খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার দুর্গম জঙ্গলে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) গোপন আস্তানার সন্ধান পেয়েছে সেনাবাহিনী। আজ সোমবার ভোরে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে অস্ত্র, গোলাবারুদ, যোগাযোগের সরঞ্জামসহ নানা উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ ভোর পাঁচটার দিকে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর একটি দল পানছড়ি উপজেলার যুবনেশ্বরপাড়া এলাকার গভীর জঙ্গলে অভিযান চালায়। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ইউপিডিএফের শীর্ষ গ্রুপ কমান্ডার সুমেন চাকমা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

পরবর্তী সময়ে তল্লাশি চালিয়ে সেনাবাহিনী ১টি পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন, ২টি গুলি (অ্যামোনিশন), ১৫টি ব্যানার, ২টি ওয়াকিটকি চার্জার, ২টি মুঠোফোন, ধারালো অস্ত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অভিযানের সময় ইউপিডিএফ স্থানীয় নারী-পুরুষ ও শিক্ষার্থীদের জোর করে সেনাবিরোধী স্লোগান দিতে বাধ্য করে। আজকের ঘটনাসহ বিগত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণে এটি স্পষ্ট যে ইউপিডিএফ ও এর অঙ্গসংগঠনসমূহ পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সুপরিকল্পিতভাবে স্থানীয় নারী ও স্কুলপড়ুয়া কোমলমতি শিশুদেরও নানা উপায়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে বাধ্য করছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউপিডিএফের পালিয়ে যাওয়া সশস্ত্র সদস্যদের সন্ধানে সেনাবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১৫ সন্ত্রাসী নিহত

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক পৃথক দুটি অভিযানে ১৫ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী: ফিল্ড মার্শাল মুনির

গ্রেপ্তার ও বিচার থেকে আজীবন দায়মুক্তি পেলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান

আইএসপিআর জানায়, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর এই অভিযান দুটি চালানো হয়। নিহত সন্ত্রাসীরা ‘ভারতীয় ছায়া বাহিনী’ ফিতনা আল খাওয়ারিজের সদস্য। খবর দ্য ডনের।

পাকিস্তান নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) সন্ত্রাসীদের বোঝাতে ‘ফিতনা আল খাওয়ারিজ’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকে।

আইএসপিআর-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, খাইবার পাখতুনখওয়ার ডেরা ইসমাইল খান জেলার কুলাচি এলাকায় প্রথম অভিযানটি চালানো হয়। এখানে খারজি চক্রের নেতা আলম মেহসুদ সহ ১০ সন্ত্রাসী নিহত হয়। অপর অভিযানটি চালানো হয় উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার দত্ত খেল এলাকায়। এখানে আরো পাঁচ সন্ত্রাসী নিহত হন।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ওই এলাকায় ভারতীয় মদদপুষ্ট আরো কোনো খারজি লুকিয়ে আছেন কি না, তা নিশ্চিত হতে নিবিড় তল্লাশি অভিযান চলছে।

এসব অভিযানে সফলতা পাওয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “জাতীয় ঐক্যমত্যের সঙ্গে বিদেশি সমর্থিত সন্ত্রাসীদের নির্মূল করার জন্য কাজ অব্যাহত থাকবে।”

তিনি সন্ত্রাসী চক্রের নেতাকে হত্যায় নিরাপত্তা বাহিনীর সফল কৌশলের প্রশংসা করেছেন। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য থেকে মনোযোগ সরানোর রাজনৈতিক পদক্ষেপ সহ্য করা হবে না।” 

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফও নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরীফ বলেন, “আজম-ই-ইস্তেহকামের দৃষ্টিভঙ্গির অধীনে, নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করছে। আমরা দেশ থেকে সকল ধরনের সন্ত্রাসবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”

এর আগে গত সপ্তাহে আইএসপিআর জানিয়েছিল যে, নিরাপত্তা বাহিনী খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে পৃথক তিনটি অভিযান চালিয়ে অন্তত ২৪ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানে বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান প্রদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরের পর তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শেষ করে সন্ত্রাসী হামলা বৃদ্ধি করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাকিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১৫ সন্ত্রাসী নিহত