ট্রাম্পের বিজয়ের এক বছরের মধ্যেই সবখানে প্রতিরোধ
Published: 11th, November 2025 GMT
এক পার্কিং এলাকায় মুখোশ পরা আইসিই সদস্যদের গালাগাল করছেন যোগব্যায়ামের পোশাক পরা একজন শ্বেতাঙ্গ নারী। একজন পোপ বারবার অভিবাসীদের পক্ষে কথা বলছেন। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন, অঙ্গরাজ্য, নগর ও নাগরিকদের করা মামলার ঝড় উঠেছে। কঠোর ভর্ৎসনা করে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একের পর এক রায় দিচ্ছেন বিচারকেরা। একজন সিনেটর টানা ২৫ ঘণ্টা ধরে অবিরাম কথা বলছেন। আরেকজন তাঁর অপহৃত সংবিধানের কী হয়েছে, তা জানার জন্য এল সালভাদরে উড়ে যাচ্ছেন।
১৮ অক্টোবর ডেমোক্র্যাটদের বড় বড় নীল শহরের পাশাপাশি রিপাবলিকানদের ছোট ছোট লাল শহরেও সব মিলিয়ে ৭০ লাখের মতো মানুষ ‘রাজা চাই না’ আন্দোলনে শরিক হন। রচিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিক্ষোভের সবচেয়ে বড় দিন।
চলতি বছরে টেসলার শোরুমগুলোর সামনে হওয়া বিক্ষোভ ব্র্যান্ডটির এমন ক্ষতি করে যে এর বৈশ্বিক বিক্রি কমে যায় এবং সিইও ইলন মাস্ক তাঁর সরকারি কর্মদক্ষতা বিভাগ (ডিইওজি) থেকে নেওয়া চাকরিচ্যুতির কঠোর প্রকল্প থেকে পিছু হটেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীরা কখনো কখনো কেবল আইন, সত্য ও তথ্য মেনে চলার মাধ্যমেই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। কখনো তাঁরা হুইসেলব্লোয়ার হিসেবে সত্য ফাঁস করছেন, কখনো প্রতিবাদে মুখর হচ্ছেন। যেমন গত আগস্টে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) কর্মীরা ওয়াকআউট করে জ্যেষ্ঠ কর্মীদের বিক্ষোভে সংহতি জানান। ওই জ্যেষ্ঠ কর্মীরা স্বাস্থ্য ও মানবসেবামন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের টিকাবিরোধী নীতির প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছিলেন।
অভিবাসী, শরণার্থী এবং চেহারার কারণে রাস্তায়, শিকাগোর পাড়া-মহল্লায়, হোম ডিপো পার্কিং লটে, স্কুলের আশপাশে ও আদালতে হেনস্তার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে তাঁদেরই জন্য অসাধারণ সংহতি গড়ে উঠছে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির রাজ্য অ্যাটর্নিরা স্বতন্ত্র ও যৌথভাবে একের পর এক মামলা করছেন। ইলিনয় ও ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নররা লাগাতার সমালোচনায় ট্রাম্পকে ঝাঁজরা করে দিচ্ছেন। কংগ্রেসে বিল আটকে যাওয়ায় সৃষ্ট অচলাবস্থা নিয়ে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েমের দলীয় প্রচারণামূলক ভিডিও চালাতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে বিমানবন্দরগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসংক্রান্ত স্বাধীনতায় ছাড় দেওয়ার শর্তে অর্থনৈতিক প্রণোদনা পাওয়ার চুক্তি করতে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে।
গত ২০ জানুয়ারি থেকে আমরা ট্রাম্প প্রশাসন এবং এর নীতির বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধ দেখছি, এগুলো তারই অংশ। এসব নিয়ে নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে জরিপ হওয়া প্রয়োজন।
যখন কেউ আমাকে বলেন ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধই নেই, আমি ভাবি তারা কি এক ধাক্কায় সরকার ফেলে দেওয়ার মতো গেরিলা বিপ্লবের আশা করছে, নাকি পরিস্থিতির দিকে যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছে না। কারণ, বাস্তবে নানা ধরনের ব্যাপক প্রতিরোধ ও বিরোধিতা রয়েছে, এগুলো বড় ধরনের প্রভাবও ফেলেছে। কখন এটি যথেষ্ট হবে, সেটি একটি প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর তখনই দেওয়া যাবে, যখন এসবের ইতি হবে, যদি আদৌ তা হয়। এরপর কী ঘটে, সেটাও দেখতে হবে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রত্যাশা থেকেও বোধ হয় নিরাশা জন্মেছে। মানুষ ভেবেছে, স্বভাবতই একটা বদলের সূচনা হবে। কিন্তু ইতিহাসের মোড়বদল আর গতি যে কখনো অনুমান করা যায় না, সেই বাস্তবতার কথা মানুষ মাথায় রাখেনি।
প্রতিরোধ গড়ে উঠছে সর্বত্র, সব এলাকায় এবং সব ধরনের ভোটারদের মধ্যে। আছে নাগরিক সমাজ ও সরকারি কর্মচারীরা। রয়েছে মানবাধিকার, জলবায়ু ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠীগুলো, যারা নির্বাচনের আগেই আটঘাট বেঁধে রেখেছিল আর নতুন প্রশাসন আসার পরই মাঠে নেমে পড়ে। আরও আছে ধর্মীয় নেতা ও প্রতিষ্ঠান, সব স্তরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সামরিক কর্মকর্তা, আইনজীবী ও বিচারক। আরও আছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, গ্রন্থাগারিক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, সম্পাদক, প্রকাশক, শিল্প-সংস্কৃতির জগতের মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গত ১৮ অক্টোবরের বিক্ষোভের একটি চিত্র। ছবিটি নিউইয়র্ক থেকে তোলা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
উখিয়ায় মার্কেটে আগুন, দগ্ধ একজনের মৃত্যু
কক্সবাজারের উখিয়ায় একরাম মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে দগ্ধ হয়ে মোহাম্মদ আলী নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরো পড়ুন:
ময়মনসিংহে বাস চাপায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু
বিলে শাপলা তুলতে গিয়ে ৪ স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু
স্থানীয়দের বরাতে উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা ডলার ত্রিপুরা জানান, দুপুরে হঠাৎ মার্কেটে আগুন লাগে। মুহূর্তেই আগুন আশপাশের দোকান ও স্থাপনায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উখিয়া স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত দুটি ইউনিট এবং কক্সবাজার স্টেশন থেকে আরো একটি ইউনিট যোগ দেয়। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ সাজেদুল ইমরান শাওন বলেন, “দগ্ধ অবস্থায় মোহাম্মদ আলীকে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।’’
ঢাকা/তারেকুর/রাজীব