এ মাসে আন্তর্জাতিক বিরতির আগে গতকাল রাতে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলেছে বার্সেলোনা। সেভিয়ার মাঠে ম্যাচটিতে চোটের কারণে খেলতে পারেননি লামিনে ইয়ামাল। তাঁকে ছাড়া সেভিয়ার কাছে ৪–১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে বার্সেলোনা ইয়ামালকে নিয়ে বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিকের দুশ্চিন্তা আন্তর্জাতিক বিরতির পর রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়েও।

২৬ অক্টোবর সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোয় মুখোমুখি হবে রিয়াল–বার্সা। স্পেনের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের লড়াইয়ে ইয়ামালকে পাওয়া যাবে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না বার্সা কোচ। তুমুল প্রতিভাবান এই উইঙ্গারের বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতি বোঝাতে ফ্লিক শুধু দুটি শব্দ খরচ করেছেন, ‘ভালো নয়।’

গত সেপ্টেম্বরে স্পেন জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বুলগেরিয়া ও তুরস্কের বিপক্ষে খেলতে ইয়ামালকে ব্যথানাশক নিতে হয়েছিল। এর ফলে তাঁর কুঁচকির (মানবদেহের ধড় ও ঊরুর মধ্যবর্তী সংযোগস্থল) পুরোনো সমস্যা ফিরে আসে। এরপর তিনি বার্সেলোনার হয়ে ভ্যালেন্সিয়া, হেতাফে ও রিয়াল ওভিয়েদোর বিপক্ষে লা লিগা এবং নিউক্যাসলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে খেলতে পারেননি।

কিছুটা সেরে ওঠার পর গত বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পুরো ৯০ মিনিট খেলেন ইয়ামাল। তবে মাঠ ছাড়ার সময় তাঁকে খোঁড়াতে দেখা যায়। এরপর ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানায়, ইয়ামালের কুঁচকির চোট আরও বেড়েছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে প্রায় তিন সপ্তাহ লাগতে পারে।

এই সময়সীমা অনুযায়ী ২৬ অক্টোবর এল ক্লাসিকোয় ইয়ামালের খেলতে পারার কথা। কিন্তু ফ্লিক জোর গলায় সেটা বলতে পারেননি, ‘আমি ওর সঙ্গে কথা বলেছি। অবস্থা ভালো নয়। দুই, তিন বা চার সপ্তাহের মধ্যে সে খেলতে পারবে কি না, এখনই বলা সম্ভব নয়। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। ওর ওয়ার্কলোড ম্যানেজ করতে হবে। আপাতত সে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকেই অনুশীলন করছে। আগামী কয়েক সপ্তাহ সেখানেই কাটাবে।’

কিন্তু ফ্লিক বললেই কি আর জাতীয় দল শুনবে? ১১ ও ১৪ অক্টোবর জর্জিয়া ও বুলগেরিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ দুটির জন্যও যে ইয়ামালকে স্কোয়াডে রেখেছেন স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। এ নিয়ে ফ্লিক ও ফুয়েন্তের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছে গেছে।
ফ্লিক সম্প্রতি অভিযোগ করেন, ইয়ামালকে সুস্থ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে স্পেন। তাঁর দাবি, পুরোপুরি ফিট না হওয়া সত্ত্বেও সেপ্টেম্বরে জাতীয় দলের হয়ে খেলাতেই ইয়ামালের কুঁচকিতে ব্যথা বেড়েছে। কিন্তু ফ্লিকের অভিযোগ উড়িয়ে দেন ফুয়েন্তে। তবে তিনি স্বীকার করেন, ইয়ামাল সেপ্টেম্বরের ম্যাচ দুটিতে শতভাগ ফিট ছিলেন না।
ফুয়েন্তের কথার জবাবে সাংবাদিকেরা ফ্লিকের প্রতিক্রিয়া জানতে চান। এবার ফ্লিক বেশ ঠান্ডা মাথায় বলেছেন, ‘অনেক কিছু ঘটেছে। এ নিয়ে আমার আর কোনো অভিমত নেই। ব্যাপারটা আমি অন্যদিক থেকেও (জাতীয় দলের কোচ হিসেবে) বুঝতে পারছি। এটা আমার জন্য সহজ নয়, ফুয়েন্তের জন্যও সহজ নয়। তবে আমি আমার খেলোয়াড়কে রক্ষা করতে চাই, তাকে সমর্থন করতে চাই। এ কারণেই আমি কিছুটা জোর গলায় বলেছি। এ নিয়ে অনুতপ্ত নই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ত য় দল

এছাড়াও পড়ুন:

দুপুরে মা ভাত নিয়ে এসে দেখেন ছেলে নেই, সন্ধ্যায় পুকুরে মিলল লাশ

দুপুরে ছেলের জন্য ডিম রান্না করছিলেন নাজমা বেগম। বাড়ির বাইরের চৌকিতে বসে থাকা ছেলেকে ভাত খাওয়াবেন। কিন্তু ভাত হাতে বেরিয়ে এসে দেখেন, চৌকি খালি, ছেলে নেই। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। অবশেষে সন্ধ্যায় নিখোঁজ ছেলের লাশ উদ্ধার করা হয় বাড়ির পাশের পুকুর থেকে।

এ ঘটনা ঘটেছে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে নাঈম ইসলাম (২২) নামের ওই তরুণের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল। সন্ধ্যা সাতটার দিকে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

পরিবার, প্রতিবেশী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর গ্রামের দিনমজুর ছকমাল হোসেন ও গৃহবধূ নাজমা বেগমের দ্বিতীয় ছেলে নাঈম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। পরে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। ছয় মাস আগে একই উপজেলার খিয়ারজুম্মা এলাকায় তাঁর বিয়ে হয়। এরপর আবারও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে যান। নাঈম বাড়িতেই থাকতেন। আজ বেলা দুইটার দিকে তাঁর মা ঘরের বাইরে একটি চৌকিতে তাঁকে বসিয়ে রেখে রান্না করতে যান। খাবার নিয়ে বাইরে এসে দেখেন, নাঈম নেই। এরপর খোঁজাখুজি শুরু হয়। আশপাশে না পাওয়ায় সন্দেহ হলে স্থানীয় লোকজন বাড়ির পাশের পুকুরে খোঁজা শুরু করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে খবর পেয়ে তারাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রংপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল এসে পুকুর থেকে নাঈমের লাশ উদ্ধার করে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় নাঈমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরে তাঁর নিখোঁজ হওয়ার খবরে আশপাশের গ্রামের মানুষ পুকুরপাড় ও বাসায় ভিড় করে আছেন। লাশ উদ্ধারের পর পুরো এলাকায় শোক নেমে আসে।

নাঈমের মা নাজমা বেগম বিলাপ করছিলেন, ‘বাবা ভাত খাইবে, মুই ডিম আন্ধিনু (রান্না করা)। কায় খাইবে মোর ভাত-ডিম? জানলে বাবাক একলায় থুনু না হয়। মোর বাবাটাক কোনঠে পাইম? বাবাটাক যে হারে ফেলানু। নাঈম বাবা, কলিজার বাবা, তুই আয়, ভাত খাবু!’ বলেই মূর্ছা যান তিনি। পাশে বাকরুদ্ধ বসে আছেন নাঈমের বাবা ছকমাল হোসেন।

লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য মিলন রহমান বলেন, ‘তাঁর পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই। নাঈমের এমন মৃত্যু বেদনাদায়ক। লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমাদের সর্তক থাকতে হবে, যাতে এমন ঘটনা না ঘটে।’

তারাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের লিডার রহমত আলী বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রংপুর থেকে ডুবুরিদল এলে নাঈমের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর লাশ পরিবারে কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোল করার পর পেনাল্টি হজম এবং তারপর দুঃখ প্রকাশ নেইমারের
  • ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের নতুন দাবি
  • কক্সবাজারের পেনোয়ার গান কেন আপনাকে শুনতে হবে
  • ‘সেঞ্চুরিতে’ সেঞ্চুরির ফুল ফুটিয়ে মুমিনুলের পাশে মুশফিকুর
  • পেটের জ্বালাপোড়ায় এখনই যা করবেন
  • আমানতের টাকা ফেরতের দাবিতে সপ্তম দিনের মতো মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ঘেরাও
  • সলিল চৌধুরীর ১০০ বছর, সুরের জাদুকরকে কতটা চেনেন
  • অলরাউন্ড নেওয়াজ জেতালেন পাকিস্তানকে
  • স্বামীর জন্য পাঞ্জাবির নকশা করতে গিয়ে শুরু, এখন তিনি সফল উদ্যোক্তা
  • দুপুরে মা ভাত নিয়ে এসে দেখেন ছেলে নেই, সন্ধ্যায় পুকুরে মিলল লাশ