টানা তৃতীয় মেয়াদে জামায়াতের আমির হিসেবে শপথ নিলেন শফিকুর রহমান
Published: 28th, November 2025 GMT
টানা তৃতীয় মেয়াদে জামায়াতে ইসলামীর আমির হিসেবে শপথ নিয়েছেন শফিকুর রহমান। নতুন করে নির্বাচিত আমির হিসেবে ২০২৬–২০২৮ মেয়াদের জন্য শপথ নিয়েছেন তিনি।
আমির নির্বাচনের জন্য গঠিত অভ্যন্তরীণ নির্বাচন কমিশনের প্রধান ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে শপথপাঠ করান। জামায়াত আমিরের শপথ গ্রহণ উপলক্ষে রাজধানীর মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এখানে কোনো রাজনৈতিক বিভাজন আর মেজরিটি এবং মাইনোরিটির কোনো সংঘাত আমরা আর দেখতে চাই না।’
উন্নত দেশগুলোতে মেজরিটি-মাইনোরিটি বলে কিছু নেই উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘তারা ইউনাইটেড নেশন, ঐক্যবদ্ধ জাতি। আমাদের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে এটি সৃষ্টি করা হয়েছে, যাতে জাতিকে মুখোমুখি করে রাখা যায়। আমরা এটি মানি না, মানতে চাই না।’
এ সময় বিগত সরকার জামায়াত নেতাদের ওপর অন্যায়-জুলুম চালিয়েছে উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘জেলখানা ছিল আমাদের প্রথম বাসস্থান। বারবার আমাদের আটকে রাখা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে সত্যিকারের কোনো অভিযোগ ছিল না। অভিযোগ একটাই যে আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতাম। কিন্তু সেই প্রতিবাদটাও আমরা স্বস্তির সঙ্গে করতে পারতাম না। আমাদের ওপর নানাবিধ অপশাসন, কালো আইন ও হুকুম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
এদিকে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। শপথ নিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘আমি নিজেকে এই দায়িত্বের জন্য মোটেও যোগ্য মনে করি না। এই মজলুম সংগঠনটিতে দীর্ঘ সময় ধরে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের হাতে যে মানুষ তৈরি হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আমার চেয়ে অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন, দক্ষ ও অভিজ্ঞ সহকর্মী রয়েছেন। তারপরও আমি জানি না কেন সম্মানিত সদস্যবৃন্দ আমাকে তাঁদের এই আমানতের ভার দিয়েছেন।’
গত ৯ থেকে ২৫ অক্টোবর সদস্যদের গোপন ভোট গ্রহণের মাধ্যমে ২০২৬–২০২৮ মেয়াদে জামায়াতের আমির নির্বাচন করা হয়। এতে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৯২ জন রুকন (শপথধারী সদস্য) ভোট দেন। সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়ে নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো আমির নির্বাচিত হন শফিকুর রহমান।
আজ ও আগামীকাল শনিবার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার বার্ষিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সন্ধ্যায় শপথ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ইসল ম র র আম র আম দ র গ রহণ সদস য শপথ ন
এছাড়াও পড়ুন:
১২ বছর পর জিম্বাবুয়ে সফরে অস্ট্রেলিয়া
দীর্ঘ বিরতির পর আবারও জিম্বাবুয়ের মাটিতে পা রাখতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। আগামী বছর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে জিম্বাবুয়ে সফরে আসছে তারা। ক্রিকইনফোর এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। ২০১৪ সালের পর এটাই হবে জিম্বাবুয়েতে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সফর।
২০২৭ সালে জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নামিবিয়া যৌথভাবে আয়োজন করবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তার আগেই জিম্বাবুয়ের কন্ডিশন বুঝে নেওয়ার সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে এই সিরিজকে।
আরো পড়ুন:
জাতীয় দলে বাইরে অস্থিরতা, ভেতরে ‘ওয়েল সেট’!
গাব্বা টেস্টেও থাকছেন না কামিন্স, অস্ট্রেলিয়ার অপরিবর্তিত দল ঘোষণা
অস্ট্রেলিয়ার মূল টেস্ট ও ওয়ানডে সফর দক্ষিণ আফ্রিকায় নির্ধারিত রয়েছে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। তার আগে অল্প সময়ের জন্য তারা জিম্বাবুয়েতে থামবে তিনটি ওয়ানডে খেলার জন্য। সিরিজটি হারারে এবং সম্ভাব্যভাবে বুলাওয়েতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে বহুল প্রত্যাশিত ভিক্টোরিয়া ফলসের নতুন ১০ হাজার আসনের স্টেডিয়ামটি ওই সময়ের মধ্যে প্রস্তুত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট এই সফরে একটি টেস্ট ম্যাচ আয়োজনের জন্য জোর চেষ্টা চালালেও সেটি হচ্ছে না। আসছে সময়ে অস্ট্রেলিয়ার সূচি এতটাই আটসাঁট যে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২৭ অ্যাশেজ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৯টি টেস্ট খেলবে তারা। ফলে অতিরিক্ত কোনো ম্যাচ রাখার সুযোগ নেই।
তবে ওয়ানডে সিরিজকে অস্ট্রেলিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে। কারণ পরের বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক জিম্বাবুয়ের পরিবেশে আগে থেকেই মানিয়ে নেওয়া দলকে বাড়তি সুবিধা দেবে।
অস্ট্রেলিয়া–জিম্বাবুয়ের টেস্ট ইতিহাস খুবই সংক্ষিপ্ত। মোটে তিনটি ম্যাচ। সর্বশেষ দুই টেস্ট হয়েছিল ২০০৩ সালে, যেখানে প্রথম ম্যাচে ম্যাথু হেইডেন খেলেছিলেন তার বিখ্যাত ৩৮০ রানের বিশ্বরেকর্ড ইনিংস। একমাত্র টেস্ট যা জিম্বাবুয়েতে হয়েছিল তা ১৯৯৯ সালে। স্টিভ ওয়াহর নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া ১০ উইকেটে জিতেছিল এবং এটিই ছিল উইকেটকিপার ইয়ান হিলির শেষ টেস্ট।
ওয়ানডে ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ে সফর করতে অস্ট্রেলিয়ার এই বিরতি আট বছরের; ২০১৪ সালে সর্বশেষ জিম্বাবুয়েতে ওয়ানডে খেলেছিল তারা। যদিও ২০১৮ সালে তারা পাকিস্তানকে নিয়ে একটি টি-টোয়েন্টি ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছিল হারারেতে।
অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট না হলেও জিম্বাবুয়ে আশাবাদী, ইংল্যান্ডকে দিয়ে একটি টেস্ট আয়োজন করতে পারবে। ২০২৬ সালের শেষ দিকে বা ২০২৭ সালের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের একটি বাড়তি অংশ হিসেবে এই ম্যাচটি আয়োজনের সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করে নতুন ভিক্টোরিয়া ফলস স্টেডিয়াম প্রস্তুত থাকলে এটি হতে পারে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি ম্যাচ।
সম্প্রতি ২২ বছর পর ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ের মাঝে টেস্ট ক্রিকেট ফিরেছিল। গত মে মাসে ট্রেন্ট ব্রিজে চার দিনের সেই ম্যাচটি দিয়ে। ইতিহাসে দুই দল মোটে সাতটি টেস্ট খেলেছে, যার মধ্যে মাত্র দুটি হয়েছে জিম্বাবুয়ের মাটিতে, ১৯৯৬ সালে যা ড্র হয়েছিল।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছে যেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসা বড় দলগুলো যাত্রাপথে তাদের দেশে ছোট আকারের সিরিজ খেলতে রাজি হয়। ২০২৬ সালের শেষ দিককে তারা এই হাইপ্রোফাইল সিরিজ নিশ্চিতের আদর্শ সময় হিসেবে দেখছে।
ঢাকা/আমিনুল