সকালে অভিযান চালিয়ে মহাসড়কের ওপর থেকে কয়েকশ দোকানপাট ও অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে দেয় হাইওয়ে পুলিশ। কিন্তু বিকেলেই আবার পুরোদমে বসে যায় দোকানপাট।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল ও সাইনবোর্ড (নারায়ণগঞ্জ লিংকরোড) এলাকায় অভিযান চালায় হাইওয়ে পুলিশ। অভিযানে
নেতৃত্বে দেন হাইওয়ে পুলিশ গাজীপুর অঞ্চলের সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সীমা রানী সরকার। বেলা ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চলে অভিযান। অভিযান শেষ হতে না হতেই বিকেলে আবারও দোকানপাট বসে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন ও পোশাককর্মী হিরন মিয়া বলেন, উচ্ছেদের নামে হাইওয়ে পুলিশের এটি আইওয়াশ মাত্র।
পরিবহন ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, উচ্ছেদ করার পর যদি হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতা, তদারকি কিংবা নজরদারি না থাকে, তবে তো দখল হওয়াটাই স্বাভাবিক। তিনি আরও বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল ও সাইনবোর্ড এলাকায় মহাসড়ক থেকে অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট উচ্ছেদ করা হলেও বিকেলে হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে না থাকায় অবৈধ দখলদাররা আগের মতোই মহাসড়কে দোকানপাটের পসরা বসিয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (অ্যাডিশনাল ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আ ক ম আক্তারুজ্জামান বসুনিয়া বলেন, যারা দখলবাজ তাদের চিহ্নিত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য তারা কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন, তাদের অভিযান শেষ হয়নি, ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অভিযান চলবে।
উচ্ছেদ অভিযান শেষ হতে না হতেই ফের মহাসড়ক দখল করে দোকানপাট বসে যাওয়ার বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) আবু নাঈম সিদ্দিকী বলেন, অভিযানে কয়েক ট্রাক অবৈধ স্থাপনা বাঁশ, খুঁটি, টেবিল, টুল উচ্ছেদ করে ট্রাকে তুলে সরিয়ে দিয়েছেন, বিকেলেও তিনি মহাসড়কে ছিলেন। সাইনবোর্ড ও শিমরাইলে মহাসড়কের ওপর ও মহাসড়ক ঘেঁষে কোনো অবৈধ দোকানপাট থাকবে না। তাদের অভিযান চলমান থাকবে।
হাইওয়ে পুলিশের কাঁচপুর থানার ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে তিনিও ছিলেন। কাঁচপুর এলাকায় অভিযান হয়নি। মদনপুরে কিছু থ্রি-হুইলারে অভিযান চালিয়েছেন। তবে পর্যায়ক্রমে কাঁচপুর, মদনপুর ও মোগরাপাড়ায় মহাসড়কের ওপর ও মহাসড়ক ঘেঁষে কোনো প্রকার অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট থাকবে না।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫