মহেশখালী-কক্সবাজার নৌপথে দুটি স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১০ জন যাত্রীসহ ডুবে যায় একটি স্পিডবোট। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আশপাশ থেকে অন্য স্পিডবোট এসে যাত্রীদের সবাইকে জীবিত উদ্ধার করে। এ সময় মোরশিদা বেগম (৪০) নামে একজন যাত্রী আহত হন।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাঁকখালী চ্যানেলে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই নারী যাত্রীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে মহেশখালীর ইউএনও মোহাম্মদ হেদায়েত উল্যাহ প্রথম আলোকে জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মহেশখালী জেটিঘাট থেকে স্পিডবোটচালক মোহাম্মদ মোস্তফা ১০ জন যাত্রী নিয়ে বাঁকখালী চ্যানেল পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন। একই সময়ে কক্সবাজার জেটিঘাট থেকে আরেক স্পিডবোটচালক মোহাম্মদ নয়ন ১০ জন যাত্রী নিয়ে মহেশখালী ফিরছিলেন। বাঁকখালী চ্যানেলে পৌঁছে স্পিডবোট দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ১০ জন নিয়ে যাত্রী নিয়ে চালক মোহাম্মদ নয়নের স্পিডবোটটি ডুবে যায়। পরে মোহাম্মদ মোস্তফার বোটসহ অন্যান্য স্পিডবোট ঘটনাস্থলে এসে সাগর থেকে জীবিত অবস্থায় যাত্রীদের উদ্ধার করেন।

মহেশখালী স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি আতাউল্লাহ বোখারি ও একটি স্পিডবোটচালক মোহাম্মদ মাহিন বলেন, ‘সকালে ১০ জন যাত্রী নিয়ে মহেশখালী থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিলাম। পথে বাঁকখালী চ্যানেলে দুটি স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষে একটি স্পিডবোট ডুবে যায়। এ সময় যাত্রীদের বাঁচাতে দ্রুত স্পিডবোট নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে আরও চালকেরা এগিয়ে আসেন। সবাই মিলে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়।’

জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হেদায়েত উল্যাহ বলেন, নৌপথে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত স্পিডবোট ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। দুই স্পিডবোটের চালকদের ঘাট থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়াও ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য চালকদের সতর্ক করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে টর্চলাইট জ্বালিয়ে সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ