লাহোরে পাকিস্তানের দাপট, বড় সংগ্রহের পথে
Published: 12th, October 2025 GMT
লাহোরে পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টের প্রথম দিনে খেলা হয়েছে ৫৪০ বল, মানে ৯০ ওভার। এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা দাপট দেখিয়েছে মাত্র ১৬টি বলে। চা বিরতির আগে ও পরে ১৬ বলে কোনো রান খরচ না করে পাকিস্তানের ৩ উইকেট তুলে নেন দুই স্পিনার সেনুরান মুতুসামি ও সাইমন হারমার।
বাকি সময়টাতে দাপট দেখিয়েছে পাকিস্তানই। তবে দলীয় ১৯৯ রানেই পরপর ইমাম-উল-হক, সৌদ শাকিল ও বাবর আজমকে হারানোয় দিন শেষে পাকিস্তানের রানটা খুব বড় হয়নি। শান মাসুদের দল প্রথম দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ৩১৩ রানে।
প্রথম দিন শেষে সালমান আগা ৫২ ও মোহাম্মদ রিজওয়ান ৬২ রানে অপরাজিত আছেন। দ্বিতীয় দিনে নিশ্চয়ই দুজনে চাইবেন পাকিস্তানের সংগ্রহটা ৫০০ রানের আশপাশে নিয়ে যেতে।
দক্ষিণ আফ্রিকার চাওয়াও হবে যত দ্রুত পাকিস্তানকে অলআউট করা। কারণ, লাহোর টেস্টের প্রথম দিনেই উইকেটে টার্ন দেখা গেছে। আর পাকিস্তান দলে আছেন ঘরের মাঠে ভয়ানক দুই স্পিনার নোমান আলী ও সাজিদ খান। বড় রান তোলা তাই এইডেন মার্করামের দলের জন্য কঠিন হতে পারে!
লাহোরে আজ পাকিস্তানের ব্যাটিং দাপট দেখা গেছে শুরু থেকেই। ইনিংসের প্রথম ওভারে কাগিসো রাবাদার বলে আবদুল্লাহ শফিক ফিরলেও তাঁর প্রভাব পড়েনি পাকিস্তানের ইনিংসে।
অনেকটা ওয়ানডে মেজাজেই ব্যাটিং করেছেন শান মাসুদ ও ইমাম। দুজনে মিলে প্রথম ১০ ওভারে তুলেছেন ৫১ রান। সর্বশেষ পাকিস্তান টেস্টে প্রথম ১০ ওভারে ৫০ রান তুলেছিল ২৫ বছর আগে। ২০০০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফয়সালাবাদে সেই ম্যাচে ওপেন করেছিলেন কিংবদন্তি সাঈদ আনোয়ার ও শহীদ আফ্রিদি।
সব মিলিয়ে দুজনে মিলে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তোলেন ১৬১ রান। যে জুটিতে শুরু থেকেই দাপট দেখিয়েছেন ছন্দে থাকা ইমাম। বাঁহাতি এই ওপেনার টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি করেছেন ৬৫ বলে।
সেঞ্চুরি পাননি, ৯৩ রানে মুতুসামির বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। সেঞ্চুরি না পেলেও ইমাম যে কতটা দারুণ ছন্দে আছেন, সেটিই প্রমাণ করেছেন। পাকিস্তানের এই ওপেনার লাহোর টেস্টের আগে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট ওয়ানডে কাপে সর্বশেষ ৮ ম্যাচে চারটি সেঞ্চুরি ও তিনটি ফিফটি করেছিলেন।
ইমামের আগেই অবশ্য ফেরেন শান মাসুদ। পাকিস্তান অধিনায়ক করেছেন ৭৬ রান। দলীয় ১৬৩ রানে ডানহাতি স্পিনার প্রেনেলান সুব্রায়েনের বলে এলবিডব্লু হয়েছেন শান মাসুদ। টেস্টে এটি তাঁর ১২তম ফিফটি।
চা বিরতির আগের ওভারে ইমাম ফেরার পর উইকেটে আসা শাকিল আউট হন প্রথম বলেই। চার বিরতি থেকে ফিরে হারমারের বলে এলবিডব্লু হন বাবর। বাবর করেন ২৩ রান।
দলীয় ১৯৯ রানে দাঁড়িয়েই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা পাকিস্তানকে টেনে তোলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সালমান আগা। দুজনেই বেছে নেন পাল্টা আক্রমণের পথ। বাবর ফেরার পরের ওভারেই স্পিনার মুতুসামির বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারেন রিজওয়ান।
পরের ওভারেই হারমারের বলে মারেন দুই চার। দুজনে গড়েছেন অবিচ্ছিন্ন ১১৪ রানের জুটি। তাতে প্রথম দিনটা শেষ হয়ে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থেকেই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ৯০ ওভারে ৩১৩/৫ ( ইমাম ৯৩, শান মাসুদ ৭৬, রিজওয়ান ৬২*; মুতুসামি ২/১০১, হারমার ১/৭৫)
প্রথম দিন শেষে
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম দ ন র জওয় ন কর ছ ন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা
জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।
দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপটহাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’
এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)
আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।
দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকতএই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।
আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।
দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫