‘স্বাধীনতা সাম্য সম্প্রীতির জন্য কবিতা’ স্লোগান নিয়ে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবাহী মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনের জাতীয় কবিতা উৎসব। জাতীয় কবিতা পরিষদ এবারের উৎসবের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাকালীন মৌলিক অঙ্গীকার রক্ষা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানের দায়বদ্ধতা নিয়ে দেশ-জনতার কল্যাণের ভূমিকা রাখবে বলে জানান হয়েছে।

শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, এবারের উৎসবে ফ্যাসিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার পক্ষে এবং দল-পরিবার-ব্যক্তিবন্দনা করে কোনো কবিতা পড়া যাবে না।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের আহ্বায়ক মোহন রায়হান বলেন, উৎসবের অংশ নিতে কবিদের কোনো নিবন্ধন ফি লাগবে না। নিবন্ধিত কবিদের নাতিদীর্ঘ দুটি কবিতা আগাম জমা দিতে হবে। এর মধ্য থেকে একটি কবিতা পাঠ করতে পারবেন। কবিতায় কোনো পতিত স্বৈরশাসকদের বন্দনা, দলীয় বা ধর্মীয় উসকানি, স্বাধীনতা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী কোনো বক্তব্য উপস্থাপন করা যাবে না। পঠিত কবিতাগুলো নিয়ে পরে নির্বাচিত কবিতা সংকলন প্রকাশিত হবে।

কবি মোহন রায়হান বলেন, ১৯৮৭ সালে স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ তাঁর অপশাসন ধামাচাপা দেওয়ার কৌশল হিসেবে ফেব্রুয়ারির ১ ও ২ তারিখে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত মিলনায়তনে ‘এশীয় কবিতা উৎসব’–এর আয়োজন করে। এর প্রতিবাদে সেই সময়ের তরুণ প্রতিবাদী গণতন্ত্রকামী কবিরা দেশের প্রায় সব কবিকে ঐক্যবদ্ধ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম জাতীয় কবিতা উৎসবের আয়োজন করে। সারা দেশের হাজার হাজার কবি ও গণতন্ত্রকামী জনতার সমাগম ঘটে। স্বৈরশাসকের আয়োজিত এশীয় কবিতা উৎসব নিষ্প্রভ হয়ে যায়। এর পর থেকে নিয়মিতভাবে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত জাতীয় কবিতা উৎসব অনুষ্ঠিত হতে থাকে। পরিষদ এরশাদ জান্তার পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সেই সব দলদাস কবি জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য গা–ঢাকা দিয়েছেন। জাতীয় কবিতা পরিষদকে তার সংগ্রামী চেতনায় ফিরিয়ে আনার জন্য নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির পক্ষ থেকে এবার উৎসব করা হচ্ছে। উৎসবে জন্য কবি মোহন রায়হানকে আহ্বায়ক, কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন ও কবি শাহীন রেজাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। টিএসসির দোতলায় উৎসব দপ্তর খোলা হয়েছে। এখানে প্রতি শনি থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কবিরা নাম নিবন্ধন করতে পারবেন। এ ছাড়া অনলাইনেও নিবন্ধন করা যাবে।

জাতীয় কবিতা উৎসব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পাঠাগার চত্বরে ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। এতে কবিদের কবিতা পাঠ ছাড়াও থাকবে আবৃত্তি, কবিতা নিয়ে আলোচনা, কবিতার গান ও নৃত্য পরিবেশনা।

আয়োজকেরা জানান, বরাবরের মতো এবারেও বিদেশি কবিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। চীন, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের কবিদের অংশ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে, তবে কারা আসবেন তা চূড়ান্ত হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন পরিষদের সদস্যসচিব কবি রজাউদ্দিন স্টালিন। কবি সলিমুল্লাহ খান কবিদের জন্য একটি সংগঠন গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। সংক্ষিপ্ত মন্তব্য করেন ছড়াকার আবু সালেহ, কবি মতিন বৈরাগী, গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়জী, কবি নুরুল ইসলাম মনি ও শাহীন রেজা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব

জুলাই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত ১১টি নাটক নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে আজ শুরু হচ্ছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ নাট্যোৎসব ২০২৫’। বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে এ উৎসব চলবে ৮ আগস্ট পর্যন্ত। মোট ১১টি নাট্যদল উৎসবে অংশ নেবে।
প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন ও পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে নাট্য প্রদর্শনী চলবে। প্রতিটি নাটক নির্মিত হয়েছে ২০২৪ সালের আন্দোলন ও সমকালীন সামাজিক বাস্তবতার পটভূমিতে।

‘বর্ষা বিপ্লব’ চেতনাকে উপজীব্য করে এ নাট্যোৎসবের পৃষ্ঠপোষকতা করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। নাট্য প্রদর্শনীগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনীর আগে কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করা যাবে প্রবেশপত্র।

একটি নাটকের দৃশ্য। ছবি: নাট্যদলের সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মোশাররফ করিমের ২৪ মিনিটের সিনেমা যুক্তরাষ্ট্রের উৎসবে
  • ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় চলছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ নাট্যোৎসব’
  • নেতা-কর্মীদের মতের মূল্য না দিলেও জি এম কাদের স্ত্রীর মতামত প্রাধান্য দেন: আনিসুল ইসলাম
  • এক-এগারোর মতো ঘটনা ঘটা এখানে অস্বাভাবিক কিছু নয়
  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেভাবে সুষ্ঠু ভোটে বাধা হতে পারে
  • মিয়ানমারে ডিসেম্বরে নির্বাচনের ঘোষণা জান্তা সরকারের, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার
  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সরাসরি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে
  • ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লুলার প্রতিবাদে অন্যরাও শামিল হোক
  • এমন কিছু করবেন না যাতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়: মির্জা ফখরুল