ভারতের রাজস্থান রাজ্যের জয়পুরে সরকারি সোয়াই মান সিং (এসএমএস) হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারের আইসিইউ ওয়ার্ডে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে আটজন আইসিইউ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার মধ্যরাতে রাতে হাসপাতালটিতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর এনডিটিভির।

ট্রমা সেন্টারের ইনচার্জ ডা: অনুরাগ ধাকাড জানিয়েছেন, রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে নিউরো আইসিইউ ওয়ার্ডের স্টোর রুমে আগুন লাগে। এসময় আইসিইউতে ১১ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

রাশমিকা না কি বিজয়, কে বেশি ধনী?

ফের এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি

প্রত্যক্ষদর্শীরা মতে, আগুনের ফলে হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, ধোঁয়া দ্রুত পুরো মেঝেতে ছড়িয়ে পড়ে এবং রোগী ও তাদের পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে বিভিন্ন নথি, আইসিইউ সরঞ্জাম, রক্তের নমুনা টিউব এবং স্টোর রুমে সংরক্ষিত অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়ে গেছে।

হাসপাতালের কর্মীরা ও রোগীর পরিচারকরা রোগীদের সরিয়ে নিয়ে যান, এমনকি তাদের বিছানাসহ ভবনের বাইরে নিয়ে যান। আগুন লাগার খবর পাওয়ার পরপরই দমকলকর্মীরা পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ওয়ার্ড বয় বিকাশ বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানান, আগুন আরো ভয়াবহ হওয়ার আগেই তিনি এবং অন্যান্য কর্মীরা যতটা সম্ভব মানুষকে উদ্ধার করেছেন।

বিকাশ বলেন, “আমরা যখন আগুন লাগার কথা শুনতে পাই, তখনই আমরা অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে ছিলাম, তাই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সেন্টারের ভেতরে থাকা লোকজনকে উদ্ধার করতে ছুটে যাই। আমরা কমপক্ষে তিন থেকে চারজন রোগীকে বাঁচাতে সক্ষম হই। তবে, আগুন তীব্র হয়ে ওঠার সাথে সাথে আমরা আর ভবনের ভেতরে যেতে পারিনি। যতটা সম্ভব উদ্ধার করার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।” 

তিনি আরো বলেন, “পুলিশ পরে এসেছিল, কিন্তু প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে তারা তাৎক্ষণিকভাবে ভবনে প্রবেশ করতে পারেনি।”

দমকল বাহিনী পৌঁছালে পুরো ওয়ার্ড ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। আগুন নেভাতে অগ্নিনির্বাপকদের ভবনের বিপরীত দিকের একটি জানালা ভেঙে ফেলতে হয়।

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী যোগারাম প্যাটেল এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জওহর সিং বেধাম পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে ট্রমা সেন্টার পরিদর্শন করেছেন।

প্যাটেল এবং বেধাম প্রথমে পৌঁছালে দুই রোগীর পরিচারক তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অভিযোগ করেন, আগুন লাগার সময় পালিয়ে যান হাসপাতালের কর্মীরা। পরে মুখ্যমন্ত্রীও ঘটনাস্থলে পৌঁছে চিকিৎসক এবং রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন ল গ র কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

তিস্তার পানি কুড়িগ্রামে বিপৎসীমার ওপরে, লালমনিরহাটে নিচে

কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে আজ সোমবার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গাধর নদের পানিও বেড়েছে। তবে লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে সকালে তিস্তা নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখানে গতকাল রোববার তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপরে উঠেছিল।

কুড়িগ্রাম

তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ এবং উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ওই তিন ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উজানের হঠাৎ বন্যার খবরে কেউ কেউ তিস্তার চর থেকে গৃহপালিত পশু ও শিশুদের নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে।

ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গাধর নদের পানি বেড়ে চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় আমন ধান ও শীতকালীন সবজির খেত পানিতে তলিয়ে গেছে।

আজ সকালে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি বেড়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। তাই বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই। দ্রুতই পানি নেমে যাবে বলে তিনি জানান।

ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাব খাঁ গ্রামের বাসিন্দা উকিল উদ্দিন বলেন, চরাঞ্চলের অনেক বসতবাড়িতে হাঁটু পরিমাণ পানি উঠেছে। ধানখেত তলিয়ে গিয়ে শিষ অবধি পানি হয়েছে। বন্যার পানি স্থায়ী হলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল ইমরান বলেন, গতকাল তিস্তায় পানি বাড়তে শুরু করলে চরাঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে কয়েকটি পরিবারকে উদ্ধার করা হয়েছে।

নীলফামারী

লালমনিরহাটের দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে আজ সকাল ৯টায় তিস্তার পানি কমে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে নেমেছে। এর আগে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় সেখানে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছিল।

গতকাল তিস্তাতীরবর্তী নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম ও চরাঞ্চলের ১০ সহস্রাধিক মানুষ বন্যাকবলিত হয়। আজ সেই পানি নেমে গেছে।

পাউবো বলছে, গতকাল সন্ধ্যায় প্রবল বেগে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। রাতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। দিবাগত রাত ১২টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর অবশ্য পানি কমতে শুরু করে।

ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সকালে পানি নেমে গেলেও পরিবারগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে। তিস্তা নদীর পানির সঙ্গে আসা বালু জমে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, আজ সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তিস্তা জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি কালীগঞ্জে তিস্তা ডান তীর প্রধান বাঁধের ভাঙন ঠেকানো গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ