বাংলাদেশ সচিবালয়ে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ ঘোষণা বাস্তবায়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত এক সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

রবিবার (৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

আরো পড়ুন:

সচিবালয় দিয়ে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধের যাত্রা শুরু: উপদেষ্টা

চার দিনের ছুটি শেষে সচিবালয়ে প্রাণচাঞ্চল্য

এই কর্মসূচির মাধ্যমে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে প্লাস্টিক বর্জনের প্রয়োজনীয়তা ও পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ড.

ফারহিনা আহমেদ বলেন, “পৃথিবীব্যাপী এখন পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হলো একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক। এসব প্লাস্টিক দ্রব্য পরিবেশে শত শত বছর পর্যন্ত থেকে যায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ কারণে সরকার এর ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমরা চাই সচিবালয় থেকেই এই নিষেধাজ্ঞার বাস্তব প্রয়োগ শুরু হোক। আমরা যদি নিজেদের দপ্তর প্লাস্টিকমুক্ত রাখতে পারি, তবে সাধারণ মানুষকেও উদ্বুদ্ধ করা সম্ভব হবে।”

তিনি আরো বলেন, “শুধু সরকারি নির্দেশনা নয়, পরিবেশ রক্ষায় প্রত্যেক নাগরিকের, বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব নিতে হবে। সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আজকের এই কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্ম-সচিব সালমা সুলতানা, উপ-সচিব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

অতিরিক্ত সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এ ধরনের সচেতনতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন না হলে শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না। প্লাস্টিক বর্জনের পাশাপাশি বিকল্প পণ্যের ব্যবহার নিয়েও আমাদের চিন্তা করতে হবে।”

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা শফিক হোসরন বলেন, “আমরা প্রতিদিন এমন অনেক প্লাস্টিক ব্যবহার করি, যেগুলো একবার ব্যবহার করেই ফেলে দিই। আজকের অনুষ্ঠান থেকে বুঝতে পেরেছি, এগুলোর পরিবেশগত ক্ষতি কতটা ভয়াবহ। এখন থেকে নিজেকে এবং আশেপাশের সহকর্মীদেরও সচেতন করতে চেষ্টা করব।”

অনুষ্ঠানে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্ল্যাকার্ড, পোস্টার ও ব্যানার হাতে ‘প্লাস্টিক বর্জন করি, পরিবেশ রক্ষা করি’ শীর্ষক এ কর্মসূচির মাধ্যমে সচিবালয় এলাকায় প্লাস্টিকমুক্ত পরিবেশ গঠনের বার্তা ছড়িয়ে দেন।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর একব র ব যবহ র য প ল স ট ক কর মকর ত পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

অসময়ের ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষে চমক দেখালেন দুলাল

হবিগঞ্জর বাহুবল উপজেলায় অসময়ে ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজ চাষ করে চমক দেখিয়েছেন মো. দুলাল মিয়া নামে এক কৃষক। মাচা পদ্ধতিতে বাড়ির পেছনের ২০ শতক জমিতে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে তিন এই ফলটির আবাদ করেছেন। ভালো ফলন হওয়ায় এই কৃষক আশা করছেন, তিনি তরমুজ বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।

দুলাল মিয়া উপজেলার উত্তর হাফিজপুর গ্রামের বাসিন্দা। ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষে তাকে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছেন বাহুবল উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম।

আরো পড়ুন:

পঙ্গুত্ব তাকে ভিক্ষুক নয়, বানিয়েছে ব্যবসায়ী

ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে ‘আমা দাবলাম’ জয় করলেন তৌকির

উত্তর হাফিজপুর গ্রামে দুলালের ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ কচি লতাপাতার মাঝে প্রায় ৬০০ গাছে ঝুলছে কালো রঙের শত শত তরমুজ। ছোট-বড় তরমুজে নুয়ে পড়েছে মাচা। মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। পোকা দমনে ব্যবহার হয়েছে ফেরোমন ফাঁদ। ফলে কীটনাশক তেমন একটা ব্যবহার করতে হচ্ছে না। দুলাল মিয়ার এই তরমুজ চাষ দেখতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী।   

দুলাল মিয়া জানান, এ বছর তিনি প্রায় ২০ শতক জমিতে ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজের চারা রোপণের জন্য কিছুদূর পরপর তৈরি করেন বেড। পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পর বেডের নির্দিষ্ট স্থান ফুটো করে বীজ রোপণ করেন। চারা গজালে বাঁশ ও সুতা দিয়ে মাচা তৈরি করেন। বাঁশের খুঁটি দিয়ে মাচায় চারা তুলে ক্ষেত প্রস্তুত করেছেন।

তিনি জানান, তরমুজ চাষে প্রায় ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বর্তমান বাজারে কালো রঙের তরমুজের প্রতি কেজির দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা। সে হিসেবে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। 

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন, “এ অঞ্চলের মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলে কৃষি উন্নয়ণ প্রকল্পের আওতায় মাচায় তরমুজ প্রদর্শনী করেন কৃষক মো. দুলাল মিয়া। তিনি তরমুজ আবাদ করে সফল। তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছি। তার তরমুজ চাষে সফলতা দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হয়েছেন।”

তিনি বলেন, “কৃষকরা পরামর্শ চাচ্ছেন। তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এক কথায়, কালো রঙের তরমুজ চাষে কৃষক দুলাল চমক দেখিয়েছেন।”  

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চিন্ময় কর অপু বলেন, “তরমুজ চাষ বাহুবলে ছিল না। আমরা কৃষকদের উৎসাহ দিয়েছি। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তরমুজ চাষ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে উত্তর হাফিজপুর গ্রামে অসময়ে কালো রঙের তরমুজ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন দুলাল নামে এক কৃষক।”

তিনি বলেন, “কালো তরমুজ চাষের জন্য বাহুবলের মাটি বেশ উপযোগী। এ জাতের তরমুজ রসালো ও সুস্বাদু হয়।”

ঢাকা/মামুন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ