গুলশানে জমি কিনছে মবিল যমুনা লব্রিকেন্টস, শপিংমল নির্মাণের পরিকল্পনা
Published: 5th, October 2025 GMT
গুলশানে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে জমিতে বিনিয়োগ করছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি মবিল যমুনা লুব্রিকেন্টস। ইস্টকোস্ট গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইস্টকোস্ট হোল্ডিংসের সঙ্গে মিলে যৌথভাবে এই বিনিয়োগ করছে মবিল যমুনা লুব্রিকেন্টস বা এমজেএল।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর মবিল যমুনা লুব্রিকেন্টসের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে নিয়ম অনুযায়ী বিনিয়োগের এই সিদ্ধান্তের কথা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে আজ রোববার এই তথ্য প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, ইসি বা ইস্টকোস্ট হোল্ডিংস ও এমজেএল সমানুপাতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ২১৪ কোটি টাকায় জমি কিনছে। অর্থাৎ ২১৪ কোটি টাকার মধ্যে ১০৭ কোটি টাকা দেবে এমজেএল। আর বাকি ১০৭ কোটি টাকা দেবে ইসি হোল্ডিংস। পরবর্তী সময়ে এই জমি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে।
কোম্পানির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গুলশানে মূল সড়কের পাশে ২২ কাঠা জমি কেনার সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে। ভবিষ্যতে সর্বাধুনিক বিপণিবিতাণ (শপিংমল) নির্মাণসহ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এই জমি ব্যবহার করা হবে। বিপণিবিতান নির্মাণসহ অন্যান্য বিনিয়োগের অর্থ দুই কোম্পানি মিলে সমানভাবে বহন করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মবিল যমুনা লুব্রিকেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আজম জে চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, অনেক দিন ধরে গুলশানের গুরুত্বপূর্ণ লোকেশনে থাকায় জমিটি কেনার বিষয়ে কথাবার্তা চলছিল। পেশাদার নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এই জমির ভ্যালুয়েশন বা মূল্যমানও যাচাই করা হয়। তারপর দাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই জমিতে সর্বাধুনিক বিপণিবিতান (শপিংমল) গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এ ছাড়া লাভজনকভাবে জমিটির সর্বোচ্চ ব্যবহার কীভাবে করা যায়, সেটি নিয়েও পরিকল্পনা চলছে।
আজম জে চৌধুরী আরও বলেন, বড় অঙ্কের এই বিনিয়োগে মবিল যমুনা লুব্রিকেন্টসের নগদ অর্থ প্রবাহে যাতে কোনো ধরনের চাপ তৈরি না হয়, সে জন্য দুই কোম্পানি মিলে যৌথ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে লাভও ভাগাভাগি হবে অর্ধেক অর্ধেক ভিত্তিতে।
মবিল যমুনা লুব্রিকেন্টসও ইস্টকোস্ট গ্রুপের যৌথ মালিকানাধীন একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। সরকারি কোম্পানি যমুনা অয়েলের সঙ্গে কোম্পানিতে বিনিয়োগ রয়েছে ইস্টকোস্ট গ্রুপের।
মবিল যমুনা লুব্রিকেন্টস ২০১১ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে এটি ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি হিসেবে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত। আজ রোববার দিন শেষে কোম্পানিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৯৭ টাকা। কোম্পানিটির শেয়ারের প্রায় ৭১ শতাংশ মালিকানা উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ২১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে আর ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৬ শতাংশ ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে দুই শতাংশ শেয়ার।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ণ জ য ক উদ দ শ য ল ব র ক ন টস শ য় রব জ র
এছাড়াও পড়ুন:
নীলফামারীতে বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, রেড অ্যালার্ট
ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানের সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার। সকাল ৬টায় প্রবাহিত হচ্ছিল ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার দিয়ে। সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে প্রবাহিত হচ্ছিল ৫২ দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার ডান তীরের বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে বাশের পাইলিং করে বালির বস্তা নিক্ষেপ করছে পাউবো।
তিস্তার তীরবর্তী ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম এবং চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, রোববার দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা অব্যাহত আছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিয়নের ঝাড় সিংহেরস্বর ও পূর্ব ছাতনাই গ্রামের বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফ্লাটপাড়াসহ তিস্তাপারের বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকার রোপা আমন খেত তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সূত্রমতে, রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার, সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৪৮ মিটার, দুপুর ১২টায় ৫২ মিটার, বেলা তিনটায় ৫২ দশমিক ১৪ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৫২ দশমিক দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল তিস্তা নদীর পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যা ৬টায় ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি কালীগঞ্জ নামের স্থানে তিস্তার ডান তীরের প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেটির মেরামতকাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪ টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে সন্ধ্যায় মাইকিং করা হয়েছে। রাত ৮টার দিকে পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।