষ দুর্নীতি, মাদক চিরতরে নির্মূল করতে চায়। সরকারি সেবা নিশ্চিত করতে চায়। অসাম্প্রদায়িক ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গঠনে জাকের পার্টিকে ভোট দিন। কর্মের মাধ্যমে জাকের পার্টি আপনার রায়ের প্রতিদান দেবে।”
বক্তব্য রাখেন জাকের পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান বিশ্বাস, জাকের পার্টি মহিলা ফ্রন্ট এর যুগ্ন সাধারণ সম্পাদিকা কানিজ ফাতেমা লিপি, ছাত্রী ফন্টের অর্থ সম্পাদিকা হামিদা ইসলাম ঋণী, ছাত্রফ্রন্টের যুগ্ম প্রচার সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, মহানগর উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক ভূঁইঞা শুভ, যুব ফ্রন্ট ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ইমরুল কায়েস, জাকের পার্টি মৎস্যজীবী ফ্রন্ট এর ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শিশির আহমেদ লিটন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা আগামী নির্বাচন সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে ই-ভোটিং ব্যবস্থা চালুর আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বর্তমান সরকারকে এমন একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে, যাতে গত ষোলবছরের বদনাম ঘুচে যায়। এজন্য এখন থেকে সরকারের প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রত্যেককে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।”
তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও চিকিৎসা সেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিতে উদ্বোগ প্রকাশ করেছেন।
সভা শেষে বর্ণাঢ্য র্যালি আদাবর থানার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কর্মসূচি শেষ করে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প র বর ত ফ রন ট
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রস্তুতি মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশিত
নৈতিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মানবকেন্দ্রিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সম্পন্ন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রস্তুতি মূল্যায়ন (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স রেডিনেস অ্যাসেসমেন্ট—র্যাম) প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এআই গ্রহণের মাধ্যমে অধিকার সুরক্ষা, অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করার পথনির্দেশক হিসেবে এ প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আজ বৃহস্পতিবার অ্যাস্পায়ার টু ইনোভেট—এটুআই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার আইসিটি টাওয়ারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মিলনায়তনে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, এটুআই, জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেসকো) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে র্যাম প্রতিবেদনটি উন্মোচন করা হয়। এতে বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রণালয়, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা সংস্থা, বেসরকারি খাত এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
প্রতিবেদনটিতে এআই বিষয়ে বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক, আইনগত, সামাজিক ও কারিগরি প্রস্তুতির প্রথম সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ডিজিটাল সরকারব্যবস্থায় বাংলাদেশ এরই মধ্যে সুদৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলেছে ও সরকারি ডিজিটাল সেবার প্রতি নাগরিকদের আস্থার মাত্রাও উচ্চমানের। একই সঙ্গে ঢাকার বাইরে অনিয়মিত ইন্টারনেট সংযোগ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, লিঙ্গভিত্তিক ও শহর-গ্রামের দীর্ঘস্থায়ী ডিজিটাল বৈষম্য, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটার অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা এবং তথ্য সুরক্ষা, সাইবার নিরাপত্তা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সংক্রান্ত দক্ষতা বৃদ্ধির ঘাটতির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘এই মূল্যায়ন প্রতিবেদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক সময়ে প্রকাশিত হলো। বাংলাদেশ এমন এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর যুগে প্রবেশ করছে, যেখানে এখন নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো আগামী কয়েক দশক ধরে সমাজকে প্রভাবিত করবে। এই প্রতিবেদন আমাদের স্পষ্টভাবে দেখায় আমরা কোন অবস্থানে আছি এবং কোন বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের বিচারের বিকল্প না হয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করে। আর নাগরিকদের শোষণ না করে তাঁদের অধিকার সুরক্ষিত করে।’
আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী চলমান নীতি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায়, বিশেষ করে জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নীতি চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে র্যাম প্রতিবেদনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নীতি নির্ধারণ হতে হবে অনুমাননির্ভর নয়, প্রমাণনির্ভর।
ইউনেসকোর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসংক্রান্ত নীতিনির্দেশনা-ভিত্তিক সুপারিশের আলোকে প্রণীত এ মূল্যায়নে জাতীয় পর্যায়ের তথ্য বিশ্লেষণের পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বিস্তৃত পরামর্শ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে ইউনেসকো কার্যালয়ের প্রধান ও কান্ট্রি প্রতিনিধি সুসান ভাইজ তাঁর বক্তব্যে র্যাম প্রতিবেদনকে একই সঙ্গে ‘একটি দর্পণ এবং একটি রূপরেখা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। একদিকে শাসনব্যবস্থা, অবকাঠামো, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও তথ্যভিত্তিক ব্যবস্থার অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জের প্রতিফলন এতে রয়েছে, অন্যদিকে অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ নির্ধারণে সহায়ক সুস্পষ্ট রূপরেখা এতে আছে। তিনি তথ্য সুরক্ষা ও সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা, বাংলা ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষায় উচ্চমানের তথ্যভান্ডার তৈরি এবং কন্যাশিশু ও নারীদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসংক্রান্ত শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, এআই ব্যবধান কমাবে নাকি বাড়াবে, তা নির্ভর করবে দেশগুলো এখন কী সিদ্ধান্ত নেয় তার ওপর। সংযোগ, দক্ষতা, ডেটা এবং কম্পিউটিং অবকাঠামো শক্তিশালী করা, নির্ভরযোগ্য নিয়ন্ত্রক ও শাসনকাঠামো তৈরি করা এবং জাতীয় সক্ষমতার সঙ্গে এআই কৌশলগুলোকে খাপ খাইয়ে নেওয়া—এই সবকিছুই নির্ধারক ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নীতিমালার ওপর ইউনেসকোর সুপারিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, যা মানবাধিকার, ন্যায়বিচার এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে গতিশীল করবে।
এটুআই কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক মোহা. আবদুর রফিক র্যাম প্রতিবেদনে উত্থাপিত সুপারিশগুলোকে সেবাদানে দৃশ্যমান উন্নতিতে রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, র্যাম প্রতিবেদন নাগরিকমুখী সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে সতর্কতার সঙ্গে প্রয়োগ করা যায়, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবে, যাতে মানুষ দ্রুততর, ন্যায্য ও আরও নির্ভরযোগ্য সাড়া পায়, কিন্তু বিদ্যমান ডিজিটাল বৈষম্য যেন কোনোভাবেই না বাড়ে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দপ্তরের উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের প্রধান মিখাল ক্রেজা বলেন, ‘আমরা আশা করি, এই প্রতিবেদন একটি আস্থাভিত্তিক এআই ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে সহায়তা করবে, যাতে উদ্ভাবনের সুফল সব নাগরিকের কাছে পৌঁছে যায়। বিশেষ করে তরুণ, নারী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে।’