কীভাবে সংক্রমণ ছড়ায়

নাক, কান, গলা অর্থাৎ মাথার যেকোনো জায়গা, যা মস্তিষ্কের কাছাকাছি অবস্থিত, সেসব স্থানে সংক্রমণ হলে তা ভেতর দিকে ছড়িয়ে পড়ে মেনিনজাইটিস হতে পারে। দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত লেগে মস্তিষ্ক পর্যন্ত জীবাণুর প্রবাহ বাধাহীন হয়ে মেনিনজাইটিস হতে পারে। আবার শরীরের অন্য স্থানের সংক্রমণ রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে জটিলতা হিসেবেও হতে পারে মেনিনজাইটিস।

কীভাবে বুঝবেন, যা করবেন

মেনিনজাইটিসের প্রধান লক্ষণ তীব্র মাথাব্যথা। কিন্তু এটি একমাত্র লক্ষণ নয়। এর সঙ্গে তীব্র জ্বর, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, শরীরে লাল দাগ (র‌্যাশ) তৈরি হওয়া, অস্থিরতা বোধ করা ইত্যাদি লক্ষণ থাকে। তবে সব ক্ষেত্রে একই লক্ষণ একইভাবে প্রকাশ পায় না।

মেনিনজাইটিস একটি গুরুতর অসুস্থতা। মস্তিষ্ক তার যে আবরণ দ্বারা নিরাপত্তা পায়, সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। তবে ভাইরাসের কারণে হলে তীব্র মাথাব্যথা ও জ্বর হলেও সাপোর্টিভ চিকিৎসায় একসময় নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায়।

অপর দিকে ব্যাকটেরিয়া ও যক্ষ্মার জীবাণুর সংক্রমণে যে মেনিনজাইটিস হয়, সেটি গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি প্রাণঘাতীও হতে পারে।

জটিলতা

যেসব জটিলতার কারণে মেনিনজাইটিস বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে, তার তালিকা দীর্ঘ। ভাইরাসজনিত মেনিনজাইটিস সচরাচর গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি না করলেও যদি মস্তিষ্কের প্রদাহ তীব্র হয়, তবে তা প্রাণঘাতী হতে পারে।

ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে মস্তিষ্কের চারপাশে যে তরল থাকে, তার স্বাভাবিক প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে এবং মস্তিষ্ক ফুলে উঠতে পারে। এসব ঘটনায় নির্দিষ্ট লক্ষণ প্রকাশ পায়।

রোগীর চেতনার পরিবর্তন হয়। বিভিন্ন স্নায়বিক দুর্বলতা দেখা দেয়। রোগী অজ্ঞান হয়ে কোমায় চলে যেতে পারে। যক্ষ্মার জীবাণুর ফলে মেনিনজাইটিস সচরাচর দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার কারণ হয়। চিকিৎসা না হলে এটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রাণসংহারী হয়ে ওঠে।

চিকিৎসা

মেনিনজাইটিস প্রতিরোধের জন্য যেকোনো সংক্রমণ, বিশেষ করে নাক, কান, গলা ও মুখের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও দ্রুত চিকিৎসা জরুরি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। মাথায় আঘাত পেলে উপযুক্ত চিকিৎসা নিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হবে।

মাথাব্যথা হলেই তা মেনিনজাইটিস নয়। তবু মাথাব্যথা তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

ডা.

জহিরুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল

আরও পড়ুনকরলার পাতা কি সত্যিই ডায়াবেটিসে উপকারী৪ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স ক রমণ

এছাড়াও পড়ুন:

নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি, কালিগঞ্জে গ্রেপ্তার ১

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ তৈরির অভিযোগে মাহিদুল আলম (২৮) নামের এক গ্রাম পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাতের অভিযানে উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের তেতুইতলা এলাকার একটি কম্পিউটার দোকান থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

আরো পড়ুন:

প্রতারণা মামলায় অতিরিক্ত ডিআইজি হামিদুল কারাগারে

বগুড়ার সমন্বয়ক সাকিব খান গ্রেপ্তার

পরে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তার মাহিদুল আলম কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দড়িবাঘুন গ্রামের মো. আবুল বাশার খানের ছেলে। তিনি ওই ওয়ার্ডেই গ্রাম পুলিশ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

অভিযান চলাকালে পুলিশ দোকান থেকে একটি কালো রঙের কম্পিউটার, মনিটর, কিবোর্ড, মাউসসহ মোক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিবের নামে মোট ছয়টি অফিসিয়াল সিল জব্দ করে। এছাড়া নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদের ছয়টি রঙিন কপি, অনলাইনে করা আবেদনপত্রের তিনটি কপি, ইউনিয়ন পরিষদের প্যাড বই জব্দ করা হয়।

কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, অভিযান চালিয়ে মাহিদুলকে নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ তৈরি করার সময় হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, অজ্ঞাতনামা আরো ২–৩ জন সহযোগীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এ জালিয়াতি করে আসছিলেন।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন জানান, উদ্ধার হওয়া নকল সনদগুলোতে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলাউদ্দিন ও গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যাললের (গোয়েন্দা বিভাগ) নামে জাল সিল ব্যবহার করা হয়েছিল। এতে দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া বহু মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় পেনাল কোডের ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ৪৭২ ও ৪৭৪ ধারায় কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মাহিদুলকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ঢাকা/রফিক/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ