ব্যাংকের এমডির দায়িত্ব গ্রাহকের আস্থা রক্ষা ও সতর্কভাবে ঋণ অনুমোদন করা। কিন্তু রূপালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ পদে থাকার সময় উল্টো কাজ করেছেন বলে সাম্প্রতিক এক তদন্তে উঠে এসেছে। ব্যাংকটির এমডি থাকার সময় কাগুজে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে সেটির নামে ২ কোটি ১০ লাখ টাকার ঋণ অনুমোদন দেন ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। ঋণ ছাড়ের তিন মাসের মধ্যেই সেই টাকার ৮৭ লাখ এমডির নিজের ও তাঁর ছেলের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরিত হয়। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে মে—এই পাঁচ মাসের মধ্যেই এই অনিয়ম ঘটে। শুধু তা–ই নয়, রূপালী ব্যাংকের অন্য গ্রাহকের টাকাও তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের হিসাবে জমা হওয়ার প্রমাণ মিলেছে।

ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনায় এমন চিত্র পেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বিশেষ পরিদর্শনে এমন চিত্র ধরা পড়ার পর তাঁর বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইতিমধ্যে রূপালী ব্যাংককে চিঠি দিয়ে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংকটির বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে বিএফআইইউ।

বিএফআইইউ যখন এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে, তখন তিনি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে। সেখান থেকে তিনি গত জুলাইয়ে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে হঠাৎ পদত্যাগ করেন।

আমি ১০ বছরে ৭ কোটি টাকা শুধু বেতন পেয়েছি। এ ছাড়া বাড়িভাড়া পেয়েছি ২ কোটি টাকা ও ১ কোটি টাকা পেনশন পেয়েছি। এসব টাকা বিভিন্ন সময়ে আমার চাচাতো ভাইকে ধার দিয়েছি। এসব টাকা পরিবারের অন্য সদস্যদের হিসাবে রাখা হয়। আমার সব আয় বৈধ। যে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ হয়েছিল, সেই টাকা শোধ করা হচ্ছে।—ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, সাবেক এমডি, রূপালী ব্যাংক।

গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইসলামী ব্যাংককে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোনালী ও রূপালী—দুই বড় সরকারি ব্যাংকের এমডি ছিলেন ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। বৃহৎ ব্যাংক পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক তাঁকে ইসলামী ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল।

ঋণের টাকা নিজেদের হিসাবে

মাস করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার ৯ নং বক্স নগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি বাণিজ্যিক লাইসেন্স সংগ্রহ করে। এরপর ওই বছরের সেপ্টেম্বরে পাঁচ হাজার টাকা জমা দিয়ে রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় একটি হিসাব খোলে। রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখাটি প্রধান কার্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায়। এমডি বসতেন চতুর্থ তলায়।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় প্রতিষ্ঠানটি ৩ কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন করে। প্রতিষ্ঠানটি সিসি বা ক্যাশ ক্রেডিট ঋণ চায়, যাতে নগদে উত্তোলন করা যায় বা অন্য হিসাবে স্থানান্তর করা যায়। ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির নামে ২ কোটি ১০ লাখ টাকার ঋণ অনুমোদন করেন তৎকালীন এমডি ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। এরপর একই বছরের ১৮ মে মাস করপোরেশন থেকে ইশামনি ট্রেড লিংক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে ৪০ লাখ টাকা পাঠানো হয়। সেদিনই ইশামনি ট্রেড লিংক ৩৭ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেয় জুন্নুন সাফওয়ানের নামে থাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখার একটি হিসাবে। পরদিন অর্থাৎ ১৯ মে মাস করপোরেশন ৫০ লাখ টাকা পাঠায় ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের নামে থাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখার একটি হিসাবে। জুন্নুন সাফওয়ান হলেন ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের ছেলে।

বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এমডি ও তাঁর চাচাতো ভাই ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তবে প্রকৃত সুবিধাভোগী ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ নিজে। রূপালী ব্যাংকের এই ঋণ এখন খেলাপির তালিকায়। ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ইসলামী ব্যাংকের পদ ছেড়ে দেওয়ার পর ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হয়েছে।

তবে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ১০ বছরে ৭ কোটি টাকা শুধু বেতন পেয়েছি। এ ছাড়া বাড়িভাড়া পেয়েছি ২ কোটি টাকা ও ১ কোটি টাকা পেনশন পেয়েছি। এসব টাকা বিভিন্ন সময়ে আমার চাচাতো ভাইকে ধার দিয়েছি। এসব টাকা পরিবারের অন্য সদস্যদের হিসাবে রাখা হয়। আমার সব আয় বৈধ। যে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ হয়েছিল, সেই টাকা শোধ করা হচ্ছে।’

সুদ মওকুফ করেও সুবিধা নেন এমডি

নথিপত্র অনুযায়ী, রূপালী ব্যাংক ২০১২ সালে ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের (হানিফ ফ্লাইওভার) ৫৫০ কোটি টাকার শেয়ারে বিনিয়োগ করে। ২০২০ সালে তৎকালীন এমডি ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের সিদ্ধান্তে প্রতিষ্ঠানটির ৩৬৪ কোটি টাকার লভ্যাংশ মওকুফ করা হয়। যা নজিরবিহীন ও সন্দেহজনক বলে অভিহিত করেছে বিএফআইইউ। তবে জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন ও ব্যাংকগুলোর মধ্য একটি চুক্তির আওতায় এসব লভ্যাংশ বা সুদ মওকুফ করা হয়।

তবে ২০২৪ সালের ২৭ জুন ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের নামে থাকা ইউসিবি ব্যাংকের হিসাবে ২০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা জমা করে ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।

বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে লভ্যাংশ মওকুফের পর তাঁর ব্যক্তিগত হিসাবে ওই প্রতিষ্ঠানের হিসাব থেকে অর্থ জমা হওয়ার বিষয়টি সন্দেহজনক। তৎকালীন এমডি ব্যাংকের স্বার্থ না দেখে লভ্যাংশ মওকুফের সিদ্ধান্তটি কোনো আর্থিক লেনদেন বা ব্যক্তিগত সুবিধার বিনিময়ে গৃহীত হতে পারে।

ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাকরি শেষে আমি ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডে যোগ দিই। কর পরিশোধ করার পর ছয় মাসের বেতন তারা একবারে দেয়। সেই ২০ লাখ টাকা আমার হিসাবে দেওয়া হয়। এখানে অনিয়মের কিছু নেই।’

স্ত্রী ও সন্তানদের হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন

ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের স্ত্রী মর্জিনা বেগম পেশায় গৃহিণী। তাঁর নামে ২০১৫ সালে ইউসিবি ব্যাংকে একটি হিসাব খোলা হয়। এরপর হিসাবটিতে বিভিন্ন সময় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা জমা করা হয় এবং ১ কোটি ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। এই হিসাবে বিভিন্ন সময় তাঁর স্বামী ও ছেলেদের হিসাব থেকে অর্থ জমা হয়েছে বলে বিএফআইইউর তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

এ ছাড়া ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের ছেলে জুন্নুন সাফওয়ানের নামে ইউসিবিতে একটি হিসাব খোলা হয় ২০১৫ সালে। এই হিসাবে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা জমা হয় এবং ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা উত্তোলন হয়। আরেক ছেলে জুনায়েদ জুলকারনায়েন টিয়ানের নামে ইউসিবি ব্যাংকের একটি হিসাবে ২ কোটি ৮২ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে বিএফআইইউ।

বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ পার্কিং করার জন্য এসব হিসাব খোলা হয়। এসব অপরাধ অর্থ পাচারসংক্রান্ত। গত জুলাইয়ে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদসহ তাঁর স্ত্রী মর্জিনা বেগম, দুই পুত্র জুন্নুন সাফওয়ান ও জুনায়েদ জুলকারনায়েন টিয়ান, কন্যা তাসমিয়া তারান্নুম নওমির ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়। এরপর ১৭ জুলাই তিনি পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, ব্যক্তিগত কারণে এ সিদ্ধান্ত।

জানতে চাইলে রূপালী ব্যাংকের বর্তমান এমডি কাজী মো.

ওয়াহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন,‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার পর আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে আর কারা এর সঙ্গে জড়িত। এরপর বিষয়টি সরকারকে জানানো হবে। এই ঋণ এত দিন খেলাপি ছিল। সম্প্রতি ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত ঋণটি পুরোপুরি শোধ হয়ে যাবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ন ন ন স ফওয় ন ব এফআইইউর ব ভ ন ন সময় ব এফআইইউ পর ব র র এসব ট ক র অন য মওক ফ ন এমড র একট প রথম ইউস ব ইসল ম তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বেবি শার্ক গান বানিয়ে কোম্পানির বাজার মূলধন প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা

যাদের বাসায় এখন ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশু আছে, তাঁরা জানেন, গত এক দশকে সেই শিশুরা কোন কোন ছড়া/গান শুনেছে। এ প্রজন্ম ইউটিউব ভিডিওর সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। ফলে এই বয়সী শিশুদের জন্য কনটেন্ট বানিয়ে অনেকেই বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।

বিষয়টি হলো ‘বেবি শার্ক’ নামের ৯০ সেকেন্ডের এক শিশুতোষ গানের ভিডিও এখন ইউটিউবের সর্বাধিক দেখা কনটেন্ট, ভিউ ছাড়িয়েছে ১৬ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৬০০ কোটি। ২০২০ সালেই এটি ইউটিউবের সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিও কনটেন্টের স্বীকৃতি পায়। এরপর তা থেমে থাকেনি—অগ্রগতি চলছেই।

ফলে এই ভিডিও যারা বানিয়েছে, অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান পিংকফংয়ের বাজার মূলধন ৪০০ মিলিয়ন ডলার বা ৪০ কোটি ডলার বা ৪ হাজার ৯০৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ারবাজারে পিংকফংয়ের লেনদেন শুরু হয়। প্রথম দিনেই শেয়ারের দাম ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। এর মূল কারণ যে এই বেবি শার্ক ডু ডু ডু, তা নিশ্চয়ই আর বলার অপেক্ষা রাখে না। খবর বিবিসি।

এর জনপ্রিয়তা কেমন, সে বিষয়ক এক বাস্তব উদাহরণ দেওয়া যাক। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের এক মা ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, সন্তানকে ঘুম পাড়ানোর পর বা অনেক ক্ষেত্রে কাজের সময় তাঁর কানে যেন এক শিশুতোষ ছড়াগান বাজতে থাকে। সেটি হলো, বেবি শার্ক ডু ডু ডু, বেবি শার্ক। যাদের বাড়িতে ইন্টারনেট এবং ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশু আছে, তাঁদের মধ্যে খুব কম মানুষই আছেন, যিনি এই গান শোনেননি। আরও পরিষ্কারভাবে বললে, যাদের বাড়িতে ইন্টারনেট আছে, সেই বাড়ির ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুরা এই গান শোনেনি, এমন নজির খুঁজে পাওয়া কঠিন।

এই ভিডিও দুনিয়াজোড়া ঠিক কেমন আলোড়ন তুলবে, সেটি নিশ্চিতভাবেই কেউ আগে ভাবেননি। ২০১৬ সালের জুনে ভিডিওটি প্রকাশের অনুমতি দেন পিংকফংয়ের প্রধান নির্বাহী কিম মিন-সিওক। তিনি বলেন, ‘আমরা ভাবিনি, এটি অন্য কনটেন্ট থেকে আলাদা কিছু হবে। পরে বুঝেছি, এটি আমাদের বৈশ্বিক যাত্রাপথের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।

২০১০ সালে ‘স্মার্টস্টাডি’ নামে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানি মূলত ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করত। মাত্র তিনজন কর্মচারী নিয়ে শুরু করে পরবর্তীকালে ছোট শিশুদের দিকে মনোযোগ দিয়ে কনটেন্টে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে। একপর্যায়ে কর্মীর সংখ্যা ১০০ জনে পৌঁছায়। এরপর তারা সহজ, শিক্ষাভিত্তিক গেম ও কনটেন্টকে অগ্রাধিকার দেয় এবং তখনই বেবি শার্কের বাজার মাত করে।

ব্রিটিশ মিডিয়া বিশ্লেষক কেভিন চিউর মতে, বেবি শার্ক গানটি ‘শিশুদের কাছে আকর্ষণীয়, যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে সম্ভবত বিরক্তিকর। তবে কিম মিন-সিওকও এই গানে আসক্তি ধরানোর ক্ষমতা সম্পর্কে অবগত। তিনি বলেন, ‘এটি কে-পপ গানের মতো—খুব দ্রুতলয়ের ও ছন্দময়। ফলে আসক্তি তৈরি করতে পারে।’

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শিশুদের মধে৵ এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। অনলাইনে এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বেবি শার্ক গানটি ইউটিউবের সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিওর স্বীকৃতি অর্জন করে। এমনও হয়েছে, ভিডিওটি প্রকাশের পর প্রথম দিকে এই কোম্পানি যত আয় করেছে, তার প্রায় অর্ধেক এসেছে এই গান থেকে। সেই সঙ্গে নিত্যনতুন কনটেন্ট তো তারা বানিয়েছে।

একটি গাননির্ভর নয়

২০২২ সাল থেকে পিংকফং কোম্পানির অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি যেমন বেবেফিন ও সিলুকেরও দ্রুত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। তবে কোরিয়া ইউনিভার্সিটির প্রভাষক মিন জাং কিম বলেন, কোম্পানিকে প্রমাণ করতে হবে, এই সফলতা শুধু বেবি শার্কের ওপর নির্ভরশীল নয়।

কিম মিন-সিওকের জোর দাবি, বেবি শার্ক ছাড়া অন্যান্য কনটেন্ট থেকেও তাদের ব্যবসা বাড়ছে। বর্তমানে পিংকফংয়ের আয়ের প্রায় এক-চতুর্থাংশ আসছে বেবি শার্ক থেকে। বেবেফিন থেকে আসছে কোম্পানির আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ।

স্টক মার্কেটে অভিষেক থেকে প্রায় ৫২ মিলিয়ন বা ৫ কোটি ২০ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছে পিংকফং। কিম জানান, এই অর্থ কনটেন্ট ও চরিত্রের উন্নয়নে ব্যবহৃত হবে।

উদ্ভাবনে পিছিয়ে থাকতে চায় না তারা। মানুষের পছন্দ কী, সে বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করে প্রযুক্তিভিত্তিক কনটেন্ট বানাতে চায় তারা। কিম বলেন, অনেক নির্মাতা সারা জীবন ধরে যে স্বপ্ন দেখেন, পিংকফং এরই মধ্যে তা অর্জন করে ফেলেছে। এখন বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে হবে, তারা কেবল একটি হিট গান–নির্ভর কোম্পানি নয়।

আইনি চ্যালেঞ্জ

পিংকফংয়ের যাত্রাপথ একেবারে কণ্টকমুক্ত ছিল না। ২০১৯ সালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। অভিযোগ—এক মার্কিন সংগীতজ্ঞের সুর তারা নকল করেছে; কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার সুপ্রিম কোর্ট এই অভিযোগ খারিজ করে দেয়। আদালত বলেন, জনপরিসরে প্রচলিত লোকগান থেকে তারা সুর নিয়েছে।

আদালতের এই রায়ে তারা জোর পায়। সেই ধারাবাহিকতায় এখন তারা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোল করার পর পেনাল্টি হজম এবং তারপর দুঃখ প্রকাশ নেইমারের
  • নিজেকে বোরিং পারসন মনে করেন মুশফিক
  • ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের নতুন দাবি
  • কক্সবাজারের পেনোয়ার গান কেন আপনাকে শুনতে হবে
  • ‘সেঞ্চুরিতে’ সেঞ্চুরির ফুল ফুটিয়ে মুমিনুলের পাশে মুশফিকুর
  • আমানতের টাকা ফেরতের দাবিতে সপ্তম দিনের মতো মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ঘেরাও
  • বেবি শার্ক গান বানিয়ে কোম্পানির বাজার মূলধন প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা
  • সলিল চৌধুরীর ১০০ বছর, সুরের জাদুকরকে কতটা চেনেন
  • অলরাউন্ড নেওয়াজ জেতালেন পাকিস্তানকে
  • স্বামীর জন্য পাঞ্জাবির নকশা করতে গিয়ে শুরু, এখন তিনি সফল উদ্যোক্তা