চট্টগ্রামে কর্মী হত্যা মামলায় কারাগারে ছাত্রদল নেতা
Published: 5th, October 2025 GMT
টার্ফ (কৃত্রিম ঘাস) মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষে ছাত্রদলের এক কর্মী নিহতের মামলায় আরেক ছাত্রদল নেতাসহ দুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তাঁরা হলেন নগরের চান্দগাঁও থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুর রহমান ওরফে আলফাজ ও ছাত্রদলের কর্মী মো. পারভেজ। আজ রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইব্রাহিম খলিল তাঁদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, চান্দগাঁও থানার একটি হত্যা মামলায় দুই আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও আসামিরা দীর্ঘদিন আদালতে হাজির হননি। রোববার হাজির হয়ে তাঁরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর নগরের পুরাতন চান্দগাঁও এলাকায় চান্দগাঁও স্পোর্টস জোনে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে জুবায়ের উদ্দিন (২৬) নামের এক যুবক নিহত হন। টার্ফের (কৃত্রিম ঘাসের মাঠ) দখল নিয়ে যুবদলের এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, ওই স্পোর্টস জোন কমপ্লেক্সের দখল নিয়ে নগর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসাইন ও নগর যুবদলের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক নুরুল আমিনের অনুসারীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এ ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় মামলা করা হয়। এ ঘটনার পর যুবদলের এই দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে চট্টগ্রাম নগর যুবদলের কমিটিও। নিহত জুবায়ের নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসাইনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে তিনি ছাত্রদলের কর্মী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নগর য বদল র ছ ত রদল র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
নীলফামারীতে বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, রেড অ্যালার্ট
ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানের সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার। সকাল ৬টায় প্রবাহিত হচ্ছিল ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার দিয়ে। সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে প্রবাহিত হচ্ছিল ৫২ দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার ডান তীরের বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে বাশের পাইলিং করে বালির বস্তা নিক্ষেপ করছে পাউবো।
তিস্তার তীরবর্তী ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম এবং চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, রোববার দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা অব্যাহত আছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিয়নের ঝাড় সিংহেরস্বর ও পূর্ব ছাতনাই গ্রামের বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফ্লাটপাড়াসহ তিস্তাপারের বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকার রোপা আমন খেত তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সূত্রমতে, রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার, সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৪৮ মিটার, দুপুর ১২টায় ৫২ মিটার, বেলা তিনটায় ৫২ দশমিক ১৪ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৫২ দশমিক দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল তিস্তা নদীর পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যা ৬টায় ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি কালীগঞ্জ নামের স্থানে তিস্তার ডান তীরের প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেটির মেরামতকাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪ টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে সন্ধ্যায় মাইকিং করা হয়েছে। রাত ৮টার দিকে পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।