জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টিতে আজ মঙ্গলবারও (০৭ অক্টোবর) বৃষ্টি হানা দিয়েছে। বৃষ্টির বাধায় সংক্ষিপ্ত হয়ে আসে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ম্যাচ। তবুও উত্তেজনার কমতি ছিল না একফোঁটা। সিলেটের একাডেমি মাঠে বৃষ্টির পর ১৩ ওভারে হওয়া ম্যাচে একসময় ভরাডুবির মুখে ছিল চট্টগ্রাম বিভাগ। কিন্তু ইয়াসির আলি রাব্বির ঝড়ো ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৫ উইকেটের দুর্দান্ত জয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।

এই জয়ে ৭ ম্যাচের ৫টি জিতে ১১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান আরও মজবুত করল ইয়াসিরদের দল। অন্যদিকে টানা দ্বিতীয় হারের তিক্ততায় পঞ্চম স্থানে নেমে গেল ঢাকা বিভাগ, যারা আগের তিন ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি।

আরো পড়ুন:

লো স্কোরিং ম্যাচে রংপুরের জয়, বরিশাল-রাজশাহীর পয়েন্ট ভাগাভাগি

শেষ ওভারের নাটকে জিয়াউরের জাদু, খুলনার দুর্দান্ত জয়

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ঢাকার শুরুটা ছিল আগ্রাসী। ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলি ও জিশান আলম মাত্র ২.

১ ওভারেই তুলে ফেলেন ৩৯ রান। কিন্তু এরপরেই ঢাকার ইনিংস ভেঙে পড়ে। চট্টগ্রামের তরুণ স্পিনার হাসান মুরাদ একাই গুঁড়িয়ে দেন টপ অর্ডার। তিন ওভারে মাত্র ২১ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন দলের সেরা বোলার।

ঢাকার ইনিংস টেনে তোলেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও আরিফুল ইসলাম। আরিফুলের ১৩ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২৩ ও মোসাদ্দেকের ২৭ বলে ৪টি চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ৩২ রানে ভর করে নির্ধারিত ১৩ ওভারে ৬ উইকেটে ১১৯ রানের সংগ্রহ গড়ে ঢাকা বিভাগ।

জবাবে ব্যাট হাতে নামতেই চট্টগ্রাম যেন পড়ে গেল বিপর্যয়ে। মাত্র ৩৬ রানে হারায় চার উইকেট। একে একে ড্রেসিংরুমে ফিরেন মুমিনুল হক (১২), মাহমুদুল হাসান জয় (১৮), শাহাদাত হোসেন (০) ও সাদিকুর রহমান (৩)।

কিন্তু সেখান থেকেই শুরু ইয়াসির আলির ঝড়। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন ইরফান শুক্কুর। ইয়াসিরের অধিনায়কোচিত ব্যাটিংয়ে তিনি কেবল ম্যাচ ঘুরিয়েই দেননি, ঢাকাকে প্রায় নিঃশেষ করে দিয়েছেন। ইরফান শুক্কুরকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ৬২ রানের ম্যাচজয়ী জুটি। ইরফান ১৫ বলে ৩ ছক্কায় ৩০ রানের দারুণ ইনিংস খেলে আউট হলেও ইয়াসির ছিলেন অবিচল।

মাত্র ২৭ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৫৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন এই ডানহাতি ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ৪ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে জয় পায় চট্টগ্রাম বিভাগ।

ঢাকার হয়ে মাহফিজুর রাব্বি নেন ২ ওভারে ১১ রানে ৩ উইকেট। রিপন মণ্ডল ২.২ ওভারে ১৩ রানে নেন ২টি উইকেট। ব্যাট হাতে ঝড় তুলে দলকে জিতিয়ে ম্যাচসেরা হন ইয়াসির আলি।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছক ক য় উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

লিও তলস্তয়ের গ্রামে

আমি এখন যে গ্রামে এসেছি, সেই গ্রামে ১৮২৮ সালে লেখক লিও তলস্তয় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রাশিয়ার ইয়াস্নায়া পলিয়ানা নাম গ্রামটির। এটি আসলে তাঁদের পারিবারিক জমিদারির একটি অংশ। এখানে তিনি জীবনের অনেকখানি সময় কাটিয়েছেন। এখানেই লিখেছেন অমর উপন্যাস ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’, ‘আনা কারেনিনা’ এবং অসংখ্য গল্প।

তলস্তয়কে আইন পড়তে কাজান শহরে পাঠানো হয়েছিল কিন্তু পড়তে তাঁর ভালো লাগেনি। জমিদারি ছিল, তাই রোজগারের চিন্তাও করতে হয়নি। মাঝখানে সন্তানদের পড়ালেখার জন্য আট বছর মস্কোতে একটি বাড়ি কিনে বসবাস করেছিলেন।

লিও তলস্তয় শেষ জীবনে আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকেছিলেন এবং খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। একসময় গৃহত্যাগ করেছিলেন। ১৯১০ সালে ৮২ বছর বয়সে আস্তাপোভো রেলস্টেশনে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে একাকী, আত্মীয়, বন্ধু থেকে দূরে, নীরবে তিনি দেহত্যাগ করেন। এরপর তাঁকে ইয়াস্নায়া পলিয়ানায় এনে সমাহিত করা হয়।

ইয়াস্নায়া পলিয়ানা গ্রামে আমি যখন পৌঁছালাম, তখন রোদ ঝলমল করছে। গত কয়েক দিন খুব বৃষ্টি পড়েছে মস্কো শহরে। মস্কো থেকে আমাকে পাড়ি দিতে হয়েছে ২২০ কিলোমিটার। সরাসরি মস্কো থেকে তলস্তয়ের গ্রামে আসার কোনো ট্রেন বা বাস নেই। আমাকে ট্রেনে করে আসতে হয়েছে প্রথমে তুলা শহরে৷

ট্রেনে করে আসার পথে রাশিয়ার সবুজ গ্রামের যে রূপ আমি দেখেছি, তার তুলনা হয় না। পথের পাশে ফুটে আছে হলুদ বুনো ফুল আর হঠাৎ হঠাৎ করে একটা বা দুটো দোচালা বাড়ি। মাঝে পড়ে গেল একটা নদী, আবার এসে গেল ঘন সবুজ জঙ্গল। এমন অসামান্য প্রকৃতি যে দেশের আছে, সে দেশের প্রতি এমনিতেই মায়া জন্মে যায়।

রাশিয়ার ইয়াস্নায়া পলিয়ানা গ্রামে ১৮২৮ সালে লেখক লিও তলস্তয় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এটি তাঁদের পারিবারিক জমিদারির একটি অংশ। এখানে তলস্তয় জীবনের অনেকখানি সময় কাটিয়েছেন। এখানেই লিখেছেন অমর উপন্যাস ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’, ‘আনা কারেনিনা’।মাঝখানে ধূসর লম্বা পথ আর দুপাশে ঘন বনানী

সম্পর্কিত নিবন্ধ