শাপলা না দিলে নির্বাচন কমিশনের ওপর আমাদের আস্থা থাকবে না: সারজিস
Published: 6th, October 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন যদি এনসিপিকে শাপলা প্রতীক না দেয়, তাহলে এনসিপি তা মেনে নিবে না। এটা (শাপলা না দেওয়া) করার যদি তারা চেষ্টা করে, তাহলে তাদের ওপর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের কোনো আস্থা থাকবে না।’
আজ সোমবার দুপুরে নাটোরের কানাইখালী এলাকার আরপি কনভেনশন হলে আয়োজিত জেলা সমন্বয় সভার পর এক সংবাদ সম্মেলনে সারজিস এ কথাগুলো বলেন। এনসিপি নাটোর জেলা শাখা এই সভার আয়োজন করে।
আরও পড়ুনশাপলা প্রতীক না পেলে রাজপথে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সারজিস আলমের২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনএনসিপিকে ‘শাপলা’ দিলে মামলা করবেন না মান্না, তবে প্রতিবাদ করবেন০২ অক্টোবর ২০২৫সংবাদ সম্মেলনে সারজিস আলম বলেন, ‘যেহেতু শাপলা প্রতীক পেতে আইনগত কোনো বাধা নাই, নির্বাচন কমিশনও এমন কোনো বাধা দেখাতে পারেনি। তারপরও যদি শাপলা না দেয়, তাহলে তা নির্বাচন কমিশনের স্বেচ্ছাচারিতা অথবা বাইরের কোনো চাপ। অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে একটা স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান থেকে এই স্বেচ্ছাচার আচরণ আমরা মেনে নেব, এটা মেনে নিয়ে তাদের মাধ্যমে নির্বাচনে যাব, ওই নির্বাচন স্বচ্ছ হবে, সুষ্ঠু হবে, এই বিশ্বাস আমরা করি না।’
জুলাই সনদে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপির ‘নোট অব ডিসেন্ট’ সম্পর্কে সারজিস আলমের ভাষ্য, ‘কোনো রাজনৈতিক দল দলীয় এজেন্ডা দিয়ে পার পেয়ে যাবে, এ সুযোগ বাংলাদেশে নাই। জুলাই সনদ আইনগত ভিত্তিতে স্বাক্ষরিত হতে হবে। কেউ যদি এটার বিরুদ্ধে যায়, সেটা যদি কোনো দলও হয়, তার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত প্রক্রিয়ায় যেতে পারি। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ১৭ বছর টিকে গেছে। আর কেউ এ আচরণ করে এত দিন টিকবে না। বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় নামবে। রাস্তায় নামলে কী অবস্থা হয়, সেটা আপনারা দেখেছেন।’
সমন্বয় সভায় রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন, নাটোর জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক জার্জিস কাদির, সিনিয়র যুগ্ম সমন্বয়কারী আবদুল মান্নাফ, যুগ্ম সমন্বয়কারী তৌফিক নিয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এনসিপির সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে সাংবাদিকদেরকে সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্র থেকে একটা ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যন্ত শক্তিশালী কমিটি থাকতে হবে। আমরা আশা করছি, নভেম্বর মাসের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে এনসিপির কমিটি থাকবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
গায়ক জুবিনের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য, আসলে মৃত্যুর কারণ কী
ভারতীয় গায়ক জুবিন গার্গের মৃত্যুর তদন্তে নতুন মোড় এসেছে। তাঁর ব্যান্ড সদস্য শেখর জ্যোতি গোস্বামী অভিযোগ করেছেন, জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা ও নর্থইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত তাঁকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করেছেন এবং ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছেন।
ভারতীয় নাগরিক নিরাপত্তা সংহিতার (বিএনএনএস) অধীনে রেকর্ড করা সাক্ষ্য অনুযায়ী গোস্বামী তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে সিঙ্গাপুরে জুবিন গার্গের মৃত্যুর আগে-পরে সিদ্ধার্থ শর্মার আচরণ ছিল সন্দেহজনক।
জ্যোতি গোস্বামী জানান, ঘটনার দিন ইয়টে ভ্রমণের সময় শর্মা নাবিকের কাছ থেকে জোর করে ইয়টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন, যার ফলে ইয়টটি মাঝসমুদ্রে বিপজ্জনকভাবে দুলতে থাকে এবং যাত্রীদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে। তিনি আরও বলেন, শর্মা ‘আসাম অ্যাসোসিয়েশন (সিঙ্গাপুর)’-এর সদস্য ও প্রবাসী তন্ময় ফুকনকে বলেছিলেন, তিনি যেন পানীয় সরবরাহ না করেন। কারণ, শর্মা নিজেই তা দেবেন।
গোস্বামীর ভাষ্য অনুযায়ী, যখন জুবিন শ্বাস নিতে লড়াই করছিলেন ও প্রায় ডুবে যাচ্ছিলেন, তখন শর্মাকে বলতে শোনা যায়, ‘যেতে দে, যেতে দে।’ গোস্বামী জোর দিয়ে বলেন, জুবিন ছিলেন প্রশিক্ষিত সাঁতারু, যিনি নিজে তাঁদের দুজনকেও সাঁতার শিখিয়েছিলেন, তাই তাঁর মৃত্যু ডুবে যাওয়ার কারণে হওয়ার কথা নয়।
গোস্বামীর দাবি, শর্মা ও মহন্ত দুজনেই জুবিনকে বিষ প্রয়োগ করেছিলেন এবং ষড়যন্ত্র গোপন রাখতে ইচ্ছা করেই সিঙ্গাপুরকে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, শর্মা তাঁকে ইয়টের কোনো ভিডিও কাউকে না দিতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় শর্মা ও মহন্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে গোস্বামী তদন্তকারীদের জানান, যখন জুবিনের মুখ ও নাক দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল, তখন শর্মা বলেছিলেন, এটি কেবল ‘অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স’, চিন্তার কিছু নেই। তিনি তৎক্ষণাৎ চিকিৎসক না ডেকে বরং এমন আচরণ করেন, যা জুবিনের ‘অকালমৃত্যু’ ত্বরান্বিত করে।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নথি, আর্থিক লেনদেন, সাক্ষ্যসহ বিভিন্ন প্রমাণ প্রাথমিকভাবে শর্মার দোষী ভূমিকা প্রমাণ করছে।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ও ইনকাম ট্যাক্স (আই-টি) বিভাগও এই মামলায় যোগ দিতে পারে—বিশেষ করে শ্যামকানু মহন্তের নামে আর্থিক অপরাধ ও বেনামি সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
আসাম পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ইতিমধ্যে মহন্তের বিরুদ্ধে ২০ বছর আগের একটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরির সময়ের আর্থিক অনিয়মও খুঁজে পেয়েছে। ঘটনাসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইডি ও আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে সিআইডি সদর দপ্তরে গিয়ে মামলার নথি পর্যালোচনা করেছেন।