প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বই তাঁর খুব প্রিয়সঙ্গী সব সময়ই, যেকোনো বই। ‘বলা বাহুল্য’ শিরোনামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আজ সোমবার বিকেলে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।

‘বলা বাহুল্য’ বইয়ের লেখক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার (জেলা ও দায়রা জজ) হাসানুজ্জামান রিপন, এটি তাঁর লেখা প্রথম গ্রন্থ। প্রধান বিচারপতি গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন। প্রধান বিচারপতির সম্মেলনকক্ষে বেলা তিনটায় গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, গ্রন্থের গুরুদক্ষিণা অধ্যায় পড়ার মধ্য দিয়ে শুভসূচনা হয় বইটি পড়ার। সেখানে একাধারে বিচারক, শিক্ষক, দার্শনিক ও সাহিত্যিক হাসানুজ্জামান রিপনের (লেখক) সঙ্গে তাঁর নতুন করে পরিচয় হলো। এত দিন পরিচিত ছিলেন বিচারক হিসেবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বই আমার খুব প্রিয়সঙ্গী সব সময়, যেকোনো বই। যখন বইটি পড়া শেষ হয়ে যায়, যখন রেখে দিতে হয়, তখন বিচ্ছেদের একটা দুঃখ হয়।’

বইটি পড়ে জীবনদর্শন সম্বন্ধে অনেক কিছু শেখা যাবে লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে—এমনটা মনে করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেন, জীবনধারার কিছু মৌলিক তত্ত্ব লেখক অত্যন্ত সহজ করে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

গ্রন্থের লেখককে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সমষ্টিগতভাবে আমাদের এই যে আইনের জগতের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে নতুন সত্তা নিয়ে নিজেকে (গ্রন্থের লেখক) সবার সামনে তুলে ধরছেন, সে জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি। সবাই সেটি করতে পারেন না।’ ভবিষ্যতেও লেখক তাঁর সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে দেশকে পৃথিবীর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।

এ সময় সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঞা, অন্যপ্রকাশের কর্ণধার মাজহারুল ইসলাম, কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইন, গ্রন্থের লেখক আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার (জেলা ও দায়রা জজ) হাসানুজ্জামান রিপন ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ