মার্কস অলরাউন্ডার: সিলেট, নাটোর ও পাবনা অঞ্চলে কবে কোথায় প্রতিযোগিতা
Published: 6th, October 2025 GMT
বাংলাদেশের প্রতিভাবান শিশু-কিশোরদের খোঁজে দেশব্যাপী চলছে দেশের অন্যতম বড় প্ল্যাটফর্ম ‘মার্কস অলরাউন্ডার’ প্রতিযোগিতা। বরাবরের মতো এবারও সাড়া ফেলেছে আয়োজনটি। যা আঞ্চলিক, বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়—এ তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে এর আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশের সব স্কুল-কলেজ (প্লে গ্রুপ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) এবং সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।
ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, যশোর, মাগুরা, নোয়াখালী ও ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের ১০০টি স্থানে আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিযোগিতার গ্রুপ ও বিষয়
প্লে থেকে চতুর্থ শ্রেণি—জুনিয়র স্কুল (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, গল্প বলা); পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি—মিডল স্কুল (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা) এবং নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি—হাই স্কুল ও কলেজ (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা।)
সিলেট, নাটোর ও পাবনা অঞ্চলের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার ও শনিবার (১০ ও ১১ অক্টোবর)। নিম্নলিখিত প্রতিটি ভেন্যুতে সকাল আটটা থেকে শুরু হবে প্রতিযোগিতা।
তারিখ: ১০ অক্টোবর, শুক্রবার
ভেন্যু: পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয়, সিলেট।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: সিলেট জেলা সদরের একাংশ (মিরের ময়দান, বাগবাড়ি, মদিনা মার্কেট, আখালিয়া, নেহারিপাড়া, টুকেরবাজার, বাধাঘাট), জালালাবাদ থানা, বিমানবন্দর থানা, গোয়াইনঘাট থানা ও কোম্পানীগঞ্জ থানা।
ভেন্যু: কিশোরী মোহন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, নয়াসড়ক, সিলেট।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: সিলেটের শাহপরান থানা, জৈন্তাপুর থানা ও সদরের একাংশ (নয়াসড়ক, জেল রোড, মিরাবাজার, চৌহাট্টা, শাহি ঈদগাহ, বালুচর, শিবগঞ্জ, বন্দরবাজার)।
ভেন্যু: নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা সরকারি কলেজ, সদর উপজেলা, নাটোর।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: নাটোর জেলার শিক্ষার্থীরা।
তারিখ: ১১ অক্টোবর, শনিবার
ভেন্যু: দ্য এইডেড হাই স্কুল, তাঁতিপাড়া, জিন্দাবাজার, সিলেট।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: সিলেট সদরের একাংশ (মেডিকেল রোড, কাজলশাহ, রিকাবীবাজার, নবাব রোড, শেখঘাট, লামাবাজার, জিন্দাবাজার, ভাতালিয়া, ঘাসিটুলা, শামিমাবাদ), কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ থানা।
ভেন্যু: লালাবাজার দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোয়ালাবাজার, শেরপুর, জগন্নাথপুর, গোলাপগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ থানা।
ভেন্যু: রাধানগর মজুমদার একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ (আর এম স্কুল), লম্বাপাড়া রোড, পাবনা।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: পাবনা জেলা।
পুরস্কার
মার্কস অলরাউন্ডারে তিনটি গ্রুপ থেকে সেরা তিন অলরাউন্ডারের প্রত্যেকে পাবে ১৫ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। আর বিভিন্ন পর্যায়ের বিজয়ীরা পাবে মোট ১ কোটি টাকার বেশি উপহার ও শিক্ষাবৃত্তি।
গ্র্যান্ড ফিনালেতে তিনটি গ্রুপের ফার্স্ট রানার্সআপ এবং সেকেন্ড রানার্সআপের প্রত্যেকে পাবে ৫ লাখ এবং ৩ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। তিনটি গ্রুপের ছয়টি বিষয়ের প্রতিটিতে সেরা ৩ জন করে মোট ৫৪ জন সেরা পারফরমারের প্রত্যেকে পাবে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক। জাতীয় পর্যায়ে তিনটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাবে একটি করে কম্পিউটার।
আয়োজকেরা জানান, ‘মার্কস অলরাউন্ডার’ কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়। এটি বাংলাদেশের শিশু-কিশোরদের প্রতিভা মেধা, সংস্কৃতি ও আত্মবিশ্বাস যাচাইয়ের দেশের অন্যতম বড় প্ল্যাটফর্ম। আঞ্চলিক থেকে জাতীয় পর্যায়ে এই প্রতিযোগিতা প্রতে৵ক অংশগ্রহণকারীর জন্য নতুনভাবে শেখার ও বেড়ে ওঠার সুযোগ তৈরি করছে।
বিস্তারিত জানতে এবং রেজিস্ট্রেশন করতে ভিজিট করতে হবে। ফোন করা যাবে (সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা) ০৯৬১৪৫১৬১৭১ নম্বরে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক র শ ক ষ র থ র অন ষ ঠ ত
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম বিশ্বকাপের নায়ক বার্নার্ড জুলিয়েন আর নেই
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট আবার হারালো তার এক সোনালি সন্তানকে। ১৯৭৫ সালের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম নায়ক, ক্যারিবীয় ক্রিকেটের সেই স্টাইলিশ অলরাউন্ডার বার্নার্ড জুলিয়েন চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ট্রিনিদাদের ভ্যালসাইনে ৭৫ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তার প্রস্থান যেন এক যুগের অবসান; সেই এক সময়ের, যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুধু ক্রিকেট খেলত না, ক্রিকেট অধিকার করত। আর সেই দাপুটে সূচনার গল্পে জুলিয়েন ছিলেন এক অবিচ্ছেদ্য নাম।
আরো পড়ুন:
ভোট দেননি তামিম
বিসিবি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ
১৯৭৫, যে বছর ইতিহাস লিখেছিলেন জুলিয়েন:
বিশ্বকাপের প্রথম আসর, ১৯৭৫ সাল। কেউ জানত না এই নতুন ফরম্যাটের ক্রিকেট ভবিষ্যতে এমন ইতিহাস রচনা করবে। কিন্তু বার্নার্ড জুলিয়েন জানতেন, এটি তার নিজের পরিচয় তুলে ধরার মঞ্চ। বাঁহাতি এই সিমার বলকে নাচাতে পারতেন দু’দিকেই, হাতে ছিল দারুণ ব্যাটিং সেন্স আর ফিল্ডিংয়ে ছিলেন একদম চঞ্চল।
গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার পরিসংখ্যান- ৪ উইকেট ২০ রানে। এরপর সেমিফাইনালে নিউ জিল্যান্ডকে ভস্ম করে শিকার করেন ৪ উইকেট ২৭ রানে। দুটি ম্যাচই ছিল ক্লাইভ লয়েডের দলের ফাইনালে ওঠার ভিত্তি।
আর লর্ডসে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, জুলিয়েনের ব্যাট থেকে আসে মূল্যবান ২৬ রান, যা দলের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে বড় ভূমিকা রাখে। সেদিনের জয় দিয়েই শুরু হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সাম্রাজ্যের উত্থান। যে সাম্রাজ্যের প্রথম সৈনিকদের একজন ছিলেন বার্নার্ড জুলিয়েন।
ক্লাইভ লয়েডের আবেগঘন স্মৃতিচারণ:
সহযোদ্ধা ও অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড তাকে স্মরণ করলেন গভীর ভালোবাসায়, “ও সবসময় শতভাগ দিতো, দায়িত্ব থেকে কখনো পিছু হটেনি। ব্যাট হাতে বা বল হাতে আমি সবসময় তার ওপর নির্ভর করতে পারতাম। সে ছিল প্রকৃত অর্থেই এক সম্পূর্ণ ক্রিকেটার।”
লয়েড আরও বলেন, “ওর মধ্যে ছিল আনন্দ, ছিল বিনয়। লর্ডসে একবার টেস্ট জেতার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা দর্শকদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলাম, অটোগ্রাফ দিয়েছিলাম। সেই আনন্দে সবার আগে ছিল জুলিয়েন। মানুষ তাকে ভালোবাসতো, সম্মান করতো, যেখানেই গেছি।”
ক্ষণজীবী কিন্তু উজ্জ্বল এক ক্যারিয়ার:
জুলিয়েনের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ছিল মাত্র চার বছরের, ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত। এই সময়ে তিনি খেলেছেন ২৪ টেস্ট ও ১২ ওয়ানডে। টেস্টে ৮৬৬ রান ও ৫০ উইকেট, ওয়ানডেতে ৮৬ রান ও ১৮ উইকেট; সংখ্যায় হয়তো বিশাল নয়, কিন্তু প্রভাব ছিল বিশুদ্ধ স্বর্ণের মতো।
তিনি ছিলেন সেই যুগের অংশ, যখন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে ছন্দ, সাহস আর গর্ব এক হয়ে উঠেছিল। যে সময়ের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছিল বিশ্ব ক্রিকেটের অপ্রতিরোধ্য প্রতীক।
শ্রদ্ধা জানাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড:
ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের সভাপতি কিশোর শ্যালো বলেন, “বার্নার্ড জুলিয়েনকে সম্মান জানাতে গিয়ে আমরা শুধু একজন ক্রিকেটার নয়, এক অধ্যায়ের প্রতিফলনকেও স্মরণ করছি। তার জীবন প্রমাণ করে, উদ্দেশ্যনিষ্ঠ জীবন কখনো শেষ হয় না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। জুলিয়েন আমাদের ক্রিকেট ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবেন, যে উত্তরাধিকার কখনো ম্লান হবে না।”
এক উত্তরাধিকারের নাম- বার্নার্ড জুলিয়েন:
বার্নার্ড জুলিয়েনের গল্প কেবল একজন ক্রিকেটারের নয়, এটি এক জাতির জেগে ওঠার গল্প। তিনি খেলেছিলেন এমন এক সময়, যখন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট শিখছিল নিজের ছন্দে নাচতে। আর সেই সুরে তিনি ছিলেন প্রথম তালবাদক।
আজ তিনি নেই, কিন্তু তার বলের সুইং, ব্যাটের দৃঢ়তা, মাঠে ছুটে যাওয়া সেই প্রাণচঞ্চল হাসি; সবই রয়ে যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের স্মৃতির পাতায়।
ঢাকা/আমিনুল