১ লাখ ৬০ হাজার বছর পর দুর্লভ ধূমকেতু দেখতে পারে বিশ্ব
Published: 14th, January 2025 GMT
আগামী কয়েকদিনে আকাশে এক বিরল উজ্জ্বল ধূমকেতু দেখা যেতে পারে, যা সর্বশেষ ১ লাখ ৬০ হাজার বছর আগে দৃশ্যমান হয়েছিল।
ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) জানিয়েছে, ধূমকেতুর উজ্জ্বলতার পূর্বাভাস দেওয়া সাধারণত বেশ কঠিন। তবে, এই ধূমকেতুটি খালি চোখে দেখার মতো উজ্জ্বল হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
অচিরেই দেখা দিতে যাওয়া এই ধূমকেতুটির পথ পর্যবেক্ষণ করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। শনিবার (১১ জানুয়ারি) নাসার মহাকাশচারী ডন পেটিট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে ধূমকেতুর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন।
সেখানে তিনি লিখেছেন, অরবিট থেকে ধূমকেতু দেখা একেবারেই চমকপ্রদ। অ্যাটলাস সি/২০২৪ জি৩ আমাদের পৃথিবীতে আসছে। এটি দেখতে চাইলে আপনার অঞ্চলের আকাশ পরিষ্কার কি না তা নিশ্চিত করে নিন।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) ধূমকেতুটি সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে ছিল, যাকে পেরিহেলিয়ন বলা হয়। এই অবস্থান ধূমকেতুর উজ্জ্বলতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি সোমবার রাত থেকে দৃশ্যমান হওয়ার কথা বলে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন।
যদিও ধূমকেতু কোথা থেকে সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এটি দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে সবচেয়ে ভালো দেখা যেতে পারে। বলা হচ্ছে, এটি শুক্রগ্রহের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে।
গত বছর নাসার অ্যাস্টেরয়েড টেরেস্ট্রায়াল ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম (অ্যাটলাস) এই ধূমকেতুটি শনাক্ত করেছিল।
এক বিরল ঘটনার সাক্ষী হতে প্রস্তুত বিশ্ব
কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষক ড.
ড. বালাজি আরও জানান, পেরিহেলিয়নের আশেপাশের দিনগুলোতে এটি দেখার সুযোগ তৈরি হতে পারে, তবে এটি নির্ভর করবে স্থানীয় আবহাওয়ার অবস্থার উপর।
কোথায় এবং কীভাবে দেখবেন?
যারা ধূমকেতুটি দেখতে চান, তাদের জন্য ড. বালাজি জানান, দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোর বাসিন্দারা সূর্যোদয়ের আগে পূর্ব দিকের আকাশে এবং পেরিহেলিয়নের পর সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম দিকের আকাশে লক্ষ্য রাখতে পারেন। ধূমকেতুটি দেখতে আলো দূষণহীন একটি জায়গা বেছে নিন। বাইনোকুলার বা ছোট টেলিস্কোপ ব্যবহার করুন।
তবে, উত্তর গোলার্ধে, যেমন এশিয়ার দেশগুলোতে সূর্যের অবস্থানের কারণে এটি দেখা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?