রাজশাহীতে মধ্যস্বত্ত্বভোগী ব্যবসায়ীরা শ্রম আইন ও হাইকোর্টের নির্দেশনা না মেনে ৭০ থেকে ৮০ কেজি ওজনের আলুর বস্তা হিমাগারে রাখতে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন হিমাগার মালিকরা। 

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ তোলে। রাজশাহী চেম্বার ভবনের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান জানান, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এর বিধি ৬৩ অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠানের শ্রমিককে ৫০ কেজি ওজনের অতিরিক্ত ওজন বিশিষ্ট কোনো দ্রব্য হাতে বা মাথাই করে উত্তোলন কিংবা বহন করানো যাবে না। ২০১৮ সালে হাইকোর্ট এক রায়ে একই আদেশ দেন। তবে এই আইন ও নির্দেশনা তারা বাস্তবায়ন করতে পারছেন না মধ্যস্বত্ত্বভোগী আলু ব্যবসায়ীদের কারণে। ফলে শ্রমিকের ঘাড়ে ওঠে অতিরিক্ত ওজনের বস্তা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজশাহী জেলায় ৩৬টি হিমাগার রয়েছে। এবার সবাই (হিমাগার মালিক) সিদ্ধান্ত নেন যে, তারা ৫০ কেজির বেশি ওজনের আলুর বস্তা হিমাগারে নেবেন না। গতবছর বস্তাপ্রতি হিসেবে হিমাগার ভাড়া নেওয়া হলেও এবার তারা আলুর কেজিপ্রতি হিসেবে ভাড়া নেবেন। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মধ্যস্বত্ত্বভোগী ব্যবসায়ীরা প্রচার চালান যে, হিমাগারে আলুর ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরপর জেলার তানোরে ছয়টি হিমাগারে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

হিমাগার মালিকরা সংবাদ সম্মেলনে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি) ফুটেজ দেখান। এতে দেখা যায়, ৫০ কেজির বেশি ওজনের বস্তা না নেওয়ার কথা লিখে হিমাগারের সামনে টাঙানো ব্যানার খুলে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন কিছু ব্যক্তি। গত রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে সিসি ক্যামেরায় তা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হিমাগার মালিকরা জানান, গতবছর পর্যন্ত বস্তা হিসেবে আলুর ভাড়া নেওয়া হয়েছে। তাই মধ্যস্বত্ত্বভোগী ব্যবসায়ীরা সব সময় ৫০ কেজির স্থলে ৭০ থেকে ৮০ কেজি আলু ভরেছেন বস্তায়। ফলে বেশি আলু রেখেও কম ভাড়া দিয়েছেন তারা। হিমাগার মালিকরা বাধ্য হয়ে ওই বস্তা নিয়েছেন। বস্তা উত্তোলনের সময় শ্রমিকদের কষ্ট হয়েছে। আইনের লঙ্ঘন বলে কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগ অভিযান চালিয়ে জরিমানাও করেছে। এর ফলে তারা আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবার বস্তা হিসেবে নয়; ভাড়া নেবেন আলু ওজন করে। তাহলে মধ্যস্বত্ত্বভোগী ব্যবসায়ীরা আইন লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত ওজনের বস্তা দেবেন না। তারাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। এই সিদ্ধান্তের পর রাজনৈতিক মদদে হিমাগারে হামলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মালিকরা। 

হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, “গত বছর ৫০ কেজির বস্তায় ৩৪০ টাকা ভাড়া নেওয়া হত। এর ফলে কেজিপ্রতি সংরক্ষণে খরচ পড়ত প্রায় ৭ টাকা। ব্যাংকের সুদ হারসহ সব খরচ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন চলতি মৌসুমে কেজিপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করেছে সর্বোচ্চ ৮ টাকা। এরপরেও কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত রয়েছে, এই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা এর চেয়েও কম ভাড়ায় তারা নিজস্ব সিদ্ধান্তে আলু সংরক্ষণ করতে পারবেন।”

হিমাগার মালিকরা ৫০ কেজির বস্তার ব্যাপারে শ্রম আইন ও হাইকোর্টের রায়ের বাস্তবায়ন দাবি করেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরেরও সহায়তা কামনা করেন। এছাড়া যারা হিমাগারে হামলা করছে, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু, রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু বাক্কার আলীসহ অন্য হিমাগার মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ ম গ র ম ল কর ৫০ ক জ র ব ব যবস য় র ওজন র

এছাড়াও পড়ুন:

চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ফকিরহাট এলাকায় আশরাফুর রহমান (১৪) নামের এক কিশোর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত শুক্রবার সে জ্বরে আক্রান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

আশরাফুর রহমান ওই এলাকার মিজানুর রহমানের একমাত্র ছেলে। সে সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সীতাকুণ্ডে এই প্রথম একজন মারা গেল।

আশরাফুর রহমানের দাদা এম এ আলীম আলী প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার তাঁর নাতির জ্বর আসে। সামান্য ব্যথাও ছিল। জ্বর কমছে না দেখে রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর আশরাফুরকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হয়। আজ ভোর পাঁচটার দিকে সে মারা যায়। দুপুরে মডেল মসজিদ এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে ফকিরহাট নলুয়া দিঘি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আশরাফকে।

জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাসপাতালের দায়িত্বগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই কিশোর ভালো ছিল। আজ ভোর চারটার দিকে তার পাতলা পায়খানা ও খিঁচুনি হয়। এরপর তারা দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে কিশোরটি মারা যায়।

সীতাকুণ্ডে আজ এক দিনেই ৬ জনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
  • প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
  • চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর