মেনিনজাইটিস কেন হয়, কীভাবে বুঝবেন এবং চিকিৎসা কী
Published: 6th, October 2025 GMT
কীভাবে সংক্রমণ ছড়ায়
নাক, কান, গলা অর্থাৎ মাথার যেকোনো জায়গা, যা মস্তিষ্কের কাছাকাছি অবস্থিত, সেসব স্থানে সংক্রমণ হলে তা ভেতর দিকে ছড়িয়ে পড়ে মেনিনজাইটিস হতে পারে। দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত লেগে মস্তিষ্ক পর্যন্ত জীবাণুর প্রবাহ বাধাহীন হয়ে মেনিনজাইটিস হতে পারে। আবার শরীরের অন্য স্থানের সংক্রমণ রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে জটিলতা হিসেবেও হতে পারে মেনিনজাইটিস।
কীভাবে বুঝবেন, যা করবেনমেনিনজাইটিসের প্রধান লক্ষণ তীব্র মাথাব্যথা। কিন্তু এটি একমাত্র লক্ষণ নয়। এর সঙ্গে তীব্র জ্বর, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, শরীরে লাল দাগ (র্যাশ) তৈরি হওয়া, অস্থিরতা বোধ করা ইত্যাদি লক্ষণ থাকে। তবে সব ক্ষেত্রে একই লক্ষণ একইভাবে প্রকাশ পায় না।
মেনিনজাইটিস একটি গুরুতর অসুস্থতা। মস্তিষ্ক তার যে আবরণ দ্বারা নিরাপত্তা পায়, সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। তবে ভাইরাসের কারণে হলে তীব্র মাথাব্যথা ও জ্বর হলেও সাপোর্টিভ চিকিৎসায় একসময় নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায়।
অপর দিকে ব্যাকটেরিয়া ও যক্ষ্মার জীবাণুর সংক্রমণে যে মেনিনজাইটিস হয়, সেটি গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি প্রাণঘাতীও হতে পারে।
জটিলতাযেসব জটিলতার কারণে মেনিনজাইটিস বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে, তার তালিকা দীর্ঘ। ভাইরাসজনিত মেনিনজাইটিস সচরাচর গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি না করলেও যদি মস্তিষ্কের প্রদাহ তীব্র হয়, তবে তা প্রাণঘাতী হতে পারে।
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে মস্তিষ্কের চারপাশে যে তরল থাকে, তার স্বাভাবিক প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে এবং মস্তিষ্ক ফুলে উঠতে পারে। এসব ঘটনায় নির্দিষ্ট লক্ষণ প্রকাশ পায়।
রোগীর চেতনার পরিবর্তন হয়। বিভিন্ন স্নায়বিক দুর্বলতা দেখা দেয়। রোগী অজ্ঞান হয়ে কোমায় চলে যেতে পারে। যক্ষ্মার জীবাণুর ফলে মেনিনজাইটিস সচরাচর দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার কারণ হয়। চিকিৎসা না হলে এটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রাণসংহারী হয়ে ওঠে।
চিকিৎসামেনিনজাইটিস প্রতিরোধের জন্য যেকোনো সংক্রমণ, বিশেষ করে নাক, কান, গলা ও মুখের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও দ্রুত চিকিৎসা জরুরি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। মাথায় আঘাত পেলে উপযুক্ত চিকিৎসা নিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হবে।
মাথাব্যথা হলেই তা মেনিনজাইটিস নয়। তবু মাথাব্যথা তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
ডা.
জহিরুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স ক রমণ
এছাড়াও পড়ুন:
একক ভিসায় ভ্রমণ করা যাবে জিসিসিভুক্ত ছয় দেশ, চালু হচ্ছে শিগগিরই
উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে, অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর—একক পর্যটন ভিসা চালু করতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলকভাবে এই ভিসা চালু করা হবে। এর নাম জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) অর্থ ও পর্যটনমন্ত্রী এবং আমিরাত পর্যটন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ বিন তৌক আল মারি সম্প্রতি এ খবর জানিয়েছেন।
তৌক আল মারি বলেন, জিসিসির একক পর্যটন ভিসাটি ইউরোপের শেনজেন ভিসার আদলে করা হচ্ছে। এ ভিসা নিয়ে পর্যটকেরা জিসিসির ছয়টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন। আঞ্চলিক সমন্বয় আরও গভীর করার কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে এই ভিসা চালু করা হচ্ছে। এতে একক পর্যটন গন্তব্য হিসেবে উপসাগরীয় অঞ্চলের আকর্ষণ বৃদ্ধি করবে।’
আমিরাতের সংবাদ সংস্থা ওয়ামকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তৌক আল মারি বলেন, পরীক্ষামূলক পর্ব শেষে দ্বিতীয় ধাপে জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা পর্যায়ক্রমে পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে ঠিক কবে থেকে জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা চালু হবে, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
গত ১৬ জুন তৌক আল মারি খালিজ টাইমসকে জানিয়েছিলেন, জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগির তা চালু হতে যাচ্ছে।
জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা চালু হলে বিদেশি পর্যটকেরা একক ভিসায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বাহরাইন, কাতার, ওমান ও কুয়েতে ভ্রমণ করতে পারবেন। কত দিনের জন্য এই ভিসা দেওয়া হবে বা খরচ কত পড়বে, তা-ও এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
পর্যটন ও ভ্রমণশিল্পের নেতারা মনে করছেন, এই ভিসা আঞ্চলিক পর্যটনশিল্প ও অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনবে। হাজার হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধিতেও সহায়তা করবে।