তীরে এসে ডুবলো খুলনা, রংপুরের রোমাঞ্চকর জয়
Published: 13th, January 2025 GMT
মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন-আফিফ হোসেনে জয় দেখছিল খুলনা টাইগার্স। আরও স্পষ্ট করে বললে জয় ছিল মাত্র সময়ের ব্যাপার। কিন্তু রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে শেষ তিন ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে উলটো হেরে বসে সুরমা পাড়ের দলটি।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) আগে ব্যাটিং করে রংপুর ১৮৭ রানের লক্ষ্য দেয়। তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৭৮ রানে থামে খুলনা। ৮ রানের জয়ে শীর্ষস্থান আরও পাকাপোক্ত করলো রংপুর। ৭ ম্যাচে দলটির ৭ জয়। অন্যদিকে খুলনার পঞ্চম ম্যাচে এটি তৃতীয় হার।
শেষ ওভারে খুলনার প্রয়োজন ছিল ১২ রান। হাতে ছিল ৪ উইকেট। ক্রিজে ছিলেন মোহাম্মদ নাওয়াজ ও নতুন ব্যাটার নাসুম আহমেদ। বোলিংয়ে আসেন সাইফউদ্দিন। নাওয়াজ প্রথম দুই বল ডট দেন। তৃতীয় বল হয় ওয়াইড। ডটের চাপে পড়ে পরের দুই বলে রানআউট হন নাওয়াজ (৪) ও নাসুম (০)। পরের বলে আবু হায়দায় রনি উড়িয়ে মারতে গিয়ে শূন্য রানে ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনে। শেষ বলে মাত্র ১ রান নিতে পারে দলটি।
এর আগের ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হন সেট ব্যাটার অঙ্কন। ১২ বলে ১৫ করা এই ব্যাটার আউট হলে চাপে পড়ে যায় খুলনা। তবুও ক্রিজে থাকা ইমরুল ভরসা দিচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ বলে মাত্র ৫ রানে তিনি আউট হয়ে উলটো বিপদ বাড়ান। তার আগের ওভারের প্রথম বলে ফেরেন আফিফ হোসেন (১৫ বলে ২৯)। শেষ তিন ওভারে উইকেটের মিছিলে মূলত খুলনার হার নিশ্চিত হয়।
আরো পড়ুন:
খুশদীল ঝড়ে রংপুরের স্কোরবোর্ডে ‘হাসি’
রেকর্ড রানে জেতার ম্যাচে ঢাকার প্রাপ্তি লিটন-তানজিদের সেঞ্চুরি
শুরুতে ১৭ রানে রাসুলি ফিরলেও খুলনা সহজে ছড়ি ঘোরাতে থাকে। ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ খেলছিলেন দারুণ। দুজনে জুটিতে যোগ করেন ৬১ রান। মিরাজ ২৪ বলে ৩৯ রানে আউট হলে ভাঙে জুটি। নাঈম থামেন ফিফটি করে। তার ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ৫৮ রান। নাঈমের পর আফিফ আউট হলে খেই হারিয়ে ফেলে খুলনা। আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দলটি। রংপুরের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন আকিফ জাভেদ। ২ উইকেট করে নেন সাইফুদ্দিন-মেহেদী হাসান।
এর আগে ৫ উইকেটে ১৮৬ রান করে রংপুর। ১০.
বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ৩৫ বলে ৭৩ রান করেন ৪ চার ও ৬ ছক্কায়। ২০৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে সাজানো ইনিংস দিয়ে রংপুরের পুঁজিতে রান ৫ উইকেটে ১৮৬। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া ইফতেখার আহমেদ ৩৬ বলে ৫ চারে ৪৩ রান করেন। এই দুই পাকিস্তানি ক্রিকেটার ৫৭ বলে ১১৫ রানের জুটি গড়েন। তাতেই পার্থক্য তৈরি হয়।
১৫তম ওভারে নাসুমকে চারটি ছক্কা হাঁকান খুশদীল। তার ওই ওভারেই রংপুরের বড় স্কোরের পথে হাঁটা শুরু হয়। পরের ওভারে আবু হায়দারকে একটি করে ছক্কা ও চার উড়ান।
হেলসের পরিবর্তে ওপেনিংয়ে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের টেলর। কিন্তু ৮ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় ১৩ রান করেন। আরেক ওপেনার তৌফিক খান ৩০ বলে ৩৬ রান করেন ৪ চার ও ১ ছক্কায়। তিনে নামা সাইফ হাসান মাত্র ৭ রান করে বোল্ড হন হাসান মাহমুদের বলে।
এরপর ইফতেখার ও খুশদীলের দায়িত্বশীল ইনিংসে বড় পুঁজি পেয়েছে রংপুর। এবার বোলারদের পালা জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার। বল হাতে খুলনার হয়ে আবু হায়দার রনি ও হাসান মাহমুদ ২টি করে উইকেট নেন।
ঢাকা/রিয়াদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক