সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে এখনো দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে শাখা ছাত্রদল। ছাত্রসংগঠনটির একাধিক নেতা-কর্মীর দাবি, প্রার্থী কারা হবেন—এ বিষয়ে ‘সবুজ সংকেত’ না পাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ইতিমধ্যে ছাত্রদলের কেউ কেউ এককভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছেন। তবে তাঁদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত দল থেকে যথাযথ মূল্যায়ন পাবেন কি না! বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, যাঁরা কাজ করবেন, সক্রিয় থাকবেন ও শিক্ষার্থীবান্ধব কাজে অংশ নেবেন, সংগঠন তাঁদের মূল্যায়ন করবে।

আরও পড়ুনশাকসু নির্বাচন : গঠনতন্ত্র ছাড়া আর কোনো অগ্রগতি নেই, শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা১৪ অক্টোবর ২০২৫

গতকাল সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের অন্তত পাঁচ নেতার সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর প্রতিবেদকের। নেতাদের মতে, যদি একটি নির্দিষ্ট সময় আগেই প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে পারা যায়, তাহলে সেটি কার্যকর হবে। অন্য ছাত্রসংগঠনগুলো যেভাবে গুছিয়ে মাঠে নামতে পারছে, ভোটারদের কাছে যেতে পারছে, তাঁরা সেদিকে অনেকটা পিছিয়ে।

ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতারা তিনটি বড় অংশে বিভক্ত। এগুলোর নেতৃত্বে আছেন সভাপতি রাহাত জামান, সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকার ও সহসভাপতি মোহাম্মদ সোহাগ। তাঁদের মধ্যে প্রার্থিতা নিয়ে দর-কষাকষি হতে পারে। তবে কোন পক্ষ থেকে কতজন আসতে পারেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

আরও পড়ুন‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে চার শিক্ষকের পদত্যাগ০২ নভেম্বর ২০২৫

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দুই নেতা প্রথম আলোকে বলেন, বিগত চারটি ছাত্রসংসদ নির্বাচনে ছাত্রদল শেষ মুহূর্তে গিয়ে প্রার্থী নির্ধারণ করে প্যানেল ঘোষণা করেছে। পিছিয়ে যাওয়ার এটি একটি বড় কারণ। যদি তফসিলের আগেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে সবুজ সংকেত পাওয়া যায়, তাহলে পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, প্রার্থীরা নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারবেন। ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ইতিবাচক প্রভাব থাকলেও শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিলে আউটপুট কেমন হবে, তা ধারণা করা যায়।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান তেমনটি মনে করেন না। এ বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, ‘পিছিয়ে যাওয়ার কোনো কারণ দেখছি না। যারা যোগ্য ও প্রার্থী হওয়ার সক্ষমতা আছে, তারা অবশ্যই মূল্যায়িত হবে। এ বিষয়ে আজকালের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সভাপতির সঙ্গে কথা বলব।’

অন্যদিকে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকার বলেন, শাকসুর নির্বাচনের জন্য একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছেন। যাঁদের একাডেমিক ফল ভালো, শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা আছে, তাঁদের অবশ্যই মূল্যায়ন করা হবে।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর শাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করার কথা আছে। এ ছাড়া নির্বাচনের আচরণবিধির খসড়া নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করছে কমিশন। বিষয়টি চূড়ান্ত হলেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।

আরও পড়ুনশাকসু নির্বাচন আয়োজনে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন২৭ অক্টোবর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় নৃশংসভাবে বিড়াল হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় মাছ খাওয়ায় একটি বিড়ালকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং পথপ্রাণী, পোষা প্রাণী ও বন্য প্রাণীর ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে বগুড়ার সাতমাথা মোড়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ—তীর’। এ সময় সংগঠনটির সদস্যরা প্ল্যাকার্ড, পোস্টার হাতে প্রাণী সুরক্ষার দাবি জানান। এ ছাড়া প্রাণী আইন লঙ্ঘন না করার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে প্রচারপত্র বিলি করেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে আদমদীঘি উপজেলার দত্তবাড়িয়া গুচ্ছগ্রামে বিড়াল হত্যার অভিযোগ ওঠে বুলবুলি বেগম (২৬) নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। পরদিন বুধবার তাঁর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এমরান হোসেন। পরে পুলিশ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পায়। শুক্রবার বুলবুলি বেগমকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন তীর–এর সভাপতি আশা মনি, সহসভাপতি হৈমন্তী সরকার, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান।

পুলিশ সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে বুলবুলির বাড়িতে একটি বিড়াল ঢোকে। একপর্যায়ে প্রাণীটি রান্না করা মাছ খেয়ে ফেলে। গত মঙ্গলবার রাতে বিড়ালটি দ্বিতীয় দফায় বুলবুলির ঘরে ঢোকে। এ সময় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বিড়ালটিকে ধরে বঁটি দিয়ে গলা কেটে ফেলেন। এভাবে হত্যার পর একটি ধানখেতে ফেলে দেন। বিষয়টি জানার পর প্রতিবেশী ইসাহাক আলীর স্ত্রী শামছুন্নাহার বুধবার সকালে বিড়ালটির ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নেন। মৃত বিড়ালটি বরফ দিয়ে সংরক্ষণের পর তিনি পুলিশে খবর দেন। বিষয়টি জানাজানির পর বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।

আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিড়াল হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত বুলবুলি বেগম উত্তেজিত হয়ে বঁটি হাতে স্থানীয় লোকজনকে লক্ষ্য করে তেড়ে আসেন এবং কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেন। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে আটক করে ১৫১ ধারায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। বিড়াল হত্যার ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় নৃশংসভাবে বিড়াল হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন