কখনো ভালো কিছুতে, কখনো বিতর্কে যে দুটি নাম বাংলাদেশের ক্রিকেটে একই সঙ্গে উচ্চারিত হয়ে আসছে; নিয়তি তাঁদের শেষটাও কি তাহলে মিলিয়ে দিচ্ছে! সাকিব আল হাসান কাগজে–কলমে এখনো আছেন। ভবিষ্যতেও তা–ই থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা এখন যথেষ্টই প্রবল। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তামিম ইকবাল অধ্যায় যেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত। আবার বাংলাদেশ দলে তাঁর খেলা না–খেলা নিয়ে চলতে থাকা ‘সোপ অপেরা’র সমাপ্তি টেনে দিয়েছেন তিনি নিজেই।
বিদায়গাথা লিখতে গিয়ে অবশ্য একটু সমস্যাতেই পড়তে হচ্ছে। দেড় বছর আগেই যে তা একবার লেখা হয়ে গেছে। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আফগানিস্তান সিরিজের মাঝপথে হঠাৎই অবসরের ঘোষণা, তা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত গড়ানোর পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ‘থুক্কু’ বলে ফেলা—মহানাটকীয় সেই অধ্যায়ের পর তামিম ইকবাল বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেনই তো আর মাত্র দুটি ম্যাচ। তার একটিতে আবার বৃষ্টির কারণে ব্যাটিংয়েই নামা হয়নি। পেছন ফিরে এখন দেখা যাচ্ছে, ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু তামিমের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার তাহলে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরই শেষ হয়ে গেছে। মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেষবারের মতো ব্যাটিং করতে নেমেছেন তামিম ইকবাল। কিউই লেগ স্পিনার ইশ সোধির বলে কট বিহাইন্ড হওয়ার আগে ৫৮ বলে ৪৪।
আরও পড়ুনযত রেকর্ড নিয়ে বিদায় নিলেন তামিম১৩ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তামিম ইকবালের সর্বশেষ ইনিংস, ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)