সব দল একমত হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

তিনি বলেন,“পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করার মতো ছয়টি পদ্ধতি রয়েছে। সব রাজনৈতিক দল একমত হতে পারলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়া সম্ভব। তবে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে মনোনয়ন বাণিজ্য, কালো টাকার প্রভাব থাকবে না। একমাত্র পিআর পদ্ধতি নির্বাচনের মাধ্যমে জবাবদিহিতামূলক শাসনব্যবস্থা ও জনগণের কাঙ্ক্ষিত প্রতিনিধি নির্বাচিত করা সম্ভব হবে।”

আরো পড়ুন:

ধূমপান যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি জামায়াতও ধর্মের জন্য ক্ষতিকর: আমিনুল

‘যারা দ্রুত নির্বাচন চায়, তাদের সঙ্গে ভারতের স্লোগান মিলে যায়’ 

সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা আয়োজিত ‘রুখে দাঁড়াও ভারতীয় আধিপত্যবাদ-শহীদ আবরার ফাহাদ দিবস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাগপার সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।

আবরার ফাহাদের স্মৃতিচারণ করে মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, “বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার সব সময় নামাজের জন্য শিক্ষার্থীদের ডাকতেন। তার চলাফেরা দেখে ছাত্রলীগের খুনিরা তাকে শিবির সন্দেহে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। মৃত্যুর আগে আবরার পানি চেয়েছে খুনিরা পানি পর্যন্ত দেয়নি। পুরান ঢাকায় শিবির সন্দেহে বিশ্বজিৎকেও প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আবরার ভারতের সাথে ফ্যাসিস্ট হাসিনার অবৈধ চুক্তির প্রতিবাদে তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিল, তার জন্যই একজন বুয়েট মেধাবী ছাত্র আবরার আজ নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। আবরার ফাহাদ আমাদের জন্য প্রেরণা। দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ভারতীয় আধিপত্যবাদকে আবরার ফাহাদ কখনো মেনে নিতে পারেনি।”

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, “জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার। বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোকে বদলে দিয়ে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে নতুন একটি রাষ্ট্র কাঠামো গঠন করতে হবে। এ সংস্কারের মধ্য দিয়ে এমন একটি রাষ্ট্রযন্ত্র তৈরি হবে, যেখানে নতুন করে আর কোনো ফ্যাসিস্ট কিংবা হাসিনার জন্ম হবে না।”

তিনি বলেন, “আসন্ন নির্বাচনে ইসলামী শক্তি ও দেশপ্রেমিক শক্তির মধ্যে যে সমঝোতার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, কোনো আধিপত্যবাদী শক্তি যেন সেই ঐক্যের পথে বাধা সৃষ্টি না করতে পারে। পাশাপাশি ভারতের সাথে সমতার ভিত্তিতে ও ন্যায্যতার মাধ্যমে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।”

এ সময় রাশেদ প্রধান বলেন, “আজ থেকে ছয় বছর আগে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ ছাত্রলীগের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল। ভারতের সাথে পতিত শেখ হাসিনার গোলামি চুক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া ছিল আবরারের অপরাধ! তার অপরাধ ছিল নামাজের জন্য শিক্ষার্থীদের ডাকা। ইসলামের পক্ষে ডাকার জন্যই শেখ হাসিনার নির্দেশে ভারতকে খুশি করার জন্য আবরারকে হত্যা করা হয়েছিল। আবরার আমাদের শিখিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় আধিপত্যবাদের কাছে এদেশের ছাত্র-জনতা মাথা নত করে না।”

জাগপার প্রকাশনা সম্পাদক এস এম জিয়াউল আনোয়ারের পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মহাসচিব মাওলানা জালালউদ্দিন আহমেদ, খেলাফত মজলিস নায়েবে আমির মাওলানা আহমেদ আলী কাসেমী, নেজামে ইসলামী পার্টি মহাসচিব মুসা বিন ইজহার, জাগপা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, জাগপার প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শফিকুল ইসলাম, হাজী মো.

হাসমত উল্লাহ, ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, শ্রমিক জাগপা সভাপতি আসাদুজ্জামান বাবুল ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম হাসু প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবর র ফ হ দ ল ইসল ম র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত: আলী রীয়াজ

জাতীয় জুলাই সনদ বাস্তবায়নপ্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে এবং গণভোট অনুষ্ঠানের বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

আজ রোববার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান–সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চতুর্থ দিনের আলোচনার শেষে এ কথা বলেন আলী রীয়াজ।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘তাদের সম্মতির জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। আমরা এটিকে বাস্তবায়নপ্রক্রিয়ার প্রথম বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি।’

অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, এর আগে ১১, ১৪ ও ১৭ সেপ্টেম্বর তিনটি বৈঠকের পর দলগুলোর পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার জন্য কিছু সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় শেষে আজকের বৈঠকে এসে গণভোট ও সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে দলগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন অবস্থান তৈরি হয়েছে।

সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত নতুন আইনসভার কাঠামো সম্পর্কেও কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে। আলী রীয়াজ বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে যে আইনসভা গঠিত হবে, সেটিকে এমন বৈশিষ্ট্য দিতে হবে, যাতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত সাংবিধানিক সংশোধনগুলো সহজে সম্পন্ন করা যায়। এ বিষয়েও কার্যত রাজনৈতিক দলগুলো একমত।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি জানান, আগে দলগুলোর একাংশ সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার কথা বললেও বর্তমানে অধিকাংশ দলই মনে করছে, এর আর প্রয়োজন না–ও হতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর ‘সহনশীলতা’ ও ‘অবস্থান পরিবর্তনের সাহসিকতা’কে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘তারা দলীয় অবস্থান থেকে সরে এসে জাতীয় ঐক্য তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এটা বড় ধরনের অগ্রগতি।’

অগ্রগতির দিকটি সকালেই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টা দ্রুততার সঙ্গে সুপারিশ চূড়ান্ত করার তাগিদ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। আজ রোববার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণভোটে ঐকমত্য, তবে সেটা কখন তা নিয়ে বিএনপি–জামায়াতের মতভিন্নতা
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে একমত
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটে একমত সব দল: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির জন্য নির্বাচনের আগে গণভোট চায় জামায়াত